রামগড় হাসপাতালে স্ত্রীর লাশ রেখে স্বামীর পলায়ন

Ramgarh 28

রামগড় প্রতিনিধি:
রামগড় হাসপাতালে স্ত্রীর মৃতদেহ ফেলে রেখে স্বামী শহীদুল্লাহ পালিয়ে গেছে। শুক্রবার এ ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে।

ফটিকছড়ির ভুজপর থানার নুরপুর(চেগাইয়া বটগাছ) গ্রামের লোকমান হোসেনের কন্যা মৃত জুলেখা বেগমের স্বজনদের দাবী, স্বামীর বাড়ির লোকজন তাকে হত্যা করছে।

অন্যদিকে, একই থানার মরাকইলার গিলতলী গ্রামের তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবী পারিবারিক ঝগড়াঝাটির পর ক্ষুব্দ হয়ে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে জুলেখা।

রামগড় উপজেলা হাসপাতালের কর্তব্যরত এক ডাক্তার জানান, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহীদুল্লাহ নামে জনৈক ব্যক্তি অচেতন অবস্থায় জুলেখা বেগম(২০) নামে এক মহিলাকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন। কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করার পরই ঐ ব্যক্তি দ্রুত হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যায়।

এদিকে জুলেখার বড় ভাই আব্দুল মালেক জানান, তার ভগ্নিপতি শহীদুল্লাহ শুক্রবার সাড়ে ১২টা দিকে মোবাইল ফোনে তাদের জানায়, জুলেখা মাথাঘুরে পড়ে গেছে। তাকে রামগড় হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে। এখবর শুনে তিনি তার মা ও ছোট ভাইকে সাথে নিয়ে রামগড় হাসপাতালে বেলা আড়াইটায় এসে দেখেন তার বোন জুলেখার লাশ পড়ে আছে । স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির কেউ সেখানে নেই। ভগ্নিপতি শহীদুল্লাহর নম্বরে কল দিলে মোবাইল বন্ধ পাওয়ার পর শ্বশুরবাড়ির অন্যান্যদের নম্বরে কল দিয়েও কারও ফোন সচল পাওয়া যায়নি।

তিনি অভিযোগ করে বলে বলেন, ভুজপুর থানাধীন মরা কইলা গিলতলা গ্রামের এরশাদুল্লাহর ছেলে শহীদুল্লাহর সাথে তার বোন জুলেখার বিয়ে হয় ৭ মাস আগে। তারা দুজন প্রেম করে বিয়ে করায় শহীদুল্লার পরিবার প্রথমে জুলেখাকে গ্রহণ করেনি। পরে সামাজিক সালিসের মাধ্যমে তারা তাকে ঘরে তুলে।

আব্দুল মালেক জানান, বিয়ের পর ৭ মাসে একবারও শ্বশুর শ্বাশুরি জুলেখাকে বাবার বাড়িতে আসতে দেয়নি। এর প্রতিবাদ করায় তারা জুলেখাকে নানা নির্যাতনও করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, শ্বশুরবাড়ির লোকজন জুলেখাকে হত্যা করছে। এ ব্যাপারে তিনি ভুজপুর থানায় মামলা দায়ের করবেন বলেও জানান।

অপরদিকে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আটক জুলেখার শ্বাশুড়ি ছালেহা বেগম(৫০) জানান, দুপুর বেলায় বাড়ির পাশের সিম ক্ষেত থেকে অজ্ঞান অবস্থায় জুলেখাকে তিনি ও তার ছেলে শহীদুল্লাহ রামগড় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসলে ডাক্তার তাকে মৃত বলে জানায়। তিনি জুলেখাকে তার বাবার বাড়িতে যেতে না দেয়ার কথা স্বীকার করে জানান, বাবার বাড়িতে যেতে না দেয়ায় জুলেখা স্বামী ও শ্বশুাড়ির সাথে প্রাশ:ই ঝগড়াঝাটি করে। শুক্রবারও ঘরে ঝগড়া হয়। তিনি দাবী করেন, ঝগড়াঝাটির পর জুলেখা বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে।

রামগড় থানার উপ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন জানান, খবর পেয়ে শুক্রবার বিকালে হাসপাতাল থেকে জুলেখার লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। লাশের নাক মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছে। সে আত্মহত্যা করেছে, না কি হত্যা করা হয়েছে এটি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার আগে বলা যাবে না। তিনি আরও জানান, থানায় ইউডি মামলা রুজু হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে।

এদিকে ভুজপুর থানার মরাকইলা গিলতলা গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, জুলেখার শ্বশুরবাড়ির লোকজন ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন