লামার ফাইতং আ’লীগ সভাপতির হয়রানি থেকে রেহাই পেতে সংবাদ সম্মেলন

fec-image

লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন ও তার সহযোগী কর্তৃক পৈতৃক সম্পত্তি জবরদখলের প্রতিবাদে আইনি সহয়তা চেয়ে সংবাদ সংম্মেলন করেছেন একই ইউনিয়নে সুতাবাদী এলাকার গৃহিণী মাহমুদা বেগম।

মোঙ্গলবার দুপুরে লামা রিপোর্টাস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন মাহমুদা বেগম বাদি করেন ফাইতং ইউনিয়নের নয়া পাড়া এলাকার মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে এবং ফাইতং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী এনে তার পিতার নামীয় ভোগদখলীয় জায়গা জবরদখলের জন্য হামলা চালায়। এসময় লামার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড সুতাবাদী গ্রামের মাহাতাব হাওলাদার এর মেয়ে মাহমুদা বেগম তার লিখিত বক্তবে জানান, গত ১৯৮১-৮২ সালে বন্ধোবস্তি সূত্রে তার পিতা ৩০৬নং ফাইতং মৌজায় আর হোল্ডিং-৮১১ মূলে ৫ একর জায়গা বন্দোবস্তি পান। তখন থেকে উক্ত জায়গায় বসতবাড়ি নির্মাণ ও বাগান সৃজন করে দীর্ঘ ৪০ বছর যাবৎ ভোগদখলে আছে। মাহমুদা বেগম জানান পিতা মাহাতাব হাওলাদার বৃদ্ধ-পঙ্গু হয়ে গেলে সে অসহায় হয়ে পড়ে। অভাবে তাড়নায় তার পিতা স্থানিয় কফিল উদ্দিনের কাছে ২ একর জায়গা বিক্রয় করে। দুঃখ জনক হলেও স্বত্ব যে, মাহামুদা বেগমের ভাষায়, আমাদের অসহায় পেয়ে লোভের বশিভূত হয়ে ফাইতং ইউনিয়নের নয়া পাড়া এলাকার মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে ও উক্ত ফাইতং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী এনে উক্ত ভোগদখলীয় ও বিক্রিকৃত জায়গা জবরদখলের জন্য হামলা চালায়।

গত ১লা জুলাই ২০২০ইং বুধবার সকাল ৮টায় হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে তার ৮/১০জন আত্মীয় স্বজন ও ১টি ট্রাক, ৩টি সিএনজি করে ৭০/৮০ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে ধারালো দা, কিরিচ, লোহার রড ইত্যাদি নিয়ে জায়গা দখলে হামলা করে। এসময় তারা পিলার ও তারের বেড়া দিয়ে আমার বাবা মাহাতাব হাওলাদারের ভোগদখলীয় জায়গা ও কফিল উদ্দিনের কাছে বিক্রয়কৃত প্রায় ৮০ শতক জায়গা জোর করে দখল করে নেয়। দখলে বাধা দিলে তারা আমাকে ও কপিল উদ্দিন এর জায়গার পাহারাদার জোৎস্না বেগম নামে এক মহিলাকে মারধর করে। জোর করে জায়গা দখল করতে এলে আমি প্রতিবাদ করলে মো. হেলাল উদ্দিন, তার শশুড় মন্নান ও ৫নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার জুবাইর ধারালো দা দেখিয়ে আমাদের ভয় দেখায়। বলে বাধা দিলে আমাদের প্রাণে হত্যা করবে। এছাড়া ঘটনার সময় জয়নাল আবেদীন, আবুল কাসেম, হাসেম উল্লাহ, হাসিনা বেগম, জসিম উদ্দিন, মোহাম্মদ কালু, মোহাম্মদ লাভলু, সাজ্জাদ হোসেন সহ আরো ৭০/৮০কন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী উপস্থিত ছিল। এদিকে হামলার খবর পেয়ে ফাইতং পুলিশ ফাঁড়ি হতে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলে বিবাদী ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।

এই বিষয়ে বুধবার (১লা জুলাই ২০২০ইং) সকালে ফাইতং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন সহ ১০জনকে বিবাদী করে ও ৭০/৮০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে লামা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। অভিযোগ দেয়ার পর বিষয়টি জানতে পেরে লামা উপজেলা চেয়ারম্যান ৪ জুলাই ২০২০ইং শনিবার দুপুরে দুই পক্ষকে নিয়ে তার কার্যালয়ে শালিসী বৈঠকে বসে। এসময় দুই পক্ষকে আপোস মীমাংসা করে দেয়। কথা থাকে মো. হেলাল উদ্দিন আমাকে আর হয়রাণী করবে না। বৈঠকে হেলাল জবরদখলকৃত জায়গা ছেড়ে দেয়ার কথা থাকলেও তার এখনো ছেড়ে দেয়নি। ঘটনার সময় হেলাল উদ্দিনের সহযোগী মোহাম্মদ লাভলু তার নির্দেশে আমার একটি টার্চ মোবাইল নিয়ে যায়। এখনো সে মোবাইলটি দেয়নি।

কিন্তু হেলাল সে ক্ষোভ মনে পুষে রেখে নিজে সরাসরি না এসে তার অনুসারী সুতাবাদী এলাকার কোবাত আলীর ছেলে জয়নাল আবেদীন ও একই এলাকার মৃত এমদাদ এর ছেলে আমির হোসেন এর পক্ষে তার ছেলে মো. আবুল কাসেম বান্দরবান জর্জ কোর্টে ৩টি, লামা থানায় ১টি ও ফাইতং পুলিশ ফাঁড়িতে ১টি মামলা করে। আমি খুবই গরীব মানুষ। যেখানে গাড়ি ভাড়া দিয়ে লামা বাজারে আসার ক্ষমতা নাই, কিভাবে এতগুলো মামলা পরিচালনা করব। তারা মূলত আমাকে মামলা মোকাদ্দমা দিয়ে আইনী হয়রানী করে দেশান্তরি করে উক্ত জায়গা জবরদখলের পায়তারা করছে।

আমি অসহায়, দুর্বল ও দরিদ্র একজন মহিলা। আমি সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি আমাকে আমার পৈত্রিক জায়গায় বসবাসের সুযোগ করে দিন। এবং হেলাল উদ্দিন ও তার লোকজন কর্তৃক করা মামলা মোকাদ্দমা হতে রক্ষা করুন। এছাড়া হেলাল ও তার লোকজন সবসময় আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে। তারা আমাকে মেরে লাশ গুম করে ফেলার হুমকী দিচ্ছে। আমার পক্ষে কেউ কথা বললে তাকেও মামলা মোকাদ্দমা দিয়ে হয়রাণীর হুমকি দেয় তারা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন