উখিয়ায় যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের প্রশংসনীয় ভূমিকা

fec-image

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা এখন নানা কারণেই একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত। মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে কুতুপালং, বালুখালী, থাইনখালী ক্যাম্প স্থাপনের পর থেকে দেশী বিদেশি এনজিও সংস্থা গুলোর আনাগোনা পদচারনায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এনজিওদের অতিরিক্ত গাড়ি চলাচল ও লোকাল ষ্টেশনগুলোতে মাত্রাধিক নানান ধরণের ছোট বড় গাড়ি বৃদ্ধি এবং যত্রতত্র পার্কিংয়ের কারণে যানজট এখন এ এলাকার জন্য চির পরিচিত ব্যাপার হয়ে উঠেছে। এলাকার মানুষ যানজটের কারণে এক প্রকার অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ট্রাফিক পুলিশের বিরামহীন পরিশ্রম ও যুগোপযোগী কিছু সিদ্ধান্ত, জনসচেতনতামুলক মাইকিং করার কারণে সম্প্রতিক সময়ে যানজট তুলনামূলক ভাবে কমতে শুরু করেছে।

উখিয়ায় ট্রাফিক বিভাগে চৌকস, পরিশ্রমী, দক্ষ এবং ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ব্যক্তিদের পদায়নের ফলে তাদের নিরলস পরিশ্রমে এবং আন্তরিকতায় যানজট এখন অনেকটা সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। কোর্ট বাজার এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মোশাররফ হোসেন, সার্জেন্ট আশরাফ, সার্জেন্ট সুব্রত, টিএস আই রফিক এবং ট্রাফিক কনস্টেবল শাহাদাত নিরলসভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।

কখনো যানজট নিরসন করছে কখনো বা ফুটপাত উচ্ছেদে তাদের পরার্মশ দিচ্ছে কখনো বা লাইসেন্সবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা প্রদান করছে। গত এক সাপ্তাহে রং পার্কিং, গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, অপ্রাপ্ত বয়স্ক চালক ও লাইসেন্স না থাকায় প্রায় ৫০টির মতো মামলা তারা করেছে বলে জানান।

কনস্টেবল শাহাদাত বলেন, এখানে প্রতিদিন প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়। কারণ এখানে আমি ছাড়া আর কোন কনস্টেবল নেই, আর একজন ছিল শরীফ সে এখন ট্রেনিং এ রয়েছে। ফলে আমাকেই সকাল বিকাল স্যারদের সাথে কাজ করতে হয়। স্যারদের কাছে বারবার বলছি এখানে আরও ট্রাফিক সদস্য বাড়ানো দরকার। তারপরও আপনারা দেখতে পাচ্ছেন প্রচুর পরিশ্রম করে এখানে যানজট কমাচ্ছি। গত দু মাস এখানে অমানবিক পরিশ্রম করে যানজট নিয়ন্ত্রনে এনেছি।

পুলিশ সার্জেন্ট আশরাফ বলেন, এখানে জয়েন করেই আমরা সকল মালিক শ্রমিকদের সাথে পর্যায়ক্রমে বসেছি। তাদের বলেছি যানজট নিরসনে আমাদের সাথে আপনাদের ও কাজ করতে হবে। তারাও তাদের সাধ্যমত আমাদের সহযোগীতা করে যাচ্ছেন। আমরা পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশনায় এবং উখিয়া সার্কেল অতিঃ পুলিশ সুপারের সার্বক্ষনিক তদারকিতে নিরলসভাবে সততা ও নিষ্ঠার সাথে অবিচল থেকে আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। যার সুফল ইতোমধ্যে আপনারা পেতে শুরু করেছেন।

কোর্টবাজার, উখিয়া বাজার এলাকায় এখন আর আগের মতো ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হবে না। এই পরিবেশটি ধরে রাখতে হলে আপনাদের সকলের সহযোগিতা নিতান্ত প্রয়োজন। আমাদের হাজারো সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আমরা আমাদের দায়িত্ব ও কতর্ব্য পালন থেকে কখনোই বিচ্যুত হইনি। আমরা আমাদের সর্বোচ্চটুকু দেওয়ার চেষ্টা করছি।

উখিয়া ট্রাফিক পুলিশের টি আই মোশাররফ হোসেন বলেন, গত দুমাস ধরে নিরলস পরিশ্রম করে যানজট নিরসন করতে সক্ষম হয়েছি। এখন উখিয়াকে একটি যানজটমুক্ত নিরাপদ শহর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের প্রত্যয়। কোটবাজার টমটম মালিক শ্রমিক সমিতির সভাপতি ছলিম উল্লাহ বাহাদুর বলেন, আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে উখিয়া এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক এবং নিরাপদ রয়েছে। কোটবাজার এলাকায় সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন ট্রাফিক বিভাগের সকল সদস্যগন। তারা খুব দায়িত্বশীল ভুমিকার কারণে ইতোমধ্যে উখিয়া এলাকার মানুষজনের মন তিনি জয় করে ফেলেছেন।

আমরাও বিভিন্ন মালিক শ্রমিক সমিতি অবৈধ পাকিং এর ব্যাপারে ইতোমধ্যে মাইকিং করেছি। তাছাড়া ও আমরা যানজট নিরসনে আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় লাইন ম্যান নিয়োগ করে যানবাহন নিয়ন্ত্রন সচল রেখেছি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: উখিয়া, যানজট, রোহিঙ্গা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন