মানিকছড়িতে ছাত্রাবাস নির্মাণ কাজ বন্ধে ভোগান্তি
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মানিকছড়ি উপজেলার তিনটহরী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪ তলা বিশিষ্ট একটি ছাত্রাবাস নির্মাণে প্রকল্প গ্রহন করে। দুই দফায় ৫৫ লাখ টাকায় একতলার ছাদ, ওয়াল করার পর অর্থ সংকটে কাজ বন্ধ করে দেন ঠিকাদার। ফলে গত ৩ বছরেও সরকারের উন্নয়নের সুবিধা ভোগের সুযোগ পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয় ও ঠিকাদার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার তিনটহরী উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুন্নত ও দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীদের আবাসিক সুবিধায় পড়ালেখা নিশ্চিত করতে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কংজুরী চৌধুরী ও জেলা পরিষদ সদস্য এম.এ. জব্বার বিদ্যালয়ে ৪ তলা বিশিষ্ট একটি ছাত্রাবাস নির্মাণে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রকল্প গ্রহন করেন। আর এই প্রকল্পে ঠিকাদার নির্বাচিত হন মের্সাস মানু এন্টারপ্রাইজ। ঠিকাদার যথা সময়ে নির্মাণ কাজ শুরু করে দুই অর্থবছরে ৫৫ লাখ টাকা বরাদ্দে ৪৩৬৮ বর্গফুট বিশিষ্ট ভবনের একতলার ছাদ, ওয়াল নির্মাণ শেষে কাজ বন্ধ রাখেন। ফলে গত ৩ বছরেও প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করতে পারেনি শিক্ষার্থীরা।
লক্ষীছড়ি উপজেলার খিরামের শিক্ষার্থী অংশেপ্রু মারমা বলেন, আমার বাবা- মা গরীব, আর খিরামে মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই। এখানে ভর্তি হয়েও থাকার জায়গা পাচ্ছি না। মহামুনি একটি পাড়ায় ১০ থেকে ১২ জন ছেলে- মেয়ে ঘর ভাড়া করে থাকি। ছাত্রাবাসটি হলে আমরা খুশি হতাম। দূরের সবাই থাকতে পারত।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আতিউল ইসলাম বলেন, উপজেলার ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানে রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালি, খাগড়াছড়ির দুর্গম লক্ষীছড়ি উপজেলার খিরাম, দুল্যাতলীসহ উপজেলার দুর্গম জনপদের শিক্ষার্থীরা বাসাভাড়া নিয়ে পড়ালেখা চালাতে কষ্ট হয়। দরিদ্র ও দূরবর্তী পরিবারের ছেলে-মেয়েদের সুবিধার্থে সাবেক চেয়ারম্যান কংজুরী চৌধুরী ও সদস্য এম. এ. জব্বারের আন্তরিকতায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ছাত্রাবাস নির্মাণে বরাদ্দ পেলেও অর্থ সংকটে নির্মাণকাজ ঝুলে আছে বলে একাধিক সূত্র বিষয়টি প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে জানালেও ঠিকাদার এখনো কাজের বিষয়ে আমাকে কিছুই বলেনি।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী যোগ্য মারমা বলেন, ৪ তলা বিশিষ্ট ছাত্রাবাস নির্মাণে দুই দফায় ৫৫ লাখ টাকা পেয়েছি। এই টাকা দিয়ে একতলার ছাদ ও ওয়ালের (কক্ষ) কাজ শেষ করলেও রং, দরজা, জানালা শেষ করতে পারিনি। ফলে কাজ বন্ধ রেখেছি। বরাদ্দ সাপেক্ষে কাজ শুরু করা হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা পরিষদ সদস্য এম.এ.জব্বার বলেন, জেলা পরিষদের অর্থায়নে বড় প্রকল্পগুলোতে এক সাথে পুরো অর্থ ছাড় করলে ছোট প্রকল্প বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্থ হয়। তাই বড় প্রকল্পে প্রতি অর্থবছরে অর্থ ছাড় দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। এই অর্থবছরে আবারও ছাত্রাবাসে বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব করা হবে।