পাহাড় ধসের শঙ্কা কাটেনি উখিয়ায়
পাহাড় ধসের শঙ্কা নিয়ে নির্ঘূম রাত কাটাচ্ছে উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় বসবাসরত ২ হাজারও পরিবার। আষাঢ়ের ভারী বর্ষণে ও পাহাড়ি ঢলে ভেসে গেছে আনজুমানপাড়া নাফ নদীসংলগ্ন প্রায় ২ হাজার একর চিংড়ি ঘের।
বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় পালংখালী এলাকার ৭টি গ্রামের প্রায় শতাধিক বসতবাড়ি তলিয়ে গেছে।
পানি নিষ্কাশনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, যেখানে সেখানে দোকানপাট, স্থাপনা করার ফলে কক্সবাজার টেকনাফ সড়কের বালুখালী ও থাইংখালী এলকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পালংখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এম.এ মনজুরসহ একাধিক ক্ষতিগ্রস্ত চিংড়ি চাষি জানান, গত ৭ দিনের টানা বর্ষণে আনজুমানপাড়া এলাকায় ২ হাজার একর চিংড়ি ঘের তলিয়ে গেছে।
চিংড়ি চাষি আলতাজ আহম্মদ, নুরুল আমিন, জামাল উদ্দিন ও হাফেজ কলিম উল্যাহ জানান, এলাকার প্রায় ৫ হাজারের অধিক পরিবার চিংড়ি ঘেরে মাছ উৎপাদনের উপর ভরসা করে জীবন অতিবাহিত করছে। নাফ নদীর বেড়ি বাঁধটির নাজুক অবস্থার কারণে সীমান্তের পাহাড়ি ঢল ও নাফ নদীর জোয়ারের পানির তোড়ে বছর বছর চিংড়ি চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তারা জানান, বেড়ি বাঁধটি নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য তারা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও কোন কাজ হয়নি। ফলে পালংখালী এলাকায় লবণ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিন থাইংখালী এলাকা ঘুরে দেখা যায় কবরস্থান সংলগ্ন রাস্তার পূর্ব পাশে পানি চলাচলের পথ বন্ধ করে দোকান নির্মাণ করায় সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে এ সড়কে প্রায় সময় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
এদিকে থাইংখালী আছারপাড়া এলাকায় প্রায় শতাধিক বসতবাড়ি, পানিতে তলিয়ে গেছে বলে সাবেক ইউপি সদস্য মো. হোসেন মেম্বার জানিয়েছেন। এছাড়া গৌজঘোনা, তাজনিমার খোলা ঘোনারপাড়া বালুখালী কাস্টম এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ার কারণে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এসব এলাকায় নির্বিচারে পাহাড় কাটার কারণে পাহাড় ধসের আশঙ্কা করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা হওয়ার কারণে তার ইউনিয়নে প্রায় শতাধিক পাহাড় কাটা হয়েছে। এসব পাহাড় কাটা মাটি পানির সাথে খাল-বিল নদী নালায় চলে আসার কারণে একদিকে যেমন চাষাবাদ বিঘ্নিত হচ্ছে।
অন্যদিকে পানি নিষ্কাশনে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় গোটা পালংখালী এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এসব এলাকার পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাসরত লোকজন পাহাড় ধসের আশঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে বলে তিনি জানান।