করোনার প্রভাব: বিপাকে রাজস্থলীর বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা
করোনায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাঙামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। সমাজে মানুষগড়ার কারিগর এ উপজেলায় বিদ্যালয় সহ অন্তত ৪/৫ টি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, কর্মচারী সহ প্রায় ৩০ জন কাজ করতেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষকরা জানান, শিক্ষকদের অধিকাংশই শুধু চাকরীর উপর নির্ভরশীল। তাদের বেতন ভাতা মূলত শিক্ষার্থীদের থেকে আদায় করা হত। ফলে, এ অবস্থায় এ সব শিক্ষক চলমান লকডাউনে পড়েছেন মারাত্নক অর্থসংকটে।
রাজস্থলী উপজেলার ১নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের, ঘিলাছড়ি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজল কুমার তনচংগ্যা জানান, বিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার পর থেকে আমাদের বেতন-ভাতা বন্ধ। গতবছর প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনায় সামান্য কিছু টাকা ছাড়া অদ্যাবধি কোন সাহায্য পাইনি। দিন দিন বেকারত্বের গ্রাসে আবদ্ধ হয়েছি গোটা বেসরকারি শিক্ষক ও কর্মচারীগন।
শিক্ষকদের দাবি এভাবে চলতে থাকলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ফলে দক্ষ ও জ্ঞানী শিক্ষকের অভাবে ব্যাঘাত সৃষ্টি হতে পারে শিক্ষা কার্যক্রম। তাই দ্রুত এদের প্রণোদনার আওতায় না আনা হলে দুর্গম পার্বত্য রাজস্থলী অঞ্চলে ভেঙ্গে পড়বে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম।
রাজস্থলী বালিকা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রহিমা আকতার জানান, করোনা শুরুর পর থেকে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আমরা আর্থিকভাবে সংকটে পড়েছি। মাথোয়প্রুু প্রুুলাউহেডম্যান, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান উথিনসিন মারমা জানান, করোনা কালে আমরা শিক্ষকদের মোটেই কোন সম্মানী ভাতা দিতে পারিনি। ফলে অনেকেই জীবিকার তাগিতে কেউ ব্যবসা আবার কেউ জমি বর্গা নিয়ে চাষবাসে জড়িয়ে পড়ছে। যার ফলে সকল বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অদূর ভবিষ্যতে শিক্ষক সংকটের সম্ভাবনা রয়েছে।
বাঙালহালিয়া পাহাড়িকা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সামশুল আলম জানান, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকদের বেতন বন্ধ। এভাবে চলতে থাকলে এ উপজেলার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অদূর ভবিষ্যতে অচল হয়ে পড়বে এতে কোন সন্দেহ নেই। তাই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ অতি জরুরী হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুনজরে এনে কর্মহীন হয়ে পড়া শিক্ষকদের মানবেতর জীবন থেকে রক্ষা করার উদাত্ত আহ্বান জানান বেসরকারি শিক্ষক ও কর্মচারী সমাজ।