সাজেক ভ্যালির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হানিফ সংকেত

Capture1

স্টাফ রিপোর্টার:

সাজেক ভ্যালির অপরূপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হলেন জনপ্রিয় উপস্থাপক ও ইত্যাদির প্রাণ পুরুষ হানিফ সংকেত। আজ রাতে বিটিভিতে প্রচারিতব্য ইত্যাদির এবারের পর্ব ধারণ করা হয় খাগড়াছড়িতে। ইত্যাদির আজকের পর্বে খাগড়াছড়ির অপরূপ সাজেক ভ্যালির উপর রয়েছে একটি একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন। এর সুটিং উপলক্ষে সাজেক ভ্যালিতে যান হানিফ সংকেত। সেসময় তিনি সাজেকের সৌন্দর্যে এতটাই বিমোহিত হন যে, নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে তিনি তা বর্ণণা করেন। আজ রাতে বিটিভিতে প্রচারিত হবে ইত্যাদি।

স্টাটাসে হানিফ সংকেত বলেন, “আমাদের দেশে দেখার মত, জানার মত এমন অনেক স্থান আছে যা দেশে থেকেও আমরা অনেকেই জানি না। বলা যায় নিজের দেশকেই আমাদের অনেকের ‘দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া’। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শণ এবং প্রাকৃতিক দৃষ্টিনন্দন স্থানগুলোতে ‘ইত্যাদি’ ধারণ করতে গিয়ে আমরা আমাদের দেশের এই অপরূপ স্থানগুলো সম্পর্কে কিছুটা হলেও জানতে পারছি এবং আপনাদেরও জানাতে পারছি। এরই ধারাবাহিকতায় এবার আমরা ‘ইত্যাদি’ নিয়ে গিয়েছিলাম নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি খাগড়াছড়িতে। আর সেখান থেকে গিয়েছিলাম আরো ৬২ কিলোমিটার দুরে সাজেক ভ্যালীতে। আমি মনে করি ভ্রমণ পিপাসু সবারই উচিৎ পরিবার-পরিজন নিয়ে একবার সাজেক ঘুরে আসা। অপূর্ব সুন্দর একটি জায়গা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২০০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত এই স্থান থেকে দেখা যায় ভারতের মিজোরামের লুসাই পাহাড়ের অপরূপ দৃশ্য। যা বিমোহিত করবে প্রকৃতি প্রেমীদের। সাজেক নিয়ে এবারের ‘ইত্যাদি’তে একটি প্রতিবেদন রয়েছে। সাজেক দেখতে কেমন? এবারের ‘ইত্যাদি’তে এ সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাবেন”।

এ ছাড়াও এবারের পর্বেও রয়েছে কয়েকটি হৃদয়ছোঁয়া প্রতিবেদন। রয়েছে শিক্ষানুরাগের এক জীবন্ত প্রতীক রিকসা চালক মো. জাকের হোসেনের উপর একটি শিক্ষণীয় প্রতিবেদন।

 এছাড়াও প্রায় ত্রিশ বছর ধরে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের বিস্তীর্ণ জায়গা যিনি সবুজ করে তুলেছেন চির সবুজ বকুল ফুলে গাছ দিয়ে এবং সুরভিত করেছেন গোটা অঞ্চল, সেই ভূমিহীন দিনমজুর সিদ্দিক গাজীর উপর রয়েছে একটি মানবিক প্রতিবেদন। একজন সরকারি কর্মচারী মাগুরার এবিএম নজরুল ইসলামের নিষ্ঠা এবং কর্মনিষ্ঠার উপর রয়েছে একটি উৎসাহব্যঞ্জক প্রতিবেদন। যিনি তার দীর্ঘ কর্মজীবনে কোন অজুহাতেই কখনও কোন নিয়ম ভঙ্গ করেননি।
এছাড়াও পাহাড়ী কন্যা রাঙামাটি জেলার সাজেক ভ্যালীর উপর রয়েছে একটি চমৎকার তথ্য ভিত্তিক প্রতিবেদন। প্রতিবেদনটির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে সাজেকের অনেক অজানা রূপ। আসলে খাগড়াছড়িতে এমন এমন দুর্গম অঞ্চলও রয়েছে যেখানে টিভি অনুষ্ঠান নির্মাণতো দূরের কথা, কোন টিভি ক্যামেরাও কখনও পৌঁছেনি। এবারের ইত্যাদিতে মূল গান রয়েছে একটি।
13627_10153078811771591_2344718264753052643_n
উল্লেখ্য ইত্যাদিতে সবসময় ভিন্ন আঙ্গিকে বিষয় ভিত্তিক গান প্রচার করার চেষ্টা করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এবারের ইত্যাদিতে বিভিন্ন জাতিসত্তার মধ্যে বন্ধন এবং আমাদের দেশের রূপ-বৈচিত্র্য বর্ণনা করে একটি দেশাত্মবোধক গান গেয়েছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী এ্যান্ড্রু কিশোর। খ্যাতিমান গীতিকার মোহাম্মদ রফিকউজ্জামানের এই কথায় গানটিতে সুর দিয়েছেন আলী আকবর রূপু। গানটি নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি খাগড়াছড়ির বিভিন্ন নান্দনিক লোকেশান, সাজেক ভ্যালীর বিভিন্ন স্পটে এবং মঞ্চে দর্শকদের সামনে ৩ দিন ধরে ধারণ করা হয়। গানটির সঙ্গে কোরিওগ্রাফি করেছেন স্থানীয় নৃত্যশিল্পীরা। এছাড়াও এবারের অনুষ্ঠানে রয়েছে একটি ব্যতিক্রমী নাচ। যাতে অংশগ্রহণ করেছেন স্থানীয় বিভিন্ন পাহাড়ী সম্প্রদায় এবং বাঙালী নৃত্যশিল্পীরা। চাকমা-ত্রিপুরা-মারমা ও বাংলা ভাষায় গাওয়া একটি দেশের গানের সঙ্গে এই নাচটিতে অংশগ্রহণ করেছেন প্রায় তিন শতাধিক স্থানীয় নৃত্যশিল্পী।
ittadi-1422363087
দর্শক পর্বের নিয়ম অনুযায়ী যেই স্থানে ইত্যাদি ধারণ করা হয় সেই স্থানকে ঘিরে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয় এবং সঠিক উত্তর দাতাদের দিয়ে করা হয় ২য় পর্ব। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। খাগড়াছড়িকে ঘিরে করা প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে হাজার হাজার দর্শকের মাঝ থেকে ৩ জন দর্শক নির্বাচন করা হয়। স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্রের সাথে পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় জুম নৃত্য, বোতল নৃত্য ও বাঁশ নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে ২য় পর্বে বিজয়ী নির্বাচন করা হয়। নিয়মিত পর্ব হিসেবে এবারও রয়েছে যথারীতি মামা-ভাগ্নে, নানী-নাতি ও চিঠিপত্র বিভাগ। রয়েছে বিভিন্ন সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে বেশ কিছু সরস অথচ তীক্ষè নাট্যাংশ। নিয়মিত অনিয়ম, নববর্ষের আতঙ্ক, শিশুর মায়ের শিশুসুলভ আচরণ, দেশী টিভি চ্যানেলের জন্য চ্যালেঞ্জ, শীতের পিঠার দুর্গতি, ব্যতিক্রমী সাক্ষাৎকারসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর রয়েছে বেশ কয়েকটি নাট্যাংশ।
বরাবরের মত এবারও ইত্যাদির শিল্প নির্দেশনা ও মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন ইত্যাদির নিয়মিত শিল্প নির্দেশক মুকিমুল আনোয়ার মুকিম। পরিচালকের সহকারী হিসাবে ছিলেন যথারীতি রানা ও মামুন। সব শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রিয় অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র আগামী পর্ব একযোগে বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে-এ প্রচার হবে ৩০ জানুয়ারি, শুক্রবার রাত ৮ টার বাংলা সংবাদের পর। ‘ইত্যাদি’র রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন। ‘ইত্যাদি’ স্পন্সর করেছে যথারীতি কেয়া কস্মেটিকস্ লিমিটেড।

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন