রামুতে মসজিদ-মাদ্রাসার সীমানা বেড়া ভাংচুরের অভিযোগ

রামু প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের রামুতে পুলিশের উপস্থিতিতে মসজিদ ও মাদরাসার গাছপালা কেটে ফেলা এবং সীমানা বেড়া উপড়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের লট উখিয়ারঘোনা খেনচরঘোনা জামে মসজিদ ও নূরানী মাদ্রাসায় বৃহস্পতিবার বিকাল পাঁচটায় এ ঘটনা ঘটে।

মসজিদ ও নূরানী মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছৈয়দুল হক, সাধারণ সম্পাদক আহমদুর রহমান ও মসজিদের ইমাম মাওলানা মহি উদ্দিন জানান, দু’শত বছরের পুরনো মসজিদ এবং নূরানী মাদরাসার সীমানা নিয়ে পার্শ্ববর্তী এক ব্যক্তির সাথে বিরোধ রয়েছে। এ নিয়ে মামলা হলে বিজ্ঞ আদালত মসজিদ ও মাদরাসার পক্ষে রায় দেন।

রায়ের বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন এবং থানাকে অবহিত করে সম্প্রতি নির্দিষ্ট জমিতে ঘেরাবেড়া দেয়া হয়। কিন্তু ঘেরাবেড়া দেয়ার সময় মৃত লাল মিয়ার ছেলে ফরিদুল আলম ও ছৈয়দুল আলম, মেহের আলীর ছেলে আবদুর রহমান, ছৈয়দুল আলমের স্ত্রী হাসনুর আকতার হান্না এবং আকতার হোসেনের নেতৃত্বে একটি চক্র বাঁধা দেয় এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।

এনিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটায় রামু থানার এএসআই জাহিদ মসজিদ ও মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে শুক্রবার থানায় যাওয়ার জন্য নোটিশ পাঠান। কিন্তু এ নোটিশ পাওয়ার দু’ঘন্টা পর রামু থানার সদ্য যোগদান করা এসআই ইউনুছ ঘটনাস্থলে যান। ওই পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ফরিদুল আলম, ছৈয়দুল আলম, আবদুর রহমান, হাসনুর আকতার হান্না সহ তাদের সহযোগীরা মসজিদের দেয়া সীমানা বেড়া এবং বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছ কেটে লুট করে নিয়ে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. কায়েস জানান, মসজিদ ও মাদরাসার স্বত্ত্ব দখলীয় জমিতে পুলিশের এসআই ইউনুছের উপস্থিতি ও ইন্ধনে সীমানা বেড়া ভাংচুর এবং বেশ কিছু গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। বিজ্ঞ আদালয়ের রায়ে জমিটি মসজিদ ও মাদরাসা আওতাধীন। তিনি আরো জানান, ওই পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়েই উপস্থিত মুসল্লী ও স্থানীয় লোকজনকে ধাওয়া করে আতংক ছড়ান। এমনকি মসজিদের সহকারি ইমাম ও নূরানী মাদরাসার শিক্ষক কলিমুল্লাহও পুলিশের ধাওয়া খেয়ে সটকে পড়তে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান।

স্থানীয় বাসিন্দা আবছার কামাল, ছৈয়দ আকবর, আবদু শুক্কুর ও আবদুর রহিম জানিয়েছেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে পুলিশের এমন আচরণে পুরো এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রামু থানার এসআই ইউনুছ জানান, ওই এলাকায় টহলে থাকায় ওসির নির্দেশে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। সেখানে ১৫ মিনিটের মতো ছিলেন। গিয়ে তিনি কাউকে দেখেননি। তাঁর উপস্থিতিতে কোন ভাংচুর বা গাছ কাটা হয়নি। চলে আসার পর কেউ কিছু করলে তার দায় তো তাঁর উপর পড়ে না। তিনি আরো জানান, বিষয়টি সমাধানের জন্য দু’পক্ষকে আজ শনিবার থানায় আসতে বলা হয়েছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদের বিক্ষুব্দ শতাধিক জনতা গতকাল শুক্রবার রামু-কক্সবাজার আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমলের সাথে দেখা করে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান এবং দোষী পুলিশ কর্মকর্তার শাস্তি দাবি করেন।

এসময় সাংসদ কমল রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবদুল মজিদকে বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন