লক্ষ্ণীছড়িতে সেনাবাহিনী কর্তৃৃক দুই গ্রামবাসীকে নির্যাতনের অভিযোগ ইউপিডিএফ’র: সেনাবাহিনীর অস্বীকার
পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:
লক্ষ্ণীছড়িতে বোরকা পার্টির সহায়তায় সেনাবাহিনী নিরীহ দুই গ্রামবাসীর উপর নির্যাতন চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ইউনাইটেড ডেমোক্রাটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)। তবে সেনাবাহিনী এ অভিযোগকে সম্পূর্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে অস্বীকার করেছে।
ইউপিডিএফ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দাবী করেছে, লক্ষ্মীছড়িতে সেনাবাহিনী কর্তৃক দুই নিরীহ ব্যক্তিকে মারধর করা হয়েছে এবং এঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন, ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর খাগড়াছড়ি জেলা ইউনিটের সমন্বয়ক প্রদীপন খীসা।
বিবৃতিতে তিনি অভিযোগ করে বলেন, আজ ২২ আগস্ট সকাল ৮টার দিকে লক্ষ্মীছড়ি সেনাজোন থেকে একদল সেনা সদস্য তাদের মদদপুষ্ট বোরকা পার্টির এক সদস্যকে সাথে নিয়ে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার দুল্যাতলী ইউনিয়নের হাজাছড়ি ও মহালছড়ি উপজেলার সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নের চংড়াছড়ি গ্রামে হানা দিয়ে গুরিঙ্যা চাকমা (২৫) পিতা- বালি ধন চাকমা ও বরপেদা চাকমা(৩৫) পিতা- লক্ষ্মীধন চাকমা-কে আটক করে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে লাম্বাছড়া গ্রামের একটি বাড়ির উঠানে কাঁঠাল গাছের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে তাদেরকে বেধড়ক মারধর করার পর আহত অবস্থায় সেখানে ফেলে রেখে যায়। পরে পরিবারের লোকজন সেখান থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়। সেনাদের বেদম মারধরের কারণে বরপেদা চাকমা মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।
এদিকে ইউপিডিএফ’র এই দাবী সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে তা অস্বীকার করেছেন লক্ষ্ণীছড়ি সেনাজোনের কমান্ডার লে. কর্নেল মোয়াজ্জেম হোসেন। পার্বত্যনিউজকে তিনি বলেন, ঘটনাস্থল মহালছড়ি, লক্ষ্ণীছড়ি ও সিন্দুকছড়ি সেনাজোনের মাঝামাঝি এবং খুবই দুর্গম। ওই দিকে আজ তার জোনের কোনো পেট্রল ছিলনা দাবী করে তিনি বলেন, অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ইউপিডিএফ বিভিন্ন সময় সেনাবাহিনী সম্পর্কে এ ধরণের মিথ্যা অপপ্রচার করে থাকে বলেও তিনি যোগ করেন।
এদিকে অপর ঘটনার কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে প্রদীপন খীসা বলেন, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সেনা মদদপুষ্ট বোরকা পার্টির সন্ত্রাসীরা লক্ষ্মীছড়ি সেনাজোনের আনুমানিক ২০০ গজ দূরত্বের শিলাছড়ি ব্রিজের কাছ থেকে শিলাছড়ি গ্রামের কালা মোহন চাকমার ছেলে মোটর সাইকেল চালক নিরোধ চাকমা(৩৪) ও মংসাথোয়াই মারমার ছেলে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সদস্য অংসিলা মারমা(২২)-কে অপহরণ করে। অবশ্য পরে দুপুর ১২টার দিকে প্রত্যেকে ১০ হাজার টাকা করে দেয়ার শর্তে সন্ত্রাসীরা তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছে। স্থানীয় জোনের সেনাদের প্রত্যক্ষ মদদে বোরকা পার্টির সন্ত্রাসীরা এসব অপকর্ম সংঘটিত করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বিবৃতিতে তিনি অবিলম্বে নিরীহ জনগণ ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের উপর সেনা নির্যাতন বন্ধ করা এবং বোরকা পার্টির সন্ত্রাসীদের মদদান ও তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানান।