সিক্স মার্ডার: লাশ হস্তান্তর, কাটেনি আতঙ্ক

fec-image

বান্দরবানের বাঘমারায় সিক্স মার্ডারের ঘটনার ৩০ঘন্টা পর ১০জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতসহ ২০জনের বিরুদ্ধে বান্দরবান থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম।

তবে এখেনা কেউ আটক হয়নি। অন্যদিকে বাঘমারা এলাকায় এখনো আতঙ্ক কাটেনি। টহল দিচ্ছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর সদস্যরা।

বাঘমারা উপজাতীয় ওই পল্লীর নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা এখনও সেই বর্বরোচিত হামলার কথা মনে করে কাঁদছেন। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও সাংবাদিক দেখলে আবেগআপ্লুত হয়ে পড়ছেন।

সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলির সাক্ষ্য বহন করছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মালামাল ও বিভিন্ন স্থান। তবে আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে আইন শৃঙখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। বুধবার (৮জুলাই) সন্ধ্যায় জেএসএস (সংষ্কার) দলের জেলার সাধারণ সম্পাদক উবামু মারমা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।

আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মতে, নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের জন্য এই হামলার ঘটনা ঘটানো হয়। কারণ নিহতরা জেএসএস (এমএন লারমা) দলের সদস্য। আবার নিহতের পরিবারগুলোও এই হামলার জন্য জেএসএস মূল (সন্তু) গ্রুপকে দায়ী করছে।

এদিকে নিহত ৬জনের ময়না তদন্ত শেষে বুধবার (৮জুলাই) বিকেলে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেছে পুলিশ। নিহত রতন তংচঙ্গ্যার লাশ গ্রহণ করেন তার স্ত্রী মেনী মারমা ও ছেলে এবং বাকী ৫জনের লাশ গ্রহণ করেন জেএসএস সংস্কার নেতা উবামু মারমা। পরে তাদের ৫জনের মরদেহ খাগড়াছড়ি পাঠানো হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার সকাল ৭টার কিছু আগে রাজবিলা ইউনিয়নের বাঘমারা বাজার এলাকায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গুলিতে ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন ৬জন।

নিহতরা হলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি বিমল কান্তি চাকমা (৬৮), উপদেষ্টা কমিটির সদস্য চিংথোয়াইয়াং মারমা ওরফে ডেভিড (৫৬), বান্দরবান জেলা সভাপতি রতন তঞ্চঙ্গা (৫০), পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির সদস্য রবীন্দ্র চাকমা (৫০), রিপন ত্রিপুরা ওরফে জয় (৩৫) ও জ্ঞান ত্রিপুরা ওরফে দিপন (৩২)। রতন তঞ্চঙ্গা ছাড়া বাকি সবার বাড়ি খাগড়াছড়িতে।

জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (সংষ্কার) দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করার জন্য সম্প্রতি বান্দরবান জেলা কমিটি গঠন করা হয়। পাশাপাশি তাদের মজবুত ঘাটি তৈরীর জন্য কাজ করছিল সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের বেশ কয়েকজন। এই কারণে জেএসএস মূল (সন্তু) গ্রুপের চোক্ষুশুল হয়ে পড়ে তারা। যার কারণে মঙ্গলবারের বর্বরোচিত ওই হামলার ঘটনা ঘটে।

যদিওবা জেএসএস এর জেলা সাধারণ সম্পাদক ক্যবামং মারমা মঙ্গলবার রাতে এই ঘটনার সাথে তাদের কারো সম্পৃক্ততা নেই দাবি করেন। এই দোষীদের শাস্তির দাবি জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন