শিকারীদের তাণ্ডবে পার্বত্যাঞ্চলের প্রাণী বৈচিত্র হুমকির মুখে
কাপ্তাই প্রতিনিধি:
পার্বত্যঞ্চলের প্রাণীবৈচিত্র হুমকির মুখে। একের পর এক বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণী নিধন করা হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংরক্ষণের কোন ধরনের উদ্যোগ নেই। রাঙ্গামাটি জেলার দশটি উপজেলার বিভিন্ন দূর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের ১২প্রজাতির বন্যপ্রাণী ইতিমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। অবশিষ্ট যেসকল প্রাণী এখনো নানা প্রতিকুল পরিবেশে টিকে আছে। সংরক্ষণের অভাবে তাও বিলুপ্ত হতে চলছে।
পার্বত্যবাসীর মতে, পার্বত্যঞ্চলের বেশির ভাগ বন অবাধে নিধন, জুমচাষ ও বনের মধ্যে আগুন দেয়ার ফলে বন্যপ্রাণী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তারা বলেন, বন ধ্বংস হওয়ার ফলে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল, বংশবিস্তার এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য না থাকার ফলে কয়েক বছরের ব্যবধানে পার্বত্যঞ্চলের ১২প্রাজাতির বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বনের মধ্যে পশুখাদ্য বা আবাসস্থল না থাকায় লোকালয়ে এসে বিভিন্ন বন্যপ্রাণী হানা দেওয়ার ফলে এক শ্রেণির পশুশিকারী সুযোগ বুঝে তাদের গুলিসহ বিভিন্ন ফাঁদ তৈরি করে নিধন করে চলছে।
বনের মধ্যে কোন খাবার না পেয়ে হাতি, বানর, হরিণ, বন বিড়াল, হনুমান, শিয়াল, টিয়া, ময়না, সারস, ভিমরাজ, কাঁঠবিড়ালী, অজগর সাপসহ বিভিন্ন প্রাজাতির বন্য পশুপাখি লোকালয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছে।
জানা যায়, পার্বত্যঞ্চলের দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন কাপ্তাই হ্রদ হতে ভাসমান অবস্থায় গুলিবিদ্ধ একটি হাতি ২২অক্টোবার উদ্ধার করা হয়। বনবিভাগ শত চেষ্টা করেও হাতিটি প্রাণে বাঁচাতে পারেনি। ১২দিন পর হাতিটির মত্যু হয়।
শুধু হাতি নয় একেরপর এক হরিণ ও বানরসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণীকে হরহামেশা নিধন করা হচ্ছে।
অভিজ্ঞমহল মনে করছেন, পার্বত্যঞ্চলের বন বিভাগের সঠিক কোন রক্ষণাবেক্ষণ না থাকার ফলে ধীরে ধীরে বন্যপ্রাণী ধ্বংস হচ্ছে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ আছে শুধু কাগজে, কলমে এবং সভা সামাবেশ ছাড়া বাস্তবে তাদের কোন কাজ দেখা যায় না।
তাদের মতে, যেভাবে বন্যপ্রাণী নিধন করা হচ্ছে, তাতে করে পার্বত্যঞ্চলে পর্যটন ভ্রমণ পিপাসুরা হয়তো বা আর পার্বত্যঞ্চলে আসবে না।
তাই পার্বত্যাঞ্চলের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র রক্ষার জন্য বন বিভাগ, বন সংরক্ষণ বিভাগসহ এলাকার সচেতন জনগণ মিলে কাজ করা এখন সময়ের দাবি। না হলে অচিরেই অবশিষ্ট বন ও বন্যপ্রাণী ধ্বংস হয়ে যাবে বলে বিশেষজ্ঞমহলের ধারণা।