রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ঠিকাদারি যেন আলাদিনের চেরাগ
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঠিকাদারী’র দোহাই দিয়ে যারা কয়েক বছরে একাধিক রাজপ্রাসাদ কিংবা কোটি-কোটি টাকার মালিক হয়েছে তারা নিশ্চয় মাদক কারবার অথবা নানা অনিয়মের সাথে জড়িত ছিল বলে মনে করছেন স্থানীয় সুশীল সমাজ।
সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের আগস্টের পর থেকে মিয়ানমার থেকে এদেশে পালিয়ে আসে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। উখিয়া-টেকনাফের বনভূমি দখল করে আশ্রয় নিয়ে বসবাস করছে তারা। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সূত্র ধরে ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জরুরী ভিত্তিতে কর্মপরিকল্পনা হাতে নেয় সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। এরপর থেকে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলমান রয়েছে।
অপরদিকে গত ২/৩ বছর পূর্ব থেকে প্রশাসন ইয়াবা ও মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের পর গডফাদারেরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঠিকাদারী কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে। মূলতঃ কালো টাকা সাদা করার জন্য ইয়াবা কারবারিরা ঠিকাদারী কাজে লোকসান দিয়ে কাজ ভাগিয়ে নিচ্ছে। ফলে প্রকৃত ঠিকাদারেরা পথে বসেছে। এমনও নজির আছে, উখিয়ার একাধিক ঠিকাদার লোকসানের মুখে পড়ে এলাকা থেকে আত্মগোপন করেছে।
উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক পলাশ বড়ুয়া বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঠিকাদারী করে যদি অল্প সময়ে এতো বেশি লাভ হয়ে থাকে, তাহলে সেখানেও নিশ্চয় পুকুরচুরি করা হচ্ছে। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন, আয়কর বিভাগের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে তিনি মনে করেন।
উখিয়া সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক গফুর মিয়া চৌধুরী এক কমেন্টসে বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঠিকাদারী করলে অবৈধ টাকার বস্তা পাওয়া যায় নাকি? এখন সবাই ঠিকাদার সাঁজে। প্রকৃত ঠিকাদারেরা বলছেন, ইয়াবাকারবারীরা বড় বড় ঠিকাদার দাবি করেন। এক বছর ক্যাম্পে কাজ বা ব্যবসা করলে শত কোটি টাকার কিভাবে মালিক হওয়া যায়। মাছের চাষের প্রজেক্ট রাতারাতি ভরাট করে এবং প্রধান সড়কের পাশে চাষাবাদের জমি ভরাট করে একের পর এক অট্রালিকা বহুতল ভবন তৈরি কিভাবে করে। এক বছরে কিভাবে এতো কিছু করতে পারে একজন ইউপি সদস্য। এসব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেখেও না দেখার ভান করে থাকে। এ ব্যাপারে আমিও ধারাবাহিক প্রতিবেদন করতে যাচ্ছি।
শফিউল্লাহ তুহিন নামের এক যুবক ফেসবুক কমেন্টসে লিখেছেন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বন্দুকযুদ্ধ থেকে রেহাই পেতে ইয়াবা ব্যবসায়ী এখন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ঠিকাদার। আরও অনেককে বিরূপ মন্তব্য করতে দেখা গেছে।
সচেতন মহলের মতে, উখিয়ার নব্য কোটিপতিরা সকলের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ঠিকাদার। তারা অল্প সময়ে ঠিকাদারী করে কিভাবে এতো টাকার মালিক হলো তা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর খতিয়ে দেখা দরকার।