সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল শুরু, ফিরবে আটকা পড়া পর্যটকরা

fec-image

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি দুর্বল হওয়ায় সমুদ্রবন্দরগুলো থেকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত প্রত্যাহারের পর কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন দ্বীপ নৌরুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল শুরু হয়েছে।

সোমবার (৩ অক্টোবর) সকালে ‘এমভি বার আউলিয়া’ নামে একটি জাহাজ টেকনাফের দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে সাড়ে তিন শতাধিক পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা হয়। দ্বীপে ভ্রমণে গিয়ে দুইদিন ধরে আটকে পড়া পর্যটকেরা এই জাহাজেই ফিরবেন।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তর গতকাল রবিবার বিকেলের দিকে সতর্ক সঙ্কেত প্রত্যাহার করেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সোমবার সকাল থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন দ্বীপ নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজসহ সব ধরনের নৌযান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর এমভি বার আউলিয়া নামে একটি জাহাজ দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে সকাল পৌনে ১০টার দিকে সাড়ে তিন শতাধিক পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপের উদ্দেশে রওনা হয়েছে।

এর আগে গত শুক্রবার বিকেল থেকে আবহাওয়ার ৩ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত থাকায় টেকনাফ-সেন্টমার্টিন দ্বীপ নৌরুটে নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয় উপজেলা প্রশাসন। এতে সেন্টমার্টিনদ্বীপে ভ্রমণে যাওয়া তিন শতাধিক পর্যটক আটকা পড়েছিলেন।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) টেকনাফের ট্রাফিক সুপারভাইজার মো. জহির উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, আজ সকাল থেকে জাহাজ ও ট্রলার চলাচল আবার শুরু হয়েছে। সেন্ট মার্টিনে আটকে পড়া পর্যটকদের ফিরিয়ে আনার জন্য জাহাজটিকে সেন্টমার্টিনে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সতর্ক সঙ্কেতের কারণে সেন্টমার্টিনে আটকে পড়া দেড় শতাধিক পর্যটক জাহাজ ও ট্রলারে করে দ্বীপের ফিরে যাচ্ছেন।

সোমবার সকালে দমদমিয়া জেটিঘাটে সরেজমিনে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সেন্টমার্টিন ভ্রমণের জন্য আসা পর্যটকেরা ঘাটের টিকিট কাউন্টারের সামনে ভিড় করেছেন। অনেকে টিকেট সংগ্রহ করে জাহাজে নির্দিষ্ট আসনে বসেন। ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিআইডব্লিউটিএ ও জাহাজ কর্তৃপক্ষের লোকজনকে তৎপর থাকতে দেখা যায়। সকাল পৌনে ১০টার দিকে জাহাজটি সাইরেন বাজিয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা হয়। পর্যটকদের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান ট্যুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক সাইফুল ইসলাম খান।

রাজধানীর অন্যতম সেরা সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভ্রমণে আসা পাঁচ শিক্ষার্থী বলেন, তাঁরা কক্সবাজার বেড়াতে এসেছিলেন। এর মধ্যে আবহাওয়ার সতর্ক সঙ্কেত প্রত্যাহারের বিষয়টি জানতে পেরে সেন্টমার্টিন যাওয়ার জন্য টেকনাফে আসেন। অনেক কষ্ট করে টিকেট সংগ্রহ করলেন। তবে টিকিটের দাম অনেক চড়া। সরকারিভাবে টিকিটের মূল্য নির্ধারণ না করায় কর্তৃপক্ষ ইচ্ছেমতো দাম নিচ্ছে। গত বছর জনপ্রতি ৬০০ টাকায় তাঁরা সেন্ট মার্টিন ঘুরে গেছেন। অথচ এখন সেই টিকিটের দাম রাখা হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ টাকা করে।

পরিবারের আট সদস্য নিয়ে সিলেট থেকে বেড়াতে এসেছেন মুফিজুর রহমান। তিনি বলেন, কক্সবাজার এসে জানতে পারেন, আজ থেকে পুনরায় সেন্টমার্টিন যাওয়া যাবে। তাই দেরি না করে টিকিট সংগ্রহ করে জাহাজে উঠছেন।

পর্যটকবাহী জাহাজ এমভি বার আউলিয়ার টেকনাফের ব্যবস্থাপক মাহবুব বলেন, জাহাজটির ধারণক্ষমতা ৮৫০ জনের। ৩ নম্বর সতর্ক সঙ্কেতের মধ্যেও এটি চলাচল করার মতো পরিস্থিতি রয়েছে। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার সেন্টমার্টিনে বেড়াতে গিয়ে কিছুসংখ্যক পর্যটক আটকে পড়েন। আজ বেলা তিনটার দিকে ফেরার সময় তাঁদের নিয়ে আসা হবে। এদিকে নতুন করে আজও সাড়ে তিন শতাধিক পর্যটক সেন্টমার্টিন দ্বীপে ভ্রমণে যান।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: জাহাজ, পর্যটক, সেন্টমার্টিন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন