রাঙামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত ফি আদায়সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার:
রাঙামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত ফি আদায়সহ ভর্তি নিয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। চলতি শিক্ষাবর্ষে নতুন শ্রেণিতে ভর্তি হতে যাওয়া শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকরা এসব অভিযোগ করেছেন। তবে এসব বিষয়ে পুরোপুরি জানা নেই বলে দাবি করেন প্রধান শিক্ষক উত্তম খীসা।
জানা যায়, ইতিমধ্যে নতুন শিক্ষাবর্ষে রাঙামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে নতুন শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সোমবার শুরুর দিন নানা বিড়ম্বনায় পড়েন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিন গিয়ে সেখানে দেখা যায়, প্রতিটি শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রমে আলাদাভাবে কবির আহমদ, রওশন আরাসহ প্রয়োজনীয় শিক্ষক দায়িত্বে থাকলেও তাদের গড়িমসির কারণে ভোগান্তির মধ্যে পড়েন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। এতে দীর্ঘ সময় ধরে অহেতুক ঝামেলায় পড়তে হয় তাদের। তারা ভর্তির জন্য অতিরিক্ত ফি আদায় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এছাড়া বই বিতরণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগও করেন তারা।
ভর্তির জন্য যাওয়া নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেখানে উপস্থিত অনেক অভিভাবক ও শিক্ষার্থী বলেন, প্রতিটি শ্রেণিতে অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায় করা হচ্ছে। সপ্তম শ্রেণিতে প্রাপ্তি স্বীকার পত্রে মোট ৩ হাজার ১১৬ টাকা লেখা হলেও কোন কোন খাতে আদায় করা হচ্ছে সেগুলোর নির্দিষ্ট কিছুই উল্লেখ নেই। এছাড়া ভর্তির জন্য অহেতুক দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে রাখার কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মাঝে নিজ নিজ শ্রেণি কক্ষে বই বিতরণ না করে কেবল একটি জায়গা থেকে বিতরণ করায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। শ্রেণিকক্ষে বই বিতরণ করা হলে এমন ভোগান্তিতে পড়তে হতো না বলে মন্তব্য করেন অভিভাবকরা।
অভিভাবকরা আরও অভিযোগ করে জানান, অনেক শিক্ষক ভর্তি নিয়ে ঘুষ ও স্বজনপ্রীতিতেও জড়িত। এতে ভর্তি পরীক্ষায় টেকেনি এবং কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেই এমন শিক্ষার্থীকেও ভর্তির প্রস্তুতি চলছে। ভর্তির পর বাংলা ব্যাকরণ ও ইংরেজি গ্রামার কিনে নিতে বলা হচ্ছে বিদ্যালয় হতে।
এ ব্যাপারে সেসব বই কিনতে গিয়ে শহরের বনরূপার সবুজ সাথী লাইব্রেরীর স্বত্ত্বাধিকারী কবির আহমদ বলেন, রাঙামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বই দোকান থেকে বিক্রি করা যাবে না। সরাসরি প্রধান শিক্ষক থেকে বইগুলো কিনে নিতে হবে। তিনি বইগুলো সংগ্রহ করে নিয়ে গেছেন। এছাড়াও অনেক শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিজের কাছে প্রাইভেট না পড়লে ফেল করে দেয়া হয় বলেও অভিযোগ করেছেন করেছে কয়েকজন শিক্ষার্থী।
অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায়সহ এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে ফোনে যোগাযোগ করা হলে প্রধান শিক্ষক উত্তম খীসা বলেন, তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে সে বিষয়ে তিনি অবগত নন । নিয়ম অনুযায়ী এক বছরের জন্য সেশন ফি হিসেবে কেবল ১৪শত টাকা নেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, অতিরিক্ত ফি আদায়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। কারও বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখা হবে। বই বিতরণ বিষয়ে তিনি বলেন, আসলে শিক্ষার্থীদের লাইনে দাঁড়িয়ে বই দেয়ার কথা ছিল। এজন্য প্রথম দিন কেউ হয়ত বিড়ম্বনায় পড়তে পারে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. সামসুল আরেফিন বলেন, বিষয়টি যাচাই করে দেখছি। সত্যতা পাওয়া গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।