মহান ইরানি জাতি আমেরিকার কাছে আত্মসমর্পণ করবে না: সর্বোচ্চ নেতা

fec-image

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী আজ (বুধবার) তেহরানে হাজার হাজার শ্রমিকের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের চাপ ও নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য হলো ইরানকে তাদের সামনে নতজানু করা এবং তাদেরকে পুরোপুরি অনুসরণে বাধ্য করা। কিন্তু ইতিহাস-ঐতিহ্যের অধিকারী মহান ইরানি জাতি ও ইসলামি প্রজাতন্ত্র গুণ্ডামি ও বাড়াবাড়ির সামনে নত হবে না এবং নিষেধাজ্ঞাকে সুযোগে পরিণত করে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্মাণ করবে।

‘শ্রম ও শ্রমিক সপ্তাহ’ উপলক্ষে আজ সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে শ্রমিকদের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা বহু বছর ধরে আমেরিকা এবং ইউরোপের কঠোর নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন। তাদের নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য কী? তারা পারমাণবিক অস্ত্র এবং মানবাধিকারের কথা বলছে। এটা মিথ্যাচার। এগুলো কিছু নয়। সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করা হচ্ছে এই অভিযোগে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। তাদের দৃষ্টিতে সন্ত্রাসবাদী কারা? গাজাবাসীরা সন্ত্রাসী!’

সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেন, বস্তুবাদী বিশ্বে শ্রমিককে নাট-বল্টু বা যন্ত্র হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু ইসলাম ধর্মে এমনটি নয়। ইসলাম ধর্ম একজন শ্রমিককে যেভাবে দেখে এবং একজন শ্রমিককে যেভাবে মূল্যায়ন করে তার মূলে রয়েছে কাজকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা।

তিনি আরও বলেন, ‘আমেরিকা ও ইউরোপের মতে গাজার জনগণ সন্ত্রাসী। একটি বদমাইশ, দখলদার ও অবৈধ সরকার মাত্র ছয় মাসে প্রায় ৪০ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে, এর মধ্যে শিশু রয়েছে কয়েক হাজার। এরপরও তারা সন্ত্রাসী নয়, কিন্তু যারা প্রতিনিয়ত বোমা হামলার মধ্যে রয়েছে তারা সন্ত্রাসী! ইহুদিবাদী ইসরাইল (ফিলিস্তিনিদের) ক্ষেত-খামার ও ঘর-বাড়ি বুলডোজার দিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে যাতে উপশহর নির্মাণ করতে পারে। ফিলিস্তিনিরা তাদের কাছ থেকে জোর করে কেড়ে নেওয়া বাড়িটি রক্ষার চেষ্টা করছে। সে কীভাবে সন্ত্রাসী হতে পারে? তারাই সন্ত্রাসী যারা তাদের ওপর বোমাবর্ষণ করছে।’

গাজার জনগণের ওপর ইসরাইলি নৃশংসতার প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, গাজার জনগণের ওপর বোমাবর্ষণ করে ইহুদিবাদী ইসরাইল যে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে, তাতে কোনো লাভ হবে না তাদের।

ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইরানের সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের (পশ্চিমাদের) প্রশ্ন, আমরা (ইরান) কেন ফিলিস্তিনকে সমর্থন করি? আজ সারা বিশ্ব ফিলিস্তিনকে সমর্থন করছে। ইউরোপের রাস্তায়, ওয়াশিংটনে, নিউইয়র্কে মানুষ ফিলিস্তিনের সমর্থনে মিছিল করছে। পশ্চিমা সরকারগুলো প্রতিরোধ ফ্রন্টকে সন্ত্রাসবাদী বলছে। যদিও আমেরিকার রাস্তায় মানুষকে হিজবুল্লাহর পতাকা হাতে দেখা গেছে। বিশ্বের মানুষ তাদের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে। কারণ তারা প্রতিরোধী, তারা জুলুমের বিরুদ্ধে।

বৈঠকের শুরুতেই আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী শ্রমিকদেরকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘আমি আন্তরিকভাবে আমাদের শ্রমিকদেরকে তাদের চেষ্টা, শ্রম ও বিনয়ের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। অবশ্য মৌখিক প্রশংসা যথেষ্ট নয়, তবে এটার প্রয়োজন রয়েছে।’

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ইরান
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন