রামুতে পাহাড়ের ঢালে ঝুঁকি নিয়ে মানুষের বসবাসঃ প্রাণহানির আশঙ্কা

ramu-pic-02

রামু প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের রামু উপজেলায় পাহাড়ের ঢালে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে মানুষের বসবাস বেড়েই চলেছে। এ পর্যন্ত ১১টি ইউনিয়নের বিভিন্ন বৃক্ষহীন পাহাড়, সরকারি খাস জায়গা দখল করে ৫০ হাজারেরও বেশী লোকের ঝুঁকিপূর্ণ বসতি স্থাপিত হয়েছে।

সেখানে দরিদ্র ভুমিহীনের পাশাপাশি দখলদার ভুমিদস্যু এবং অবৈধ রোহিঙ্গাদের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাহাড়ে অনেক সময় নির্বিচারে গাছ এবং মাটি কাটার কারণে পাহাড় ও টিলাগুলো ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে। এ নিয়ে উপজেলা প্রশাসন এবং বনবিভাগের প্রতিরোধ মূলক কোন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।

বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সব ক’টি ইউনিয়নের বন বিভাগের পাহাড়ে অবৈধ বসতি স্থাপনকারী রয়েছে। এদের অধিকাংশই ভূমিহীন অথবা রোহিঙ্গা। পাহাড়ে এক স্থানে এদের ঘর ভেঙ্গে দিলে অন্য কোন জায়গায় আবারও বসতি স্থাপন করে। লোকবলের অভাবে পাহাড়ে অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের সম্পূর্ণ উচ্ছেদ করা সম্ভব হয় না।

সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা জানান, রামু উপজেলার ১১ ইউনিয়নের মধ্যে ৯টি ইউনিয়নের অধিকাংশ স্থানের বৃক্ষশূন্য পাহাড় ও টিলা রয়েছে। এসব পাহাড় ও টিলায় অতি দরিদ্র ভূমিহীন মানুষসহ ভূমি দখলদারদের আশ্রিত পাহারাদার এবং রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়ে বসতি গড়ে তোলে। এ কারণে সরকারী খাস ও বন বিভাগের পরিত্যক্ত পাহাড়ে বসতি স্থাপনকারীর সংখ্যা দিনদিন আশংকাজনক হারে বাড়ছে । এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন এবং বনবিভাগের উল্লেখযোগ্য প্রতিরোধ মূলক কোন উদ্যোগ নেই।

রামু প্রেস ক্লাবের উপদেষ্টা সাংবাদিক দর্পণ বড়ুয়া বলেন, বনাঞ্চলের বৃক্ষ নিধন, পাহাড় ও টিলার মাটি কেটে বসতি স্থাপনকারী অধিকাংশই মায়ানমার রোহিঙ্গা নাগরিক। বছরের পর বছর এদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা সংরক্ষিত বনাঞ্চলে পাহাড়ের পাদদেশে বসতি স্থাপন করে বসবাস করলেও প্রশাসন কিংবা বন বিভাগ এদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।

ল্লেখ্য ২০১০ সালের ১৫ জুন কক্সবাজারে পাহাড় ধসে সেনাবাহিনীর ছয় সদস্যসহ ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
এব্যাপারে রামু উপজেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ হোসেন জানান, পাহাড়ের ওপর ও পাহাড় পাদদেশে অবৈধ-অপরিকল্পিত বসতি স্থাপন এবং পাহাড় কাটা সরকারি ভাবে নিষিদ্ধ এবং ইতিমধ্যে বসবাসকারীদের একটি তালিকা করে পাহাড়ের পাদাদেশ থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য বনবিভাগকে বলা হয়েছে। তবে পাহাড়ে বসবাসকারিদের পরিসংখ্যান তাঁর জানা নেই তিনি জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন