রাঙামাটিতে পর্যটক যুগলকে জোরপূর্বক নগ্ন করে ভিডিও ধারণ করলো উপজাতীয় যুবকেরা

16

স্টাফ রিপোর্টার, রাঙামাটি:
রাঙামাটিতে বেড়াতে এসে বখাটে সন্ত্রাসীদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এক পর্যটক যুগল। সোমবার সন্ধ্যায় শহরের পর্যটন এলাকার দেওয়ান পাড়ায় এঘটনা ঘটে। লোক লজ্জার ভয়ে রাঙামাটি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয় এ যুগল পর্যটক।

নির্যাতনের শিকার নাম প্রকাশে অনচ্ছুক পর্যটক জানায়, সোমবার বেলা ১১টার দিকে রাউজান থেকে রাঙামাটিতে বেড়াতে আসে তারা। তারপর তারা রাঙামাটির মুল আকর্ষণ পর্যটন কমপ্লেক্সের ঝুলন্ত সেতু দেখার জন্য পর্যটন এলাকায় যায়। ঝুলন্ত সেতুর সৌন্দর্য্য উপভোগ করার পর বেড়াতে বেড়াতে পর্যটন এলাকার শেষ সীমান্তে হেডম্যান এলাকার দেওয়ান পাড়ায় চলে যায়। যেখানে আগে থেকে ওৎ পেতে ছিল বখাটে কয়েক জন পাহাড়ি যুবক। কিন্তু তারা যে কত ভয়ংকর হতে পারে সে ধারনা ছিল না এই পর্যটক যুগলের। কিছু বুঝে উঠার আগেই এই বখাটে পাহাড়ি যুবক এসে তাদের ঘিরে ধরে এবং বেদড়ক মারধর করতে থাকে।

পাহাড়ি যুবকরা তাদের মোবাইল ফোনের ক্যামেরা চালু করে তাদের দুই জনকেই নগ্ন করে অসামাজিক কাজ করতে বলে। তারা রাজি না হলে তাদের মারধর করা এবং মেয়ে সঙ্গীটিকে গণধর্ষণ করার হুমকি দেয়। পরে বাধ্য হয়ে তাদের কথামতো কাজ করতে বাধ্য করে। তাদের দু’জনকে নগ্ন করে মোবাইল ফোনে ভিডিও রেকর্ড করে। এসময় মেয়েটি কান্নাকাটি করতে থাকলে তাদের দু’জনকেই মারধর করতে থাকে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা।

পরে মেয়েটির কান্না শুনে ঘটনাস্থলের কিছুটা দূরেই গরুর জন্য ঘাস কাটতে থাকা বাঙ্গালী যুবক মালেক ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এসময় মালেকের সাথেও পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের বাক-বিতন্ডা হয়। পরে ঘটনাটি লোক লজ্জার ভয়ে কাউকে না জানিয়ে ভয়ে রাঙামাটি ছেড়ে চলে যান ভোক্তভূগীরা।

এব্যাপারে মালেক জানান, আমি মেয়েটির কান্না শুনে একটু এগিয়ে সামনের দিকে গেলেই তাদের দুইজনকেই নগ্ন অবস্থায় দেখতে পাই। এসময় তারা দু’জনেই আমার কাছে এসে আমার পায়ে ধরে বাঁচানো জন্য আকুতি জানাচ্ছিল। পরে আমি সঞ্জয়-তত্তারামসহ পাহাড়ি যুবকদের কাছে এদেরকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করি।
কিন্তু তারা আমার সাথে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয়। এসময় আমি একটু রাগান্বিত হলে তারা তাদের ছেড়ে দেয়। আমি নিজে দেখেছি সঞ্জয় ও তত্তারাম নিজেদের মোবাইলে এই জুটিকে উলঙ্গ করে ভিডিও করছে।

এদিকে ঘটনাটি সম্পর্কে জানতে রাঙামাটি পর্যটন কর্পোরেশনের ম্যানেজার আখলাকুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাননি বলে জানান। তিনি বলেন, আমার কাছে কেউ অভিযোগ না করলে আমি ব্যাপারটি কিভাবে জানবো।

এছাড়া পর্যটন এলাকার স্থাপিত পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এরশাদ জানিয়েছেন, আমি ঘটনাটি একটু করে শুনেছি তাও আবার রাতের বেলায়। আর তার আগেই ভোক্তভুগীরা রাঙামাটি ছেড়ে চলে গেছে বলে শুনেছি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন