আটকা পড়া ২০১ পর্যটক ঝুঁকি নিয়ে ফিরেছেন

টেকনাফ প্রতিনিধি:

সেন্টমার্টিনে আটকে পড়া পর্যটকদের মধ্যে ২০১জন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে করে টেকনাফে পৌঁছেছেন। রোববার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা পাঁচটি ট্রলারে করে টেকনাফে আসেন।

তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ট্রলার চালানোর দায়ে ট্রলারমালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে গতকাল শনিবার দিনভর উপকূলীয় এলাকায় ভারী বৃষ্টি হয়। সাগর উত্তাল ছিল। এ কারণে কক্সবাজারে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয় এবং সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে সেন্টমার্টিন দ্বীপে বেড়াতে গিয়ে সেখানে প্রায় ৬০০ পর্যটক আটকা পড়েন। তবে আজ সকাল থেকে বৃষ্টি নেই। সেখানে রোদও দেখা দিয়েছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি এখন দুর্বল হলে লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি এখন কক্সবাজার থেকে ৬৭৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। তবে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে।

টেকনাফ সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সৈয়দ আলম  বলেন, টেকনাফ থেকে কোনো জাহাজ সেন্টমার্টিনে আসছে না। খবর পেয়ে পর্যটকেরা সকাল সাড়ে নয়টার পর সেন্ট মার্টিনের জেটিঘাটে ভিড় করেন।

এ সময় পাঁচটি  ট্রলারে ২৪৪জন যাত্রী ওঠানো হয়। এই পর্যটকদের কাছ থেকে জনপ্রতি ২০০টাকা ভাড়া নেওয়া হয়। সাগরে মাঝপথে ট্রলারগুলো উত্তাল ঢেউয়ের কবলে পড়লেও কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ছাড়াই ১২টা ১০মিনিটের দিকে তিনটি ট্রলার টেকনাফ কায়ুকখালিয়া ঘাটে পৌঁছায়। ২০ মিনিটের পর বাকি দুটি পৌঁছায়।

সৈয়দ আলম জানান, ট্রলারগুলোয় ২০১জন পর্যটক ও ৪৩জন স্থানীয় বাসিন্দা ছিলেন।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নূর আহম্মদ বলেন, সাগরে সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছ। কিন্তু সাগর তেমন উত্তাল নয়। সকাল থেকে বৃষ্টিও নেই। অন্য সময় এ ধরনের পরিস্থিতিতে ওই রুটে ট্রলার চলাচল করে। তাই পর্যটকেরা যেতে চাওয়ায় তাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, সাগরে সংকেত রয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলার না ছাড়ার জন্য ট্রলার মালিক সমিতিকে নির্দেশও করা হয়। যারা নিয়ম ভেঙেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু সকালে স্থানীয় চেয়ারম্যান ফোন করে বলেন, সাগর তেমন উত্তাল নয়। রোদ উঠেছে।

টেকনাফে ফিরে আসা চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকার ব্যবসায়ী নূরজ্জামান জানান, গত বৃহস্পতিবার পরিবার নিয়ে বেড়াতে গিয়ে তিনি আটকা পড়েন। অন্যদের ফির আসতে দেখে তিনি ফিরে আসেন। মাঝপথে ঢেউয়ের দুলনিতে তার ছোট সন্তান কয়েকবার বমি করে। তিনি বলেন, এভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আসা ঠিক হয়নি।

রাজশাহীর বাগমারার বাসিন্দা আবদুর রহিম চৌধুরী বলেন, এক সপ্তাহ ধরে তিনি এলাকার বাইরে রয়েছেন। সেন্টমার্টিনে এসে চার দিন ধরে আটকা পড়েছেন। তার পকেটের টাকাও শেষ। এখন বিকাশে টাকা এনে ট্রলার ভাড়া দিয়ে টেকনাফে আসেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন