কাউখালীতে ঝুঁকিপূর্ণ বসত বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে দিলেন ইউএনও
টানা বর্ষণের ফলে পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে কাউখালীর প্রায় শতাধিক পরিবার। অপরদিকে পাহাড়ি ঢলের কারণে ইছামতি নদীর তীরে বসবাসকারী অনেক পরিবারের বাড়ি ঘর ইতিমধ্যে নদীতে বিলীন হয়েগেছে। ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে অর্ধশত পরিবার। দূর্ঘটনার আগেই যাতে ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যায় সেলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি এলাকায় মাইকিং করে ঝুঁকিপূর্ণদের আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই উপজেলার ৪ ইউনিয়নে ৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
বার বার সতর্ক করার পরও যেসব পরিবার ঝুঁকিপূর্ণ বাড়ি ঘর ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছেনা সেসব পরিবারের তালিকা করে প্রতিটি ঘরেই তালা ঝুলিয়ে দিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে বাধ্য করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শতরূপা তালুকদার। বুধবার বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঘাগড়া ইউনিয়নের কলাবাগান এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, ভারী বর্ষণের কারণে উপজেলা ঘাগড়া ইউনিয়নের কলাবাগান এলাকায় পাহাড়ি ঢলে অন্তত ২০ পরিবারের বাড়ি ঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে রয়েছে ১০/১২ পরিবার। সৃষ্ট পরিস্থিতে নিম্ন আয়ের এসব মানুষের কষ্টের যেন আর সীমা নেই। সহায় সম্বল হারিয়ে অনেকে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। ছেলে সন্তান নিয়ে মারাত্মক ঝুঁকিতে বসবাস করলেও নিজের শেষ সম্বলটুকু ছেড়ে যেতে চান না এসব অসহায় পরিবারগুলো। বিকেলে উপজেলার বেতছড়ি গুচ্ছগ্রাম এলাকায় আব্দুল জলিলের মাটির ঘর ধসে পড়ে। এতে কোন ক্ষয়ক্ষতি না হলেও তার বসত ঘর সম্পূর্ণ মাটি চাপা পড়ে যায়।
পাহাড় ধসের ঝুঁকির কারণে বেতবুনিয়া ইউনিয়নের পূর্ব শিয়ালবুক্কা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছে প্রায় ৩০ পরিবারকে। এদের মাঝে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাল, ডাল, তেলসহ শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
নতুনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন অর্ধশত পরিবার। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পাহাড়ের পাদদেশে যারা বসবাস করছে তাদেরও পর্যায়ক্রমে সরিয়ে নেয়া হবে জানিয়েছেন বেতবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান খইসাবাই তালুকদার।
দূর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে মানুষের যাতে সমস্যা না হয় তার জন্য বেতবুনিয়ায় ২১, ফটিকছড়ি ১০, ঘাগড়া ১১ এবং কলমপতি ইউনিয়নের ১১টি সহ মোট ৫৩টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শতরূপা তালুকদার জানান, পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবধরণের প্রস্তুতি হাতে নেয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিটি এলাকার তালিকা করে সার্বক্ষনিক মনিটরিং করা হচ্ছে।