যৌতুকের দাবীতে মারধর: নবজাতকসহ গৃহবধূ হাসপাতালে

????????????????????????????????????

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কক্সবাজার সদর উপজেলা খুরুশকুলের উত্তর রাস্তার পাড়ার শামশুল আলমের মেয়ে সানজিদা আক্তার (১৯)। ৯ মাস আগে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিয়ে হয়েছিল সদর উপজেলা ছফলদন্ডী’র দক্ষিন পাড়ার জালাল আহম্মদের ছেলে মোঃ শাহজাহানের সাথে। বিয়ের কিছুদিন পরেই মাছ ব্যবসায়ী স্বামী ব্যবসার নাম দিয়ে টাকা দাবী করে। স্বামীর কথা অনুযায়ী সানজিদা তার পিতার কাছে টাকাও চায়। কিন্তু দরিদ্র পিতা জানায়, তাকে বিয়ে দিতেই অনেক টাকা ঋণ হয়েছে তার মধ্যে কিভাবে আবার টাকা দেবে।

সানজিদা যখনই জানায়, তার বাবা টাকা দিতে অক্ষম। আর তখনই শুরু হয় শারীরিক আর অমানুষিক নির্যাতন। শুরু’র দিকে শুধু স্বামী মারধর করতো। পরে যুক্ত হয়েছে তার শ্বশুর জালাল আহম্মদ ও শ্বাশুড়ি শাকেরা বেগম। পরে সানজিদা আক্তার বাধ্য হয়ে বিষয়টি পরিবারে জানায়। এতে তার উপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। এর মধ্যে সানজিদা গর্ভধারন করে।

অসহ্য অত্যাচারের মুখেও সানজিদা স্বামীর ঘরে অবস্থান করছিল। কিন্তু তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে যৌতুকের টাকার জন্য মারধর করেই যাচ্ছিল। সর্বশেষ ঘর থেকে তাড়িয়ে দেয় যৌতুকের টাকার জন্য। সানজিদা বাধ্য হয়ে চলে আসেন বাবার বাড়ি। কিছুদিন বাবার বাড়িতে থাকার পরে স্থানীয় প্রতিনিধিদের মধ্যস্থতায় আবার শ্বশুর বাড়ি যান। ক’দিন ভাল কাটলেও পুনরায় চলে নির্যাতন। গর্ভবতী অবস্থায়ও বন্ধ হয়নি নির্যাতন।

এরই মধ্যে ৪ নভেম্বর সানজিদার একটি ছেলে সন্তান হয়। সন্তান জন্মের সময় তাকে হাসপাতালে পর্যন্ত আনা হয়নি। ওখানেই যেনতেন এক ধাত্রী’র সহযোগিতায় ঝুঁকির মধ্যে সন্তান জন্ম হয়। এমনকি সন্তান জন্মের দুই দিন আগেও তাকে লাথি-ঘুষি মেরে আহত করে পাষণ্ড স্বামী মোঃ শাহজাহান।

সন্তান জন্মের সময় সানজিদাকে হাসপাতালে আনা না হলেও  মঙ্গলবারে সদ্য সন্তান জন্মদেয়া সানজিদাকে পুনরায় ব্যাপক মারধর করায় নবজাতকসহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত সানজিদা আক্তার এ কথা জানায়।

সানজিদার বাবা শামশুল আলম জানান, শত দারিদ্রতার মাঝেও বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ করে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে। বিয়ের পর থেকে মেয়ে এক মুহূর্তের জন্যেও শান্তি পায় নি। যৌতুকের জন্য প্রতিনিয়ত তার উপর চলেছে অমানবিক নির্যাতন। এর মধ্যে কয়েকবার টাকাও দেওয়া হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে তার মেয়ের মৃত্যু হবে শ্বশুর বাড়িতে। তাই তিনি সিন্ধান্ত নিয়েছে মেয়েকে আর শ্বশুর বাড়ি পাঠাবে না। তার মেয়ে সানজিদাও তার স্বামীর ঘরে ফিরে যেতে চান না।

এ অবস্থায়ও তারা আতঙ্কে রয়েছে শ্বশুর বাড়ির লোকজন কিছু করবে কিনা। আর এ ঘটনায় শামশুল আলম আইনের আশ্রয় নেবে বলেও জানায়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন