রামগড় সীমান্তে বিজিবির বাধায় পাগলকে পুশইনে বিএসএফ ব্যর্থ

fec-image

খাগড়াছড়ির রামগড় সীমান্তে ভারতীয় এক পাগল ব্যক্তিকে জোরপূর্বক বাংলাদেশে পুশইন করার বিএসএফের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে বিজিবি’র কড়া প্রতিরোধে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার(১ মে) রাত অবধি রামগড়-সাব্রুম সীমান্তে চরম উত্তেজনার বিরাজ করে। উভয় সীমান্তে মোতায়েন হয় অতিরিক্ত সৈন্য।

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ স্থানীয় লোকজনদের সহায়তায় সে দেশের এক পাগল ব্যক্তি(৪০)কে রামগড় সীমান্তের থানা ঘাট এলাকা দিয়ে জোরপূর্বক ফেনী নদী দিয়ে বাংলাদেশে পুশইন করার চেষ্টা করে।

নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা বিষয়টি বিজিবিকে জানানোর পর তারা এসে বিএসএফকে বাধা দেয়। কিন্তু বাধা উপেক্ষা করে বিএসএফ জোরপূর্বক ঐ পাগলকে পুশইন করার চেষ্টা করলে বিজিবি কঠোরভাবে তা প্রতিরোধ করে। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়।

এক পর্যায়ে উভয় সীমান্তে ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতিরিক্ত সৈন্য মোতায়েন করে দু‘পক্ষ। সীমান্তের উত্তেজনাকর পরিস্খিতিতে নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের মধ্যে আতংক দেখা দেয়।

রামগড়ের দারোপাড়ার ফেনী নদীর তীরবর্তী বাসিন্দা কাউসার হোসেন বলেন, একদল বিএসএফ সাব্রুমের স্থানীয় কয়েকজন লোক নিয়ে ওই পাগলকে পিটিয়ে জোরপূর্বব বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা করলে তারা কয়েকজন মিলে নদীর এ পাড় থেকে প্রতিবাদ জানায়। এতে বিএসএফ অস্ত্র উচিঁয়ে গুলি করার হুমকি দেয় তাদের। পরে তারা বিজিবিকে খবর দেন।

এদিকে, দু‘পক্ষের রণসজ্জা অবস্থায় চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রামগড় সাব্রুম সীমান্তের মৈত্রী সেতু এলাকায় জরুরি পতাকা বৈঠকে বসেন বিজিবি ও বিএসএফের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

বৈঠকে বিজিবির গুইমারার সেক্টর কমান্ডার কর্নেল জিএইচএম সেলিম হাসান ও বিএসএফর উদযপুরের ডিআইজি জামিল আহমেদ নেতৃত্ব দেন। বৈঠকে বিএসএফ জোরপূর্বক ভারতীয় পাগলকে বাংলাদেশে পুশইন করার চেষ্টার কড়া প্রতিবাদ জানায় বিজিবি।

বিএসএফ ঐ পাগল ব্যক্তিকে বাংলাদেশের নাগরিক বলে দাবি করলে এর সত্যতা প্রমানের জন্য বিজিবির পক্ষ থেকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত এ বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে রামগড়ের ৪৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. তারিকুল হাকিম ও সাব্রুমের বগাফাস্থ ৬৬ বিএসএফের কমান্ডিং অফিসার দীনেশ কুমার উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে বিজিবির গুইমারা সেক্টর কমান্ডার কর্নেল জিএইচএম সেলিম হাসান বলেন, সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে কোন পতাকা বৈঠক ছাড়াই বিএসএফ একের পর এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে জোরপূর্বক বাংলাদেশে পুশইন করার চেষ্টার কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়।

তিনি বলেন, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে ঐ পাগল ব্যক্তিকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে তথ্য প্রমাণ না দেয়া পর্যন্ত বিএসএফের হেফাজতে থাকবে। ভবিষ্যতে পতাকা বৈঠক ছাড়া কাউকে জোরপূর্বক অথবা গোপনে বাংলাদেশে পুশইন করার চেষ্টা করবে না বিএসএফ।

গুইমারা সেক্টর কমান্ডার আরও বলেন, উভয় সীমান্তে মোতায়েন করা অতিরিক্ত সৈন্য দু‘পক্ষই প্রত্যাহার করবে।

এদিকে, শনিবার(২ মে) সীমান্ত এলাকা সরেজমিনে ঘুরে শান্ত ও স্বাভাবিক অবস্থা দেখা গেছে।

তীরবর্তী বাসিন্দারা জানান, শুক্রবার গভীর রাতে অতিরিক্ত সৈন্য ক্যাম্পে ফিরে গেছে। সীমান্তের ওপারের বিএসএফকেও তুলে নেয়া হয়েছে। তবে দু‘পক্ষই সীমান্তে সর্তকাবস্থায় রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন