চীনের পতিতালয়ে ১৫ হাজার ডলারে বিক্রি হচ্ছে মিয়ানমারের কিশোরীরা
নিউজ ডেস্ক:
রোহিঙ্গা ইস্যুতে গেল কয়েকবছর সারা বিশ্বে মিয়ানমারের নাম আলোচনায় রয়েছে। দেশটির যুদ্ধবিধ্বস্ত ও দারিদ্র্যপীড়িত দু’টি এলাকা থেকে হাজারো নারীকে চীনে পাচার করা হচ্ছে। চীনে নিয়ে তাদের চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে। সেখানেই শেষ নয়, এরপর জোর কারে তাদের বিয়ে দেয়া হচ্ছে, বিয়ে করে সন্তান জন্ম দিতেও বাধ্য করা হচ্ছে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানত সংঘাতকবলিত থানলিন, কাচিন ও শান রাজ্যের নিরীহ নারী ও কিশোরীদের চীনে পাচার করা হয়। অন্যদিকে সেই অর্থে চীন থেকে মিয়ানমারে স্রোতের মতো ঢুকছে অবৈধ অস্ত্রের চালান।
আর এসব কারবারের মূল আখড়ায় পরিণত হয়েছে মিয়ানমার ও চীন সীমান্তবর্তী শহর মিউস বা মুসে। চীনে প্রবেশের জন্য শহরটিকে মিয়ানমারের ‘সদর দরজা’ বলা হয়।
মূলত এ দরজা দিয়েই চীনের শহরগুলোর সঙ্গে মাদক আর নারী পাচারের রমরমা ব্যবসা গড়ে উঠেছে। অন্তত ১০টি সশস্ত্র গোষ্ঠী শান প্রদেশভুক্ত এ শহরটির সব কিছুই নিয়ন্ত্রণ করছে।
সেনাবাহিনীর মদদ ও সমর্থন পেয়েই মূলত সন্ত্রাস ও অপরাধের অভয়ারণ্য গড়ে তুলেছে গোষ্ঠীগুলো। যোদ্ধাদের বেতন দিতে মাদক ও নারী পাচারের মতো জঘন্য অপরাধগুলোই করে থাকে তারা।
এশিয়ার কয়েকটি দেশ থেকে দরিদ্র পরিবারের নারীদের কিনে নিয়ে বিয়ে করা এবং সন্তানের জনক হওয়ার প্রবণতা মূলত চীনের গ্রামাঞ্চলের পুরুষদের মধ্যেই বেশি।
মূলত চরম দারিদ্র্য, সংঘাত ও বাস্তুচ্যুতির কারণে সহজেই পাচারের শিকার হয় মিয়ানমারের নারীরা। সম্প্রতি কাচিন, শান ও রাখাইন রাজ্যে ভয়াবহ সহিংসতা ও সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে ঘরবাড়ি ছেড়ে বনে-জঙ্গলে আশ্রয় নেয় কয়েক লাখ বাসিন্দা। খাদ্য, বস্ত্র ও আশ্রয়হীন এসব মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নেয় গোষ্ঠীগুলো।
চীনের গ্রামাঞ্চলের বিয়েতে আগ্রহী অথচ পাত্রী পান না, এমন পুরুষরা কম বয়সী নারীই বেশি পছন্দ করেন। তাই কম বয়সী নারীর কদর বেশি। পাচারের শিকারের নারীদের দাম ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার ডলারের মধ্যে ওঠা-নামা করে বলেও গবেষণাপত্রটিতে বলা হয়েছে। এই দামে কাউকে কিনে নিয়ে সন্তান জন্ম দিয়ে সেই নারীকে আবার অন্য কারও কাছে বিক্রি করে দেন চীনের পুরুষরা।
মিয়ানমারের অনেক নারী চীন থেকে পালিয়ে এসেও রেহাই পান না। এমন নারীর দেখাও তিনি পেয়েছেন, যিনি দু’বার চীন থেকে পালিয়ে এসেছেন। তাতে কোনো লাভ হয়নি। ফেরার পর আবার ধরে নিয়ে বিক্রি করা হয়েছে তাকে।