রামগড়ে প্রথম ‘শিশু পার্ক’ শিশু কাননের উদ্বোধন করলেন ডিসি

fec-image

খাগড়াছড়ির রামগড়ে প্রথম স্থাপিত শিশু বিনোদন কেন্দ্র শিশু কাননের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে।

শনিবার (৯ মার্চ) খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান প্রধান অতিথি হিসেবে এ শিশু পার্কের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন।

রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতা আফরিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কারবারি। অন্যান্যের মধ্যে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মানস চন্দ্র দাসসহ বিভিন্ন বিভাগের সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথি শিশু কাননের উদ্বোধনী ফলক উম্মোচনের মাধ্যম পার্কটির উদ্বোধন করেন।

সাবেক প্রাচীন মহকুমা রামগড়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এসডিও বাংলো চত্বরে ‘শিশু কানন’ নামে মনোরম শিশু বিনোদন পার্ক তৈরি করা হয়েছে। এটি এ উপজেলায় নির্মিত প্রথম শিশু পার্ক। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শিশু পার্কটি তৈরি করা হয়।

১৯২০ সালে ব্রিটিশ সরকারের গঠিত তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার দ্বিতীয় মহকুমা রামগড়ে ফেনী নদীর কূল ঘেঁষে ব্রিটিশ প্যার্টানে বিশেষ নির্মাণ শৈলীতে বানানো হয় এসডিও সাহেবের বাংলো। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধেরও বহু স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহ্যবাহী এ এসডিও বাংলোটি। দীর্ঘদিন যাবত অবহেলায় থাকার পর ২০২২ সালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার খন্দোকার মো. ইখতিয়ার উদ্দীন আরাফাত ঐতিহাসিক এ স্থাপনাটি সংরক্ষণ ও সংস্কার এবং এখানে শিশু বিনোদন কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেন। ওই বছর ২৮ নভেম্বর খাগড়াছড়ির তৎকালীন জেলা প্রশাসক (যুগ্ম সচিব) প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস এ শিশু কাননের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের সার্বিক সহায়তায় শিশু কাননের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।

ভারত সীমান্তবর্তী ফেনী নদীর তীর ঘেঁষা দৃষ্টিনন্দন এসডিও বাংলো ও এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আসা পর্যটকসহ স্থানীয় শিশু দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য মনোরম শিশু বিনোদন পার্কটি নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতা আফরিন।

সীমান্ত সড়ক হতে এসডিও বাংলোর প্রবেশ পথটি নান্দনিকভাবে নির্মাণ ও আর্চওয়ের মাধ্যমে সবুজ গেইট নির্মাণ করা হয়েছে। কিডস জোনে শিশুদের জন্য অত্যাধুনিক কিডস ও রাইড স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া ল্যান্ডস্কেপে ওয়াকওয়ে এবং বসার ব্যবস্থা রয়েছে। টিলার ঝিঁরির ওপর নির্মিত পাকা সেতুটিও সাজানো হয়েছে আকর্ষণীয়ভাবে। নির্মাণ করা হয়েছে দর্শণার্থীদের জন্য উন্নতমানের ওয়াশরুম। এখানে শিশুদের অভিভাবকরাও বেশ আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন। সন্ধ্যার পর রং-বেরংয়ের আলোকসজ্জায় স্বপ্নপুরীর রুপ নেয় শিশু কানন। রয়েছে ‘আই লাভ রামগড়’ ফটো সেশন প্লেস। কিডস্ জোনটি শিশুদের শারিরীক ও মানসিক বিকাশ ও আনন্দময় পরিবেশ উপযোগী।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতা আফরিন বলেন, ঐতিহ্যবাহী রামগড়ে শিশুদের বিনোদনের জন্য সর্বপ্রথম এ শিশু পার্কটি তৈরি করতে পেরে খুবই ভাল লাগছে। এখানে ট্রেনসহ আরও কিছু রাউড স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।

তিনি আরও জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ঐতিহাসিক এসডিও বাংলোর সংস্কার ও উন্নয়নে একটি বড় প্রকল্প নিয়েছে। শীঘ্রই এ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন