১৪ মে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে অর্ধদিবস অবরোধের ডাক দিয়েছে পিসিপি

OLYMPUS DIGITAL CAMERA

আলমগীর মানিক,রাঙামাটি:

দলীয় নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালিয়ে আহত করার প্রতিবাদে আগামী ১৪ মে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি এই দুই পার্বত্য জেলায় অর্ধদিবস সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচীর ডাক দিয়েছে ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ।

রবিবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক উমেশ চাকমা স্বাক্ষরিত প্রেস বার্তায় জানানো হয়, শনিবার রাত ১২.৩০টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্তু লারমার পালিত দুই নাম্বারী নামধারী সন্ত্রাসী কর্তৃক পিসিপি’র নেতা-কর্মীদের উপর হামলার প্রতিবাদে রবিবার দুপুর ১.০০টায় বৃহত্তর পার্বত্য পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) এর উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ হামলার প্রতিবাদে ও হামলাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আগামী ১৪ মে মঙ্গলবার খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলায় অর্ধ দিবস সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি উমেশ চাকমার সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুমেন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি নিকোলাস চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মিশুক চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ(এম এন লারমা) জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্ত চাকমা এবং পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি সরকারী কলেজ শাখার সভাপতি সুভাষ চাকমা। 

সমাবেশে পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সভাপতি সুমেন চাকমা বলেন, গতরাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্তু লারমার লেলিয়ে দেয়া দুই নাম্বারী নামধারী সন্ত্রাসী কর্তৃক পিসিপি নেতা-কর্মীদের উপর যে হামলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ পূর্বপরিকল্পিত। এসময় পিসিপি’র ৬ জন নেতা-কর্মী সংগঠনের দুই যুগপূর্তি উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসে পোষ্টারিং-এ ব্যস্ত ছিলেন। সন্ত্রাসীদের হামলায় সিমন চাকমা, তরুন চাকমা, রুবেল চাকমা, সুকান্ত চাকমা মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে গুরুতর আহত হন। এছাড়া আরো দু’জন শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত পান। অনিল মারমার নেতৃত্বে ১০-১২জন দুই নাম্বারী নামধারী সন্ত্রাসী ক্যাম্পাসের পুলিশ বক্সের সামনে এ হামলা চালায়। হামলার সময় সন্ত্রাসীদের সাথে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীও ছিলেন। এ সময় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। আহতরা বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সুমেন চাকমা আরো বলেন উক্ত ঘটনা পার্বত্য চট্টগ্রামের সংঘাতকে আরো উস্কানি দেবে। সন্তু লারমার লেলিয়ে দেয়া দুই নাম্বারী নামধারী সন্ত্রাসীরা পিসিপি নেতাকর্মীদের সাথে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা  করতে না পেরে ছাত্রলীগ এবং প্রশাসনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় পেশীশক্তি প্রয়োগ করছে। সমাবেশে অন্যান্য বক্তারা হুঁশিয়ারী উচ্চারণকরে বলেন, যদি হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেয়া না হয় তাহলে আগামীতে পার্বত্য চট্টগ্রামের যে কোন পরিস্থিতির জন্য প্রশাসন এবং সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএসকে দায়ী থাকতে হবে। এছাড়া রাঙামাটির জেলার নানিয়ারচর এবং খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা ও লক্ষীছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশ থেকে উক্ত হামলার প্রতিবাদে ও হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্ত শাস্তি দাবিতে আগামী ১৪ মে রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় অর্ধ দিবস সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুমেন চাকমা এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

জেলা সদর ছাড়াও  সকল উপজেলায় এ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হবে। অবরোধ সকাল- ৬টায় শুরু হয়ে দুপুর ১২টায় শেষ হবে। ফায়ার সার্ভিস, এ্যাম্বুলেন্স ও রোগী বহনকারী গাড়ি, পত্রিকা ও সাংবাদিক বহনকারী গাড়ি সড়ক অবরোধের আওতামুক্ত থাকবে। সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসুচি সফল করার জন্য সকল যানবাহন মালিক সমিতি, শ্রমিক সংগঠন সহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন