সাংবাদিকদের উপর হামলার প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে মানববন্ধন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে অগ্নিসংযোগ, সাংবাদিকের উপর হামলা এবং সুর সম্রাট আলাউদ্দিন খাঁ একাডেমিতে আগুন দেয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্হানে হেফাজতের তাণ্ডবের প্রতিবাদ জানিয়ে মূল হোতাদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে খাগড়াছড়িতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৩১ মার্চ) সকাল ১১টায় খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাব, খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়নের যৌথ আয়োজনে জেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলা-উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন মিডিয়ার পেশাজীবি সংবাদিকরা অংশ নেয়।
খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি জীতন বড়ুয়ার সভাপতিত্বে এতে খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের মুহাম্মদ, খাগড়াছড়ি টিভি জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এইচএম প্রফুল্ল, খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী, খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু দাউদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হরতাল, আন্দোলনে হেফাজতের টার্গেটে পরিণত হন সাংবাদিকরা। ভিডিও এবং ছবি ধারণ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন বেশ কয়েকজন। রবিবার হরতাল চলাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। এর আগে প্রেসক্লাবের সিসি ক্যামেরা খুলে নেয় হামলাকারীরা। ঘটনার খবর পেয়ে প্রেস ক্লাবে ছুটে আসার পথে হামলা চালানো হয় প্রেস ক্লাব সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামির ওপর। জামিকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। কয়েক দফা প্রেসক্লাবে হামলা হয়। এসময় ক্লাবে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন জেলার অর্ধশত সাংবাদিক। এর আগে সকালে শহরের পৈরতলায় সাংবাদিক আবুল হাসনাত রাফি হরতালের তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করতে গেলে হামলার শিকার হন। তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়া হয় এবং মারধর করা হয়।
শনিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল কাভার করতে গিয়ে মাদ্রাসা ছাত্রদের ছুড়ে মারা ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হন এটিএন নিউজের ক্যামেরাপারসন সুমন রায়। তার সামনের দাঁত ভেঙে যায়। এর পরপরই টিএ রোড, মাদ্রাসা মোড়ে মান্নান ম্যানশনে থাকা যমুনা, আরটিভি এবং মাইটিভি’র অফিসে চড়াও হয় মাদ্রাসা ছাত্ররা। তাদের ইটপাটকেলে অফিসের কম্পিউটারসহ পেশার নানা যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এদিনই এটিএন বাংলার ইসহাক সুমন, এসএ টিভির মনিরুজ্জামান পলাশ সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয় তাদের লক্ষ্য করে।
শুক্রবার ভাদুঘরে মাদ্রাসা ছাত্ররা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করার সময় এর ভিডিওচিত্র ধারন করতে গিয়ে এনটিভির ক্যামেরাপারসন সাইফুল ইসলাম ধাওয়ার মুখে পড়েন। এরপর ক্যামেরাটি একজন বিজিবি সদস্যের হাতে দিয়ে সাইফুল রক্ষা পান। ইটিভির ক্যামেরা পারসন রাসেলও ধাওয়ার শিকার হন এখানে। ঐদিনই রেলস্টেশন এলাকায় মোবাইলে ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন নিউজ টুয়েন্টি ফোরের সাংবাদিক মাসুক হ্নদয়। তাকে বাচাতে গিয়ে ইটিভি’র সাংবাদিক মীর মো. শাহিন হামলার শিকার হন। একাত্তর টিভির জালাল উদ্দিন রুমি ও আজকালের খবর প্রতিনিধি মোজাম্মেল চৌধুরী কাজ করতে গিয়ে অপদস্থ হন। তাদের মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও চিত্র কেটে মোবাইল সেট ফেরত দেয়া হয়।