লামায় পূজার প্যান্ডেলে ভাংচুর, সংঘর্ষে ওসিসহ আহত শতাধিক

fec-image

পবিত্র কুরআন অবমাননার প্রতিবাদে লামায় মানবন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে ত্রিমুখী সংঘর্ষে লামা থানার অফিসার ইনচার্জসহ উভয়পক্ষের শতাধিক লোক আহত হয়েছে। এই সময় উত্তেজিত জনতা লামা কেন্দ্রীয় হরিমন্দিরের সামনে রাস্তায় নির্মিত দুর্গাপূজার প্যান্ডেলে, দোকান ও আসবাবপত্র ভাংচুর করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ অন্তত ২০ রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। ঘটনাস্থলে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি ও আনসার মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কুমিল্লায় পূজামন্ডপে পবিত্র কুরআন অবমাননার প্রতিবাদে তৌহিদি জনতার ব্যানারে বৃহস্পতিবার সকাল দশটায় লামা উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন লামা কোর্ট জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আজিজুল হক।

সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম ও লামা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. ইব্রাহিম।

বিক্ষোভকারীরা সভা শেষে ফিরে যাওয়ার পথে লামা মাছ বাজার কর্নার থেকে পূজার প্যান্ডেলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে মন্দিরের ভেতর থেকে বিক্ষোভকারীদের উদ্যেশ্যে পাল্টা জবাব দেন। এতে সংঘর্ষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে গেলে পুলিশ রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। প্রায় তিন-চার ঘন্টাব্যাপী এই সংঘর্ষ অব্যাহত থাকে। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও আনসার মোতায়েন করা হয়। সংঘর্ষে লামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মিজানুর রহমানসহ অন্তত শতাধিক লোক আহত হয়েছে।

বিকালে বান্দরবান জেলা প্রশাসক, ইয়াসমিন পারভীন তিররিজী ও বান্দরবান পুলিশ সুপার জেরিন আখতার স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে লামা উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে জরুরী সভা করে। সভায় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার জানান, ভিডিও ফুটেজ এবং বিভিন্নভাবে তথ্যের ভিত্তিতে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

লামা কেন্দ্রীয় হরিমন্দির কমিটির সভাপতি প্রশান্ত ভট্টাচার্য জানান, সংঘর্ষে পূজামন্ডপের জন্য সড়কের উপর নির্মিত প্যান্ডেলের ক্ষতি হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের কবল থেকে পূজা কমিটি দূর্গাপ্রতিমাকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে।

লামা কোট জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আজিজুল হক বলেন, প্রতিবাদ সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের সাথে মন্দিরের পূজামন্ডপে হামলাকারীদের কোনো সম্পর্ক নাই।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন