রামুতে কিশোরকে অপহরণ করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি

ramu pic morshed alam 05.04

রামু প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের রামু উপজেলায় এক কিশোরকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপহৃত কিশোর মুর্শেদ আলম (১৬) রামু উপজেলার চাকমারকুল ইউনিয়নের উত্তর ফারিকুল গ্রামের রশিদ আহমদের ছেলে। শনিবার (৪ এপ্রিল) বিকাল পাঁচটার দিকে এ অপহরণের ঘটনা ঘটে। অপহরণের পর থেকে এ চক্রের সদস্যরা মুর্শেদ আলমের পরিবারের সদস্যদের ফোন করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে।

শনিবার রাতে এ ঘটনায় রামু থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অপহৃত মুর্শেদ আলমের মা আমেনা খাতুন। তিনি জানিয়েছেন, পার্শ্ববর্তী কলঘর বাজার হতে অটোরিক্সাযোগে বাড়ি ফেরার সময় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে একদল অপহরণকারি গাড়িটির গতিরোধ করে। পরে অপহরণকারিরা তাকে টানাহেচড়া করে অপর একটি অটোরিক্সা (সিএনজি) গাড়িতে তুলে ফেলে। মুর্শেদ আলমের আর্তচিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দারা এগিয়ে আসলে অপহরণকারিরা মুর্শেদ আলমকে নিয়েই গাড়িযোগে দ্রুত সটকে পড়ে।

আমেনা খাতুন আরো জানিয়েছেন, অপহরণনের পর সাড়ে পাঁচটার দিকে ছেলে মুর্শেদ আলমের মুঠোফোন থেকে বাড়ির অপর একটি মুঠোফোনে কল করে অপহরণকারিরা ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ না দিলে ছেলেকে প্রাণনাশেরও হুমকি দেয় ফোনে কথা বলা অজ্ঞাত ব্যক্তিটি। বিষয়টি তাৎক্ষণিক স্থানীয় ই্উপি চেয়ারম্যানকে অবহিত করেন এবং রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন বলে জানান তিনি।

তিনি আরো জানান, অপহরণকালে প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে এ ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে তিনি শনাক্ত করেছেন। এরা হলেন, কক্সবাজার সদর উপজেলা খরুলিয়া এলাকার মৃত ইউছুপ আলীর ছেলে লিয়াকত আলী, একই এলাকার মো. জিকু ও জসিম এবং কক্সবাজার পৌর এলাকার হাছান ওরফে পাগলা হাছান। থানায় দেয়া লিখিত অভিযোগেও এদের অভিযুক্ত করা হয়েছে।

অপহৃত মুর্শেদ আলমের বড় বোন শাহিনা আকতার জানিয়েছেন, এ ঘটনার পর থেকে অপহরণকারিরা বারবার মুঠোফোনে কল করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে। কিন্তু তারা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল হওয়ায় এ দাবি বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছেনা। এ কারণে পরিবারের সদস্যরা চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছে। তারা ভাইকে জীবিত ফেরত পেতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

জানা গেছে, অপহরণকারিরা ০১৮১৩-৯৭২৪৩৩ এবং ০১৮৩৭-১৯৮১৪১ নাম্বার থেকে ফোন করে মুর্শেদ আলমের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে মুক্তিপণ দাবি করে আসছে। আজ রবিবার রাত সাড়ে আটটায় এ দুটি নাম্বার ফোন করা হলেও কেউ রিসিভ করেন নি।

তদন্তকারি কর্মকর্তা রামু থানার এসআই মকবুল জানিয়েছেন, অভিযোগ পাওয়ার পর থেকে অপহৃত মুর্শেদ আলমকে উদ্ধারের প্রাণপন চেষ্টা চলছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সন্ধানে অভিযানও চালানো হয়েছে। এছাড়া যেসব ফোন নাম্বার থেকে কল করে মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে সেসব নাম্বার কল করেও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এরপরও পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন