রামগড়ে বাগান থেকে পিটিয়ে কর্মচারিদের বের করে দিয়েছে ইউপিডিএফ

fec-image

রামগড়ের পাতাছড়ায় গাছ থেকে মাল্টা পাড়াকে কেন্দ্র করে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর এক নারীর সাথে ঝগড়ার জের ধরে ঘরে তালা দিয়ে বাগান থেকে কর্মচারিদের পিটিয়ে বের করে দিয়েছে ইউপিডিএফ। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় লোকজন জানায়, পাতাছড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের কুমারিপাড়া এলাকায় বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ইউএনও বাগান খ্যাত ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি বাগানের গাছ থেকে স্থানীয় এক পাহাড়ি নারী মাল্টা পাড়ায় বাগানের কর্মচারির সাথে ঝগড়া বাধে। দুজনের ঝগড়াঝাটির এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কির সময় বাগান কর্মচারি এয়াকুবের হাতে থাকা দায়ের আঘাতে পুতুল লক্ষ্মী ত্রিপুরা নামে ওই নারীর কপাল কেটে যায়। পরে তার চিকিৎসারও ব্যবস্থা করা হয়। এ ঘটনার খবর পেয়ে ইউপিডিএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে বাগানে এসে এয়াকুবকে খুঁজতে থাকে। তাকে না পেয়ে বাগানের কর্মচারি চম্পা ত্রিপুরাকে তারা মারধর করে এবং বাগান ছেড়ে চলে যেতে নির্দেশ দেয়।

এ অবস্থায় ৪ কর্মচারি বাগান থেকে চলে যায়। এদের মধ্যে তাজুল (৭৫) ও নুরুচ্ছফা (৪৮) নামে দুই কর্মচারি বাগানের বাসায় সপরিবারে থাকেন। চম্পা ত্রিপুরা ও এনাম নামে অপর দুজন নিজস্ব বাড়িতে থাকেন।

জানাযায়, শুক্রবার সকালে বাগানের বাসা থেকে মালপত্র আনতে গিয়ে ইউপিডিএফের হাতে প্রহৃত হন বৃদ্ধ কর্মচারি তাজুল মিয়া। বাগানে কেন ঢুকেছে সেজন্য তারা তাকে বেদম মারপিট করে। এ সময় তাজুল মিয়ার ঘর থেকে মালামাল বাহিরে ছুঁড়ে ফেলে দরজায় তালা দিয়ে তারা চাবি নিয়ে যায়। এরপর বাগানে ঢুকলে সবাইকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনায় বাঙালি গ্রামবাসিদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

বাগানের এক কর্মচারি জানায়, এয়াকুব বাগানের মূল মালিকের কর্মচারি না। সে বাগান ইজারা নেয়া ব্যক্তির লোক। এখন তার সাথে পাহাড়ি মহিলার ঝগড়া বিবাদের জন্য ইউপিডিএফ তাদের সবাইকে বাগান থেকে বের করে দিয়েছে এবং বাগানে ঢুকলে গুলি করে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। তাই তারা বাগান ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে এসেছেন। ওই কর্মচারি আরও জানান, এখন ওই বাগানটি তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইজারাদারের শ্রমিকদেরও তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

এদিকে, ওই এলাকার ইউপি মেম্বার কর্ণ মোহন ত্রিপুরা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, মাল্টা পাড়া নিয়ে ত্রিপুরা মহিলার সাথে ঝগড়ার সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে এয়াকুবের হাতে থাকা দা লেগে ওই মহিলার কপাল কেটে যায়। পরে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে চিকিৎসা করিয়ে ওষুধপত্রও কিনে দেয় তারা। ইউপি মেম্বার বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সমস্যার সমাধানের জন্য পাতাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ তারা চেষ্টা করছেন।

রামগড় থানার ওসি (তদন্ত) রাজীব কর বলেন, এ ব্যাপারে থানায় এখনও কেউ কোন অভিযোগ করেনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন