খাগড়াছড়িতে মারমা সম্প্রদায়ের মানববন্ধন ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি


পার্বত্য চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানসমূহে চেয়ারম্যান পদে মারমা জাতিগোষ্ঠির কোনো প্রতিনিধি না রাখার প্রতিবাদে ও মারমা জাতিগোষ্ঠির প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবীতে খাগড়াছড়িতে মানববন্ধন হয়েছে।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন শেষে একই দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে মারমা সম্প্রদায়।
কর্মসূচীতে মারমা সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার নারী-পুরুষ অংশ নেন।
স্মারকলিপিতে মারমা সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের স্পিরিট_এ ধারণ করে পার্বত্য চট্টগ্রামেও জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে অংশ নিয়েছিল। আশা ছিল বৈষম্যহীন সমৃদ্ধ একটি বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম বৃহৎ জনগোষ্ঠী মারমা সম্প্রদায় আশাহত হয়েছে।
দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ মারমা সম্প্রদায় স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসলেও যুগে যুগে বিভিন্নভাবে বঞ্চিত হয়ে আসছে।
ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় মারমা সম্প্রদায় যে স্বপ্ন দেখেছে পার্বত্য চট্টগ্রামে দারুণভাবে উপেক্ষিত হচ্ছে। বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামের দ্বিতীয় বৃহত্তম মারমা জনগোষ্ঠি। অন্তর্রবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর পার্বত্য চট্টগ্রামের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে মন্ত্রী মর্যাদায় উপদেষ্টা ও চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন এবং অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্ত নির্দিষ্টকরণ ও পুনর্বাসন সম্পর্কিত টাস্কফোর্স, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বের ক্ষেত্রে মারমা জাতিগোষ্ঠীকে বঞ্চিত ও উপেক্ষিত করা হয়েছে।
কেবল মারমা সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণই নয়, বরং পুরো পার্বত্য অঞ্চলের সামাজিক ভারসাম্য ও উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে দারুণভাবে ব্যাহত করা হয়েছে। এতে পার্বত্য চট্টগ্রামের বৃহত্তর মারমা জনগোষ্ঠি গভীরভাবে আশাহত এবং মর্মাহত হয়েছে।
স্মারকলিপিতে পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়ন ও জনগণের মধ্যে আস্থ্য বজায় রাখতে এ অঞ্চলে বসবাসরত সকল নৃ-গোষ্ঠীর সমান সংখ্যক প্রতিনিধি রাখা বাঞ্ছনীয়।
এর ফলে বৈষম্যহীন ও সম্প্রীতিময় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিনির্মাণে সামাজিক ভারসাম্য ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে ও পার্বত্য অঞ্চলে বৈষম্য দূর করে উন্নয়নের ধারাবাহিকতাসহ সুষম বন্টন নিশ্চিত হবে।