‘ওয়াগনার বিদ্রোহ পুতিনের পতন শুরু হওয়ারই ইঙ্গিত’
ভাড়াটে যোদ্ধাদল ওয়াগনারের বিদ্রোহকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পতনের শুরু হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন সাবেক রুশ প্রধানমন্ত্রী মিখাইল কাসিয়ানভ। পুতিনের অধীনে ২০০০ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। বরখাস্ত হওয়ার পর থেকে পুতিনের প্রধান সমালোচকে পরিণত হন এই রাজনীতিক।
শনিবার (২৬ জুন) মস্কোমুখী অভিযান বন্ধ করে বেলারুশে নির্বাসনে যেতে রাজি হন বিদ্রোহী ভাড়াটে যোদ্ধাদল ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন।
প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী তাঁর বাহিনীকে ক্ষমা করা হয়েছে। প্রিগোজিনের গন্তব্য প্রসঙ্গে মিখাইল কাসনিয়াভ বলেন, ‘আমার মনে হয়, প্রথমে তিনি বেলারুশে যাবেন। সেখান থেকে আফ্রিকা এবং পরে কোনো বনজঙ্গলে অবস্থান করবেন।’ কাসনিয়াভ আরো বলেন, ‘পুতিন তাঁকে (প্রিগোজিন) ক্ষমা করতে পারবেন না।
প্রিগোজিন পুতিনের স্থিতিশীলতা ধ্বংস করে দিয়েছেন। এটা পুতিনের পতনের শুরু। তিনি এখন বড় ধরনের সমস্যায় আছেন।’ ওয়াগনারের বিদ্রোহ প্রসঙ্গে সিএনএনের সাবেক মস্কো ব্যুরো প্রধান জিল ডগার্টি বলেন, ‘পুতিন বিশ্বাসঘাতকদের ক্ষমা করেন না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ওয়াগনারের বিদ্রোহ পুতিনের শাসনের দুর্বলতা ফাঁস করে দিয়েছে। ওয়াগনারের বাহিনীর মস্কো যাত্রা বন্ধ হওয়া সত্ত্বেও গতকালও মস্কোতে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ব্যবস্থা বহাল রাখা হয়।
প্রিগোজিন কোথায় অনিশ্চিত
ওয়াগনারের প্রধান প্রিগোজিনের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সবশেষ গত শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় তাঁকে গাড়িতে চড়ে প্রথমে দখল করা রোস্তভ অন ডন শহর ছেড়ে যেতে দেখা যায়। মস্কো জানিয়েছে, এরই মধ্যে রোস্তভের সেনা সদর দপ্তর, ভরোনেজ ও লিপেত্স্ক ত্যাগ করেছে ওয়াগনার বাহিনী।
শাসনব্যবস্থায় সংকট
রুশ সরকারের শাসনব্যবস্থায় সংকটের কথা স্বীকার করেছেন পুতিনের সাবেক উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সের্গেই মারকভ। তাঁর মতে, এই বিদ্রোহ রুশ সরকারের সংকটের বিষয়টি উন্মোচন করেছে। মার্কিন গোয়েন্দারা আঁচ পেয়েছিল : এদিকে ওয়াগনারের অসন্তুষ্টির প্রেক্ষাপটে তাদের বিদ্রোহের বিষয়টি আগে থেকেই আঁচ করতে পেরেছিল যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেছেন, ‘বিদ্রোহ করে পুতিনের কর্তৃত্বকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করেছে ওয়াগনার। এটা পুতিনের কর্তৃত্বে স্পষ্ট ফাটল।’
এদিকে ওয়াগনার বিদ্রোহের পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট অস্থিরতা সত্ত্বেও রাশিয়াকে সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছে দেশটির মিত্র চীন ও উত্তর কোরিয়া।
সূত্র : বিবিসি, এএফপি