সিলেটে আরেকটি কূপে গ্যাসের সন্ধান, মজুদের সম্ভাবনা ৫০ বিলিয়ন ঘনফুট

fec-image

দেশের সবচেয়ে পুরনো গ্যাসক্ষেত্র হরিপুরের ১০ নম্বর কূপে গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। খনন কাজ শেষে রোববার (২৬ নভেম্বর) গ্যাস প্রাপ্তির তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেড।

কূপটিতে প্রায় ৫০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস কর্তৃপক্ষ। এখান থেকে দৈনিক ১৩ মিলিয়ন গ্যাস পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এসজিএফএল’র ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, “এই কূপ থেকে দৈনিক ১৩ মিলিয়ন গ্যাস পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।”

এর আগে, গত জুনে কূপটিতে খনন কাজ শুরু হয়। ১৪৯ কোটি টাকায় সিলেট-১০ নম্বর কূপ খনন করে চীনা কোম্পানি সিনোপেক। কূপটিতে প্রায় ৫০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস কর্তৃপক্ষ।

হরিপুরে গ্যাস পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) প্রকৌশলী আব্দুল জলিল প্রামাণিক বলেন, “এই কূপ থেকে উৎপাদনে যেতে আরও ছয় মাসের মতো সময় লাগবে। পাইপলাইন বসিয়ে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ করা হবে।”

সংশ্লিষ্টরা জানান, নতুন এই কূপে মজুদ গ্যাসের মূল্য ৩,৬০০ কোটি টাকা। এলএনজির আমদানি মূল্য হিসেবে যার দাম দাঁড়াবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।

এর আগে, গত ২২ নভেম্বর সিলেট কৈলাসটিলায় পরিত্যক্ত ২নং কূপ থেকে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। সেখান থেকে দৈনিক ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে।

এই কূপ খনন প্রকল্পের পরিচালক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া বলেন, “হরিপুর গ্যাসফিল্ডে মোট নয়টি গ্যাস কূপ রয়েছে। এবার ১০নং কূপ থেকে উত্তোলন শুরু হবে।”

১৯৫৫ সালে সিলেটের হরিপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর আবিষ্কার হতে থাকে একের পর এক গ্যাসক্ষেত্র।

বর্তমানে এসজিএফএল-এর আওতায় মোট ৫টি গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে; এগুলো হলো- হরিপুর গ্যাসফিল্ড, রশিদপুর গ্যাসফিল্ড, ছাতক গ্যাসফিল্ড, কৈলাশটিলা গ্যাসফিল্ড ও বিয়ানীবাজার গ্যাসফিল্ড।

এরমধ্যে ছাতক গ্যাসফিল্ড পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। বাকিগুলোর মধ্যে ১৪টি কূপ থেকে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ১০৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে।

জানা যায়, জ্বালানি সংকট নিরসনে গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে দেশের ৪৬টি কূপ অনুসন্ধান, খনন ও পুনঃখননের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। ২০২৫ সালের মধ্যে এসব খনন কাজ শেষ হওয়ার কথা। এতে ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এসজিএফএল-এর আওতাধীন ১৪টি কূপ খনন ও পুনঃখননের কাজ চলছে। সিলেটের ১৪ কূপের মধ্যে তিনটির খনন কাজ থেকে গত বছর থেকে উৎপাদন শুরু হয়। চলতি মাসে কৈলাশটিলার ২ নং কুপ থেকে উত্তোলন শুরু হয়। এবার আরও একটি কূপ উৎপাদন শুরুর অপেক্ষায় আছে।

এর আগে, গত বছর সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের আওতাধীন সিলেট-৮, কৈলাশটিলা-৭ ও বিয়ানীবাজার-১ নামে তিনটি পরিত্যক্ত কূপ পুনঃখনন করা হয়। এসব কূপ থেকে দৈনিক ১৬ থেকে ১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করা হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: গ্যাস, সিলেট
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন