মহেশখালীতে উজাড় হচ্ছে বন: অনুমোদন রয়েছে ৫টির চলছে ৩১টি স-মিল
মহেশখালীর পরিবেশ ধ্বংসকারী সমিলের সংখ্যা ৩১টি, তবে সরকারীভাবে অনুমোদন দিয়েছে ৫টি, বাকী ২৬টি স-মিল কিভাবে চালছে তার কোন উত্তর নেই সংশ্লিষ্টদের কাছে।
সুত্রে জানায়, প্রাকৃতিক পরিবেশ যে অবস্থায় থাকা দরকার সে অবস্থায় রাখার জন্য, এক কথায় পরিবেশ রক্ষার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানাচ্ছে বারবার। নানা উপায়ে পরিবেশ দূষণের ফলে বাংলাদেশের জীববৈচিত্র আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। যে কারণে পরিবেশের বিপর্যয় তৈরি হচ্ছে। বিশ্ব পরিবেশ দিবসে সরকারের প্রতি দাবি তুলে ধরেন প্রতি বছর ৬ জুন। তবে কাজের বেলায় কিছুই হয়না, কে শোনে কার কথা।
পরিবেশবিদরা জানান, সারা পৃথিবী জুড়েই পরিবেশ ধ্বংসের মহোৎসব চলছে। পৃথিবীর ফুসফুস আমাজান বন ধ্বংস করা হচ্ছে। প্রাণের সবচেয়ে বেশি অবস্থান সাগর আজ দূষিত হচ্ছে। যে কারণে আজ আমরা অক্সিজেন সংকটে ভুগছি। সাম্প্রতিক ভারতের দিকে তাকালে তার বাস্তব প্রমাণ পাওয়া যায়।
দেশের পরিবেশবাদী সংগঠন এনভায়রনমেন্টাল কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি মোস্তফা আনোয়ার চৌধুরী বলেন, ‘আজ আমরা যে জলোচ্ছ্বাসসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হচ্ছি- এ জন্য আমরাই দায়ী। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন, স্থল ও সাগরে যে দুর্যোগ সৃষ্টি হয়, তা মূলতঃ আমাদের হাতের কামাই। সুতরাং আমাদের হাত যদি পরিবেশ ধ্বংসের ক্ষেত্রে সংযত না হয় ভবিষ্যতে আরও দুর্যোগ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে, বাংলাদেশের জীববৈচিত্র ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। জীবন-যাপনে খাদ্যসহ প্রায় সবকিছুতেই প্রাকৃতিক পরিবেশের পরিবর্তে কৃত্রিমতায় অভ্যস্ত হওয়ায় মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শরীরের শক্তি কমে যাচ্ছে। অক্সিজেন স্বল্পতায় আমাদের ভূগতে হচ্ছে। পরিবেশ যে অবস্থায় থাকা দরকার সে অবস্থায় রাখার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সম্পৃক্ত করতে হবে। অবৈধভাবে যে হারে মহেশখালীতে সমিল গড়ে উঠেছে সেইসব স-মিলে রাতের আধারে সরকারী বনের গাছ চেরাই করা হচ্ছে অথচ বন বিভাগ কিছুৃই জানেনা।
মহেশখালী বন বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, মহেশখালী উপজেলার ৫টি সমিলের লাইন্সেস রয়েছে তারা হলেন, আশেক উল্লাহ সমিল, মফিজ সমিল, শুক্কুর সমিল, এনায়েত সমিল, জয়নাল সমিল। বাকী ২৬টি সমিলের মধ্যে ১৬টির বিরুদ্ধে বন বিভাগের মামলা রয়েছে । শাপলাপুর, কালারমারছড়া, হোয়ানক, পৌরসভা, কুতুবজুম, ছোট মহেশখালী, মাতারবাড়িতে যে সমস্ত অবৈধ স-মিল রয়েছে তাদের নাম প্রকাশ করছে বন বিভাগ।
মাতারবাড়িতে সফি আলম ও আনছারুল করিম সমিল, শাপলাপুরে মো. আলীর একটি, কালারমারছড়ায় উত্তর নলবিলায় মো. নাছির, দক্ষিন ঝাপুয়া আকিব বীন জাকের, মোহাম্মদ শাহ ঘোনায় হোছন বহদ্দার, এরফান, আলাউদ্দিন, মো. জালাল মনু, মোসাদ্দেক ফারুকী, মিজ্জির পাড়ায় জালাল উদ্দিন মনু, ইউনুছখালীতে আল্উাদ্দিন, উত্তর ঝাপুয়া আবু বক্কর, আব্দু রশিদ কালু নয়া পাড়া, আব্দু সালাম নোনাছড়িতে। হোয়ানকে সফিউল আলম, এনায়েত উল্লাহ,ছোট মহেশখালীতে সিরাজুল ইসলাম, জালাল হোসেন,কুতুবজুমে নুরুল হক, আবুল কাসেম, মৌ. ফরিদ, বড় মহেশখালীতে মৌ. মোজাফ্ফর আহমদ, আবদু সালাম ও আবু তাহের। এসব স-মিলের বিরুদ্ধে মাঝে মাঝে বনবিভাগ অভিযান চালিয়ে দু একটি সিলগালা করে কিছুদিন পর সরকারী দলের প্রভাব কাটিয়ে পুনরায় চালু হয়।
মহেশখালী বন কর্মকর্তা অভিজিত বড়ুয়া জানান, বাংলাদেশের কোন স্থানে করাত বা স-মিল করতে হলে সরকারী লিখিত অনুমোদন এবং লাইন্সেস করতে হবে এর পাশাপাশি সরকারী বন এলাকার ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোন সমিল স্থাপন করা যাবেনা, অবৈধ সমিলের বিষয়ে তিনি বলেন, এসব লাইন্সেস বিহীন সমিলের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান শুরু হবে বলে জানান।