আপডেইট

লম্বাশিয়া ক্যাম্পে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা

fec-image

উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পে সন্ত্রাসীর গুলিতে রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মাষ্টার মুহিব্বুল্লাহ নিহত হয়েছে। সে মৃত মৌলভী ফজল আহমদের ছেলে এবং আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস বা (এআরএসপিএইচ) চেয়ারম্যান ছিলেন।

আজ বুধবার ৮.৩০ টার সময় রোহিঙ্গা নেতা এবং শিক্ষক মুহিবুল্লাহ(৫০) এফডিএমএন ক্যাম্প-১ ওয়েস্ট এর ব্লক-ডি ৮ এ অজ্ঞাতনামা বন্দুকধারীদের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সন্ধ্যায় এশার নামাজ শেষে ঘরে ফিরলে তিনজন দুর্বত্ত খুব কাছে থেকে তাকে ৫ রাউন্ড গুলি করে। এতে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। স্থানীয়রা দ্রুত কুতুপালং এমএসএফ হসপিটালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জানা যায় এশার নামাজের পর নিজ অফিসে অবস্থানকালে অজ্ঞাতনামা বন্ধুকধারীরা মোট ৫ রাউন্ড গুলি করলে তিন রাউন্ড গুলি উক্ত ব্যক্তির বুকে লাগে এবং উক্ত গুলির ফলেই নিহত হন। লাশ দ্রুত উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানা যায়।

এই ঘটনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

কুতুপালং লম্বাশিয়া ৮-এবিপিএন এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: কামরান হোসেন জানিয়েছেন, এশার নামাজের পর নিজ অফিসে অবস্থানকালে অজ্ঞাতনামা বন্ধুকধারীরা ৫ রাউন্ড গুলি করলে তিন রাউন্ড গুলি তার ব্যক্তির বুকে লাগে। ক্যাম্পের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

নিহতের মরদেহ দ্রুত উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, বিংশ শতকের গোড়ার দিকে ১৫ জন সদস্য নিয়ে গড়ে তোলেন ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসথ বা এআরএসপিএইচ। স্থানীয় বাংলাদেশি মানবাধিকারকর্মীদের সঙ্গেও গড়েন যোগাযোগ। ধীরে ধীরে মুহিবুল্লাহ প্রধান পাঁচ রোহিঙ্গা নেতার একজন হয়ে ওঠেন।

রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাহ ১৯৯২ সালে রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। তখন থেকেই সে রয়েছে টেকনাফ অঞ্চলে।

বিংশ শতকের গোড়ার দিকে ১৫ জন সদস্য নিয়ে গড়ে তোলেন ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানরাইটসথ বা এআরএসপিএইচ। স্থানীয় বাংলাদেশি মানবাধিকারকর্মীদের সঙ্গেও গড়েন যোগাযোগ। ধীরে ধীরে মুহিবুল্লাহ প্রধান পাঁচ রোহিঙ্গা নেতার একজন হয়ে ওঠেন।

দেশের বাইরে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে সফর করেন একাধিক দফায়। কিন্তু ২০১৭ সালে রোহিঙ্গার ঢল নামার পর পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে। সুস্পষ্টভাবে মুহিবুল্লার আজকের অবস্থানের মূল উত্থান হয় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ২০১৮ সালে ইউএনএইচসিআরকে সংযুক্ত করার পর। রোহিঙ্গাদের বক্তব্য জানার চেষ্টা থেকেই মদদ পায় মুহিবুল্লাহর সংগঠন এআরএসপিএইচ।

ইংরেজি ভাষা ও রোহিঙ্গাদের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে দক্ষ মুহিবুল্লাহ ধীরে ধীরে বিদেশিদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন। জাতিসংঘ মহাসচিবসহ যত বিদেশি প্রতিনিধি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গেছেন তাদের প্রত্যেকের সঙ্গেই রোহিঙ্গা প্রতিনিধি হিসেবে মুহিবুল্লাহ ও তার সঙ্গীদের সাক্ষাৎ করানো হয়েছে।

এই মুহিবুল্লাহ মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিবকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংলাপের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ১৭ দেশের যে সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের ২৭ প্রতিনিধি সাক্ষাৎ করেছিলেন সেখানেও যোগ দিয়েছিলেন এই মুহিবুল্লাহ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন