খাগড়াছড়িতে জাতীয় কবির ১২৬তম জন্মজয়ন্তী উদযাপন


চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে, কাজী নজরুলের উত্তরাধিকার”এই সময়োপযোগী প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে খাগড়াছড়িতে যথাযোগ্য মর্যাদা ও সাংস্কৃতিক ভাবগাম্ভীর্যে উদযাপন করা হয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী। রবিবার (২৫ মে) সন্ধ্যায় শহরের পৌর টাউন হল অডিটোরিয়ামে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “আজকের গণজাগরণে কাজী নজরুলের বিদ্রোহী চেতনা আমাদের প্রেরণা। তাঁর কবিতা শুধু সাহিত্য নয়, আমাদের জাতীয় জীবনের সংগ্রামী চেতনার মশাল।”
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন,পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ডা. রাজু আহম্মেদ, সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের পরিচালক ঞ্যো হ্লা মং-সহ আরও অনেকে।
এ সময় স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও পৌর প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ফেরদৌসী বেগম জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা, বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাহিত্যপ্রেমীরা উপস্থিত ছিলেন
আলোচনার পরপরই শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। নজরুল সংগীত, কবিতা আবৃত্তি, নৃত্য ও বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের কণ্ঠে গোটা অডিটোরিয়ামে প্রাণসঞ্চার হয়ে উঠে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী, কবিতা আবৃত্তি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিবৃন্দ। এই আয়োজনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের মাঝে নজরুলের জীবনদর্শন ও সাহিত্যচর্চা অনুপ্রাণিত করার প্রয়াস নেওয়া হয়।
নজরুল ও ২০২৪-এর বাস্তবতা এই বছর জাতীয় পর্যায়ে ‘চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে নজরুলের উত্তরাধিকার’ প্রতিপাদ্যটি উল্লেখযোগ্য। ২০২৪ সালের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে নজরুলের বিদ্রোহী মনন, সাম্যবাদী চিন্তা ও মানবিক মূল্যবোধ নতুনভাবে মূল্যায়িত হচ্ছে। খাগড়াছড়ির মতো পার্বত্য অঞ্চলেও তাঁর চেতনা পৌঁছে যাচ্ছেএটিই এ আয়োজনের অন্যতম সার্থকতা।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম শুধু একটি নাম নয়, তিনি একটি আন্দোলন, এক জীবন্ত চেতনা। খাগড়াছড়ির মতো পার্বত্য জেলার মঞ্চে তাঁকে গভীর শ্রদ্ধা ও সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তির মাধ্যমে স্মরণ করাটা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় এবং সময়োপযোগী উদ্যোগ।