পাহাড়ের সালতামামি-২০১৯: শেষ পর্ব (বিশেষ সম্পাদকীয়)

একনজরে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের ২০১৯

fec-image

মহাকালের খেয়ায় ২০১৯ সাল আমাদের মাঝ থেকে চিরতরে বিদায় নিয়েছে। বিশ্ব ও জাতীয় প্রেক্ষাপটের মতোই পার্বত্য চট্টগ্রাম কক্সবাজারের জনজীবনে ২০১৯ সাল ছিলো ঘটনাবহুল ও বহুল আলোচিত একটি বছর। পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলে ২০১৯ সালে বছর জুড়েই বহুল আলোচিত ছিলো উপজাতীয় আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর সশস্ত্র শাখার সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও তৎপরতা এবং রোহিঙ্গা ইস্যু। আধিপত্য বিস্তার, খুন, চাঁদাবাজী, নির্যাতন, বন্দুকযুদ্ধ প্রায়শঃই খবর হয়েছে। কখনো তা জাতীয় গণমাধ্যমের শীর্ষ খবরের স্থান দখল করেছে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে ২০১৯ সালের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিলো সরকারী জনবলের উপর উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনা। এর শুরু হয় বাঘাইছড়িতে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের উপর উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের গুলিবর্ষণের ঘটনা দিয়ে। গত বছরের ১৮ মার্চ বাঘাইছড়ি উপজেলায় নির্বাচনী কাজ শেষে করে ফেরার পথে নির্বাচনী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাড়িতে ব্রাশ ফায়ার করে সন্ত্রাসীরা। এ হামলার ৮ জন নিহত হয়, আহত হয় অন্তত ১৬ জন।

এরমধ্য দিয়ে শান্তিচুক্তির পর প্রথম সরকারী কর্মকর্তাদের উপর হামলা পরিচালিত হলো। সরকারী তদন্ত কমিটি এ ঘটনার জন্য শান্তিচুক্তি সাক্ষরকারী জেএসএসকে দায়ী করেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল এমএম মতিউর রহমান এ ঘটনাকে শান্তিচুক্তি শর্ত লংঘন বলে আখ্যায়িত করেছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাস দমন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় এই উর্দ্ধতন সেনাকমকর্তার ভূমিকা বছর জুড়েই ছিলো আলোচনায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপামর পার্বত্যবাসীর ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেছেন তিনি।

এদিকে ১৮ আগস্ট ২০১৯ রাজস্থলীর পোয়াতু পাড়ায় সেনাবাহিনীর টহলরত টিমের উপর উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা অতর্কিতে গুলিবর্ষণ করলে সৈনিক মো. নাসিম নিহত হয়। ২৬ আগস্ট খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় সেনাবাহিনীর টহলে ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের সন্ত্রাসীদের হামলা, পাল্টা গুলিতে তিন সন্ত্রাসী নিহত হয়। এসময় বেশ কিছু ভারী আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়। ঐদিন সকালে খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালার বড়াদমে সোনাবাহিনী টহলে সন্ত্রাসীরা গুলি চালালে এ ঘটনা ঘটে। সেনাবাহিনী পাল্টা গুলিতে পার্বত্য শান্তিচুক্তি বিরোধী ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) প্রসীত গ্রুপের তিন সন্ত্রাসী বুজেন্দ্র চাকমা, জ্যোতি চাকমা ও রশিল চাকমা নিহত হয়।

এদিকে গত ২৫ সেপ্টেম্বর উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের একটি আস্তানা ঘেরাওকালে সন্ত্রাসীদের ছোঁড়াগুলিতে লক্ষ্ণীছড়ি জোনের উপ অধিনায়ক মেজর আনিসুর রহমান পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পর উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের এভাবে সরকারী জনবলের উপর হামলার ঘটনা নজিরবিহীন।

অন্যদিকে নিরাপত্তা বাহিনীর পাল্টা ব্যবস্থার কারণে উপজাতীয় আঞ্চলিক সংগঠনের সশস্ত্র শাখাগুলো বেশ কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে জেএসএসের চিফ কালেক্টর জ্ঞান শঙ্কর নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হবার পর সংগঠনটি বেশ চাপের মধ্যে পড়ে যায়। পরবর্তীকালে নিযুক্ত চিফ কালেক্টর বিক্রম চাকমাও গত ১ ডিসেম্বর নিহত হন। সার্জেন্ট মুকুল চাকমা হত্যার দায়ে অভিযুক্ত আবিস্কার চাকমা নিহত হওয়ার খবরও জানা যায়।

এদিকে ১৫ মার্চ ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের চিফ কালেক্টর তারাবন চাকমা পানছড়িতে নিহত হয়। ৪ ডিসেম্বর ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের সহকারী পরিচালক সুবাহু চাকমা ওরফে গিরি নিহত হয়।

এর আগে দলটির কেন্দ্রীয় নেতা আনন্দ প্রকাশ চাকমা গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় গ্রেফতার হয়ে কারান্তরীণ রয়েছে।

অন্যদিকে গত ৯ এপ্রিল ঢাকায় অপহৃত হন ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় সংগঠক মাইকেল চাকমা। এসব কারণে বর্তমানে সংগঠন দুটি বেশ কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছে বলে জানা গেছে।

২০১৯ সালের আরেকটি বহুল আলোচিত ঘটনা হচ্ছে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য বাসন্তি চাকমার বিতর্কিত ভাষণ। গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে দেয়া ভাষণে বাসন্তি চাকমা সেনাবাহিনী ও বাঙালিদের বিরুদ্ধে চরম আপত্তিকর ও বিতর্কিত কিছু অভিযোগ উত্থাপন করে। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বাঙালিরা তার এ বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবীতে ব্যাপক আন্দোলন করে।

২০১৯ সালে উপজাতীয় আঞ্চলিক দলের সশস্ত্র শাখার হাতে জাতীয় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা নিহত হয়। স্থানীয়ভাবে এর জন্য একটি আঞ্চলিক সংগঠনের সশস্ত্র শাখাকে দায়ী করা হয়। এমনকি আওয়ামী লীগ এর প্রতিবাদে হরতালও পালন করে।

গত বছরের উল্লেখযোগ্য আরেকটি ঘটনা হচ্ছে রাঙামাটিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক। রাঙামাটির ইতিহাসে গেলো বছর ১৬ অক্টোবর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আগমন করেন। তার সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিলো পাহাড় থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদক নির্মূল করা। এজন্য তিনি সরকারের উচ্চপদস্থ একটি দল নিয়ে আসেন এবং পাহাড়ের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন।

উক্ত বৈঠকে পাহাড়ে র‌্যাব মোতায়েন করার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র সচিব, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সচিব, আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সকল বাহিনীর প্রধান, গোয়েন্দা সংস্থা সমূহের প্রধান, ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসিসহ সেনাবাহিনীর উর্দ্ধতন বিপুল পরিমাণ কর্মকর্তাগণ এ বৈঠকে যোগ দেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে এ ধরণের বৈঠক নজিরবিহীন। এ বৈঠকের পরই সরকার পাহাড়ে র‌্যাব ব্যাটালিয়ানের জনবল কাঠামো অনুমোদন করেছে। এ ছাড়াও বর্ডার রোড এবং প্রত্যাহারকৃত সেনা ক্যাম্পের স্থানে বিজিবি, পুলিশ ও র‌্যাবের ক্যাম্প স্থাপনের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

২০১৯ সালের অন্যতম আলোচিত ঘটনা হচ্ছে, পার্বত্য বাঙালি সংগঠনগুলোর একীভূত হওয়া। বহুধা বিভক্ত বাঙালি অধিকার আন্দোলনের সাথে জড়িত সংগঠনগুলো ৫ ডিসেম্বর ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ নামে আত্মপ্রকাশ করে।

২০১৯ সালে সারা বছর নানাভাবে আলোচনায় থাকা পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন বছরের শেষ নাগাদ তাদের কার্যক্রম শুরু করে। এ বছরের শেষ নাগাদ পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে এই আইন নিয়ে পার্বত্য বাঙালিরা তাদের উদ্বেগ ও আশঙ্কা প্রকাশ করে আন্দোলনও করেছে।

এদিকে ২০১৯ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে বেশকিছু উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: ২৮ নভেম্বর গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রামের ৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। প্রকল্পগুলো হলো- পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সোলার প্যানেলের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ শীর্ষক প্রকল্প, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে গবেষণা প্রকল্প, বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি গাজীপুরের ডাটা সেন্টার ও বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) নতুন ৫টি জাহাজের প্রকল্প।

জানা গেছে, ৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত জাহাজের অভ্যন্তরে ল্যাব তৈরি করা হয়েছে। এ তরীতে প্রায় ১৫টি বিষয় নিয়ে গবেষণার কাজ করা হবে। এদিকে ১১ সেপ্টেম্বর রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদের সাথে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কাপ্তাই ৭.৪ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

উল্লেখ্য, কাপ্তাই প্রজেক্টের ভেতরে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান বাঁধ সংলগ্ন দুই একর খালি জায়গায় সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। পুরো প্রকল্প এলাকা সুউচ্চ সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। এতে প্রায় ১১০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। সৌর শক্তির সাহায্যে এই প্রকল্প থেকে দৈনিক ৭.৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। এর মধ্যে ২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কাপ্তাই প্রজেক্টে ব্যয় করা হবে। বাকী ৫.৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ করা হবে।

এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদ্যুতায়নের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে বলে আমাদেও বিশ্বাস। এছাড়াও বছরের শুরুতে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে উচ্চ শিক্ষা বিস্তারে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হয়।

কক্সবাজার অঞ্চলে বছর জুড়েই আলোচনায় ছিলো রোহিঙ্গা ইস্যু ও বাংলাদেশ মিয়ানমার সম্পর্কের টানাপোড়েন। ২০১৭ সালে বাংলাদেশে আগমনের সময় রোহিঙ্গাদের প্রতি বাংলাদেশীদের যেরূপ সমবেদনা দেখা গিয়েছিল গত বছরে তার বেশিরভাগই তিরোহিত হয়েছে।

অন্যদিকে রোহিঙ্গাদেরও নানাভাবে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে ব্যাপকভাবে। মাদক, নারী পাচার, জঙ্গী তৎপরতায় জড়িত হওয়ার হার বেড়েছে রোহিঙ্গাদের মধ্যে। ফলে বছর জুড়েই স্থানীয় জনগণের সাথে, পুলিশের সাথে, রোহিঙ্গাদের সংঘর্ষের খবর জাতীয় গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছে। পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে মাঝে মাঝেই রোহিঙ্গা অপরাধীদের নিহত হওয়ার খবর সংবাদ-শিরোনাম হয়েছে।

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আগমনের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে হঠাৎ করেই ক্যাম্পে দুই লক্ষাধিক লোকের সমাবেশের আয়োজন করে হৈ চৈ ফেলে দেয়। এ ঘটনায় বাংলাদেশে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা ব্যাবস্থা নিয়ে বাংলাদেশেকে পুণরায় ভাবতে হয়। ফলে ক্যাম্পের ভেতর সিসি ক্যামেরা, কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ক্যাম্প ঘেরাও, রাতে নিরাপত্তা টহল চালু করা হয়। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশী এনআইডি ও পোসপোর্ট তৈরির বিরুদ্ধে কড়াকড়ি ব্যবস্থা নেয় সরকার।

চীনের মধ্যস্থতায় রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর উদ্যোগও ভেস্তে যায়। ভেস্তে যায় রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠানোর সরকারী উদ্যোগও। বছর জুড়েই বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনার খবর পাওয়া যায়। এর প্রধান কারণ মিয়ানমারের স্বাধীনতাকামী আরাকান আর্মির সাথে মিয়ানমারের নিয়মিত সেনাবাহিনীর ধারাবাহিক লড়াই। এ লড়াইয়ে মিয়ানমার সেনবাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়।

গতবছরের ৮ এপ্রিল সেন্টমার্টিন্স দ্বীপে ২২ বছর পর বিজিবি মোতায়েন করা হয়। রোহিঙ্গাদের মধ্যে বছরের সবচেয়ে আলোচিত চরিত্র ছিলো মাস্টার মুহিবুল্লাহ। আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস এন্ড হিউম্যান রাইটস নেতা মাস্টার মুহিবুল্লাহ হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাৎ করে হৈ চৈ ফেরে দেন। তাছাড়া রোহিঙ্গাদের বিশাল সমাবেশের পেছনেও তার সংগঠনের ইন্ধন থাকার খবর প্রকাশিত হওয়ায় তিনি গা ঢাকা দেন।

এ সময় বেশকিছু এনজিওর রোহিঙ্গা বিষয়ক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়। তবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সবচেয়ে বেশী আলোচিত হয়েছে গাম্বিয়া কর্তৃক ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে মামলা দায়ের ও শুনানী।

২০১৮ সালের আজকের দিনে পাক্ষিক পার্বত্যনিউজ তার পথচলা শুরু করেছিলো। পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চল ভিত্তিক একটি জাতীয় মানের সাময়িকী প্রকাশ করে টানা দুই বছর নিয়মিতভাবে প্রকাশ করা বর্তমান সময়ে অত্যন্ত চ্যালেঞ্জের।

কিন্তু পাঠক, সাংবাদিক ও শুভানুধ্যায়ীদের সহায়তায় আমরা তাতে সফল হয়েছি। তাই সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। ইতোমধ্যেই আপনাদের ভালবাসায় পাক্ষিক পার্বত্যনিউজ ও পার্বত্যনিউজ.কম পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের সবচেয়ে পঠিত ও সর্বাধিক জনপ্রিয় গণমাধ্যম হিসেবে সর্বজন স্বীকৃতি পেয়েছে। এ সাফল্য আপনাদের এবং আগামীতেও যেন এই সাফল্য ধরে রেখে আরো সামনে এগিয়ে যেতে পারি সেজন্য আপনাদের অব্যহত সমর্থন প্রত্যাশা করি।

প্রিয় পাঠক, মহাকালের আবর্তে ২০১৯ সাল যেমন আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিয়েছে তেমনি ২০২০ সালও আমাদের অন্তহীন পথচলায় সারথি হয়েছে। ২০২০ সাল কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জনজীবনে শান্তি, সম্প্রীতি, যুথবদ্ধতা ও উন্নয়নের আলো ছড়িয়ে দিক এ অঞ্চলের জীবন ও জনপদে এ প্রত্যাশা আমাদের। শুভ নববর্ষ- ২০২০।

♦ লেখক: সম্পাদক, পার্বত্যনিউজ ও চেয়ারম্যান, সিএইচটি রিসার্চ ফাউন্ডেশন।


লেখকের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক আরো লেখা

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন