আগামীর নেতৃত্ব ত্যাগী ও কর্মীবান্ধব চান নেতাকর্মীরা
ছয় বছর পর আজ বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে। সম্মেলনকে ঘিরে জেলা শহরে বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। শহরের রাজারমাঠসহ দলীয় কার্যালয়ে উৎসবমূখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। স্থানীয় রাজারমাঠে সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকালে সম্মেলন অনুষ্ঠানের উদ্ধোধন করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ এমপি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে আছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন-সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি।
জেলার নেতাকর্মীদের মাঝে একক সভাপতি পদ নিয়ে আলোচনার আগ্রহ দেখা না গেলেও সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে নানামুখী আলোচনা চলছে। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হতে ফরম নিয়েছেন- পৌর মেয়র ইসলাম বেবী, জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লক্ষী পদ দাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাহাদুর, অজিত দাশ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাদেক হোসেন চৌধুরী, হাবিবুর রহমান খোকন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আওয়ামীলীগের উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবুল কালাম মুন্না।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সাদেক হোসেন চৌধুরী বলেন- কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য ফরম সংগ্রহ করেছি। দল যদি আমাকে যোগ্য মনে করে এবং আমাকে নির্বাচিত করে তাহলে আগামীতে তৃণমূল পর্যায়ের সাথে মিশে দলকে আরো বেশি গতিশীল করার জন্য কাজ করব।
মোজাম্মল হক বাহাদুর বলেন- সম্প্রীতির বান্দরবান বিনির্মানে পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুরের হাতকে শক্তিশালী করতে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হতে ফরম নিয়েছি। নির্বাচিত হলে দলকে আরো শক্তিশালী করব।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে সর্বশেষ ২০১৩সনে জেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিল হয়েছিল। দলের নিয়মানুসারে তিন বছর কমিটির মেয়াদ থাকলেও নানা কারনে ছয় বছরেও কাউন্সিল হয়নি। তাই এবারের সম্মেলন কাউন্সিলরদের জন্য আনন্দের। এর আগে সাত উপজেলা, ৩৩টি ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার সম্মেলন হয়েছে। সম্মেলনের সফলতা কামনায় গত এক সপ্তাহ যাবত আওয়ামীলীগের সহযোগী সংগঠনগুলো জেলা-উপজেলায় মিছিল, সমাবেশের মাধ্যমে সক্রিয় ছিল। জেলা আওয়ামীলীগের ত্রিবার্ষিক এই সম্মেলনে ১৫৬জন কাউন্সিলর আগামীর নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন। এসব কাউন্সিলর থেকে শুরু করে দলীয় নেতাকর্মীরা আগামীর নেতৃত্ব ত্যাগী ও কর্মীবান্ধব চান।
এদিকে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনা তৈরী হয়েছে। প্রাণচাঞ্চল্যতা ফিরে এসেছে নেতাকর্মীদের মাঝে। কিন্তু কোন পদ্ধতিতে নেতা নির্বাচন করা হবে তা নিয়ে সন্দিহান কাউন্সিলররা। কাউন্সিলে শীর্ষ নেতাদের মাঝে প্যানেল তৈরী না হলেও বিশেষ করে সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থীরা গোপনে নেতাকর্মীদের কাছে দোয়া ও সমর্থন কামনা করছেন। কারন এর আগে দলীয় ফোরামে সম্মেলন শেষ না হওয়া পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতাকর্মীদের সংযত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ক্য শৈ হ্লা। যার কারনে সভাপতি, সম্পাদক পদের জন্য কেউ ঢাক ঢোল পিটাতে পারেনি।
সম্মেলনে কেউ বলছেন পুরনো সভাপতি, সম্পাদক বহাল থাকবেন। আবার কেউ বলছেন সভাপতি ঠিক রেখে সাধারণ সম্পাদক পদে নতুন মুখ দেখা যেতে পারে। এসব প্রশ্নের উত্তর কেন্দ্র ও পার্বত্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের মাধ্যমেই সমাধান হবে আজ।
জানা যায়, কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ তৃণমূলের নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোটের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করলেও ‘বিশেষ ক্ষেত্রে’ সিলেকশন প্রক্রিয়ায়ও নেতা মনোনীত করার রেওয়াজ চালু আছে। বান্দরবানের সম্মেলনে আগামীর নেতৃত্ব ‘ইলেকশন নাকি সিলেকশনে’ নির্ধারণ করা হবে, সে প্রশ্নই এখন সবার আলোচনায়।
সম্মেলনের প্রধান বক্তা হচ্ছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী এনামুল হক শামীম এমপি। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখবেন তথ্য মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি, পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী ব্যরিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উপ-প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমীন, উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়া, দীপংকর তালুকদার এমপি, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক শফিকুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্যশৈহ্লা।