রাজধানীতে বণিক বার্তার বিজ্ঞাপন সহকারীর লাশ উদ্ধার: হত্যার দায়ে খাগড়াছড়ি জেলা ছাত্রলীগের দু’নেতাসহ আটক ৪

ছাত্রলীগ

স্টাফ রিপোর্টার :

রাজধানীতে দৈনিক বণিকবার্তা পত্রিকার বিজ্ঞাপন বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক এ এম জাহাঙ্গীর আলমের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার সকালে রাজধানীর খিলক্ষেত নামাপাড়ার একটি মেসের কক্ষ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে খাগড়াছড়ি জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ফাহিম হাসান খান, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান রাকিব, রায়হান সারোয়ার ও নিহতের খালাত ভাই ফয়সাল ওরফে পেডিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ফাহিম খাগড়াছড়ি জেলা সদরের কলাবাগান গ্রামের মনির খানের, রাকিব খাগড়াছড়ি জেলা সদরের ইসলামপুর এলাকার মোফাজ্জল হোসেনের এবং ফয়সাল শালবাগান এলাকার বাসিন্দা মো. শাহাবুদ্দিনের ছেলে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। জাহাঙ্গীর রাজধানীর তেজগাঁওয়ে মনিপুরী পাড়ায় থাকতেন। খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে মেসের ওই কক্ষে একটি স্যুটকেসের ভেতর থেকে জাহাঙ্গীর আলমের লাশটি উদ্ধার করা হয়। এসময় খিলক্ষেত নামাপাড়ার ২১১/১/এ নম্বর বাড়ির ৫ তলার ভাড়া বাসা থেকে তাদের আটক করা হয়।

জাহাঙ্গীর গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ওই দিন তার স্বজনরা তেজগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেছিলেন।” এ বিষয়ে তদন্তে নামার পর গত বৃহস্পতিবার জাহাঙ্গীরের খালাতো ভাই ফয়সালকে ধামরাই থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী খিলক্ষেতের মেসে জাহাঙ্গীরের লাশ পাওয়া যায় এবং অন্য তিনজনকে আটক করা হয় বলে জানান খিলক্ষেত থানার ওসি শহিদুল হক।

তিনি বলেন, “জাহাঙ্গীরকে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশটি মুড়িয়ে বড় আকারের ওই সুটকেসে ভরে রাখা হয়েছিল।” তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় আটককৃত চারজনকে আসামী করে নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে খিলক্ষেত থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। নিহতের স্ত্রীর বরাত দিয়ে ওসি জানান, ফয়সালের কাছে পাওনা সাড়ে তিন লাখ টাকা ফেরত না দেয়ার জন্যেই পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে।

বণিকবার্তার সিনিয়র রিপোর্টার আয়নাল হোসেন বলেন, বিজ্ঞাপন বিভাগের কর্মীরা তাদের সময় অনুযায়ী যাওয়া-আসা করেন। জাহাঙ্গীর গত ১৫ সেপ্টেম্বর অফিসে এসে বেলা ১২টার দিকে বের হয়েছিলেন। “সন্ধ্যার দিকে জাহাঙ্গীরের স্ত্রী অফিসে ফোন করে বলেন, তার স্বামীর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। পরে তেজগাঁও থানায় তারা সাধারণ ডায়েরি করেন।” জাহাঙ্গীর আগে কাজ করতেন প্রথম আলোর বিজ্ঞাপন বিভাগে। চলতি মাসের ১ তারিখ তিনি বণিকবার্তায় যোগ দেন।

নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর জেলার গাঙনী উপজেলার পূর্ব মালসাদহ গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩৮) স্ত্রী রোকসানা পারভিন ও দুই ছেলেকে নিয়ে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের তেজকুনি পাড়ার ২ নম্বর বাড়ির নিজের ফ্লাটেই থাকতেন। জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংবাদপত্র দৈনিক বণিক বার্তার বিজ্ঞাপণ বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং এর পাশাপাশি বায়িং হাউজের ব্যবসাও করতেন তিনি। তার এই ব্যবসার সঙ্গে দুঃসম্পর্কের খালাতো ভাই ফয়সাল ওরফে পেডি পার্টনার ছিলেন। সেই সূত্রে জাহাঙ্গীর ফয়সালের কাছে সাড়ে ৩ লাখ টাকা পাওনা হন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন