আঞ্চলিক সন্ত্রাসীদের চাঁদার উৎস বন্ধ করায় বিভিন্ন বিজিবি জোন রোষানলে!


ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে ওয়াগ্গাছড়া বিজিবি জোনের উপরও চাড়াও হয় সন্ত্রাসীরা
রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই উপজেলায় অবস্থিত ৪১ বিজিবি ওয়াগ্গা জোন। জোন সংলগ্ন সড়কটিতে রয়েছে বিজিবি চেকপোস্ট। অবৈধ কাঠ ও বাঁশ পাচারের একমাত্র রুট এটিই। কাঠ চোরাকারবারিরা এই রুট দিয়ে নিষিদ্ধ সেগুন, গামারি ও পাহাড়ি বিলুপ্ত গাছগাছালি পাচার করে আঞ্চলিক সংগঠন জেএসএস’কে মোটা অংকে চাঁদা প্রদান করে। এভাবে পাহাড়ের গাছগাছালি কাটার কারণে পরিবেশের ভারসাম্যের ক্ষতি হচ্ছে, যা বন ও পরিবেশ আইনের লঙ্ঘন। ইটভাটার জ্বালানির জন্য পাহাড়ের চারাগাছ ও বৃক্ষরাজি ধ্বংস করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র গুলো বলছে, আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস সন্তু) গ্রুপের অস্ত্র কেনার টাকার প্রধান উৎস হচ্ছে অবৈধ কাঠ ও বাঁশ। স্থানীয় অসাধু কাঠ ও বাঁশ পাচারকারী সিন্ডিকেট জেএসএস’র অস্ত্র ও সাংগঠনিক পরিচালনার চাঁদা প্রদান করে থাকে। অবৈধ কাঠের চাঁদার ভাগবাটোয়ারা বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের নিকট চলে যায় ও এর সাথে বাঙালি অবৈধ ব্যবসায়ীদেরও যোগসাজশ রয়েছে।
সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরী ও মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে বিজিবি অবৈধ কাঠ, মাদক এবং চোরাচালানের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করার কারণে সন্ত্রাসীরা বিজিবি অভিযান বন্ধ করতে কুৎসা রটনা করতে নানান ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এছাড়াও এই চেকপোস্ট সড়কে হুন্ডি ব্যবসায়ীসহ মাদকের চালানও যাচ্ছে নিয়মিত । এসব বন্ধে বিজিবি কঠোর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে চেকপোস্টে নিয়মিত তল্লাশি পরিচালনা করে থাকে। স্থানীয় সাধারণ জনসাধারণ বিজিবি’র এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে। যার কারণে জেএসএস সন্ত্রাসীরা দীর্ঘদিন থেকে বিজিবির উপর ক্ষিপ্ত। তারই বহিঃপ্রকাশ হিসেবে জেএসএস সমর্থিত কিছু উগ্রবাদীদের রোষানলে পড়ে।
স্থানীয়রা জানায়, প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে ফানুস বাতি উড়ানোর বিষয়ে সৃষ্ট ইস্যুকে কেন্দ্র করে জেএসএস সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ইন্ধনে উগ্রবাদীরা বিজিবি ক্যাম্পের দিকে আসছিল আর আশেপাশে বাঙালি-উপজাতিদের শন, বাঁশ ও কাঠের তৈরি বাসস্থানের উপরে ফানুস বাতিগুলো পতিত হচ্ছিল।ইতঃপূর্বেও উপরোক্ত ফানুস সাধারণ বাঙালি-পাহাড়িদের বাসস্থানের উপরে পতিত হয়ে আগুনে সূত্রপাত হয়েছিল।
তাই বিজিবি কর্তৃক সেদিন তাদেরকে বিনয়ের সাথে বারবার বারণ করা হচ্ছিল এগুলো থেকে বিরত থাকার জন্য। কিন্তু জেএসএস’র হিল উইমেন ফেডারেশন ও পিসিপি ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে বিজিবির উপর চড়াও হয় এবং বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা চালায়। তার বাস্তব প্রমাণ মিলে তাদের দ্বারা পরিকল্পিত ভিডিওটি ধারণ করে ছড়িয়ে দেয়ার অপকৌশল দেখে। তারা অবৈধভাবে নিষিদ্ধ কাঠ পাচার করতে ব্যর্থ হয়ে বিজিবি’র ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপপ্রচেষ্টা হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চরম মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছে। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে সকল নিরাপত্তা বাহিনী দ্বারা চোরাকারবারি ও মাদক চোরাচালান কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।
এর আগে খাগড়াছড়ি পানছড়িতে বিজিবি হুন্ডি এক ব্যবসায়ীকে আটক ইস্যুতে বিজিবি’র উপর উপজাতি সন্ত্রাসী সমর্থিত নারী সংগঠন হামলা করে। তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর চেষ্টা করে ওয়াগ্গা বিজিবি’র উপরও।