কুতুবদিয়ায় পরিবহণ সংকটে শিক্ষার্থীরা
কুতুবদিয়া প্রতিনিধি:
কুতুবদিয়ায় পরিবহণ সংকটের বিড়ম্বনায় প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীরা। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ, প্রাইভেট ক্লাসসহ নিয়মিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতে ভোগান্তির শেষ নেই। উপজেলার প্রধান সড়কে যাত্রীবাহী জিপ চলাচল করলেও তাতে আসন সংখ্যা নগণ্য। দ্বীপের প্রধান উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বড়ঘোপ ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা, কুতুবদিয়া সরকারি কলেজ, কুতুবদিয়া মহিলা কলেজ, কুতুবদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, কুতুবদিয়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মাস্টার তালেব উল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজসহ মানসম্মত সরকারি প্রাথমিক ও কেজি স্কুলগুলো উপজেলা সদরে স্থাপিত। যে কারণে ভাল প্রতিষ্ঠানে পড়া-লেখা করতে দ্বীপের আনাচে-কানাচে থেকে শত শত শিক্ষার্থীরা ছুটে আসে।
অপর দিকে সদর থেকে ৭/৮ কিলোমিটার অদূরে ঐতিহ্যবাহী ধূরুং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ, ধূরুং ছমদিয়া আলীম মাদ্রাসাতেও দূর-দুরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা এসে থাকে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিকটবর্তী ছাত্র-ছাত্রী ছাড়াও যানবাহনে যাতায়াত করতে হয় এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম হলেও দু’হাজারের অধিক। ক্লাস সময়, প্রাইভেট, কোচিংসহ পরীক্ষার সময় একই সময়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া ও ছুটি হওয়ায় সাধারণ যাত্রী ছাড়াও শিক্ষার্থীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যায় উপজেলা গেইট জিপ স্টেশন ও ধুরুংবাজার জীপ স্টেশনে।
জিপ মালিক সমিতি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সমন্বয়ে ২০ আসনের যাত্রীবাহী জিপে ৬টি আসন শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। যা শিক্ষার্থীর তুলনায় অতি নগন্য। এ ৬ আসনে ছাত্রীরা বসলে ছাত্রদের বসার সুযোগ হয়না কখনো। ধূরুং থেকে যাতায়াতকারী কুতুবদিয়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারজি বলেন, শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি ও জিপে আসনের সংখ্যা কম থাকায় দু’স্টেশনেই অন্তত এক ঘন্টা আগে এসে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বিশেষ করে বিদ্যালয় ছুটির পর এ ভোগান্তি অসহনীয়। কুতুবদিয়া কলেজের একাধিক ছাত্রী একই কথা জানান। শিক্ষার্থী ভাড়া হাফ হলেও অনেকে পূর্ণ যাত্রী ভাড়া দিয়েও যাতায়াত করে থাকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাদ্রাসার অনেক শিক্ষার্থীই এ ভোগান্তির কথা জানান। যার দরুণ আধা কিংবা এক ঘন্টা পর্যন্ত গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. খোরশেদ আলম বলেন, পরিবহণ বিড়ম্বনায় শিক্ষাথীদের বিশেষ করে ছাত্রীদের ভোগান্তি বেশি। এটি লাগবে স্কুল –কলেজ, মাদ্রাসায় তাদের ছাত্র সংগঠনের মাধ্যমে প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেয়ার পদক্ষেপ নেবেন বলে তিনি জানান। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একই সাথে ছুটি হওয়ায় অনেক সময় স্টেশনে ছাত্রীদের জ্যাম লেগে থাকার কথা স্বীকার করে জিপ মালিক সমিতির সভাপতি এডভোকেট তশরীফুল ইসলাম এবং জিপ শ্রমিক সমিতির সভাপতি নুরুল হুদা বলেন, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিলে শিক্ষার্থীদের সাময়িক ভোগান্তি অবসানে প্রয়োজনীয় সারা দেবেন তারা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রজব আলী বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটির পর অনেক সময়ই স্টেশনে এ ভোগান্তি দেখা যায়। প্রধান প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো মালিক সমতির সাথে একমত হয়ে অন্তত গাড়ির তেল খরচ বহণ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলে ভোগান্তি অনেকটা কমে যাবে বলে তিনি মনে করেন।
কুতুবদিয়া সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ নুরুচ্ছাফা বলেন, বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একই সাথে ছুটি হওয়ায় স্টেশনে জিপে প্রয়োজনীয় আসন না পাওয়ায় ছাত্রীদের ভোগান্তি হয় প্রতিনিয়ত। এ ব্যাপারে তিনি প্রশাসন ও জিপ মালিক সমিতির সাথে বৈঠক করে শিক্ষার্থীদের পরিবহণ সুবিধার লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান।