ঢালিউডের কালোত্তীর্ণ চিত্রনায়ক সালমান শাহ’র ৪৯তম জন্মদিন আজ

fec-image

আজ ঢালিউডের কালোত্তীর্ণ  চিত্রনায়ক সালমান শাহ’র ৪৯তম জন্মদিন। ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পুরো নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। বাবা কমরউদ্দিন চৌধুরী ও মা নীলা চৌধুরী। ২৪ বছর আগে তিনি দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলেও তিনি উত্তীর্ণ হয়েছেন তাঁর কাল থেকে। তাই তিনি চিরতরুণ, কালোত্তীর্ণ এক চিত্রনায়ক।

আশির দশকের শেষভাগে একটি মিউজিক ভিডিও দিয়ে টিভি পর্দায় আগমন। সেসময় কিছু বিজ্ঞাপণ চিত্র ও টেলিভিশন নাটকে কাজ করেন তিনি। চলচ্চিত্রে আগমন আরও এক দশক পর পরিচালক সোহানুর রহমান সোহানের হাত ধরে। প্রথম চলচ্চিত্র ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’।

এই একটি ছবিই তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ইমন থেকে তিনি হয়ে উঠেন সালমান শাহ। একের পর এক মুক্তি পেতে থাকে তার অভিনীত হিট সব সিনেমা। চার বছরে ২৭টির মতো সিনেমা করেন তিনি।

বাংলা চলচ্চিত্রের বরপুত্র সালমান শাহ। সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ দিয়ে শুরু চলচ্চিত্র জীবন। ১৯৯৩ সালের ২৫ মার্চ মুক্তি পায় এই চলচ্চিত্রটি। এরপর একের পর এক চলচ্চিত্রে অভিনয় করে পৌঁছে যান সাফল্যের চূড়ায়। ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ এর সাফল্যের পর পরিচালক জহিরুল হক ও তমিজউদ্দিন রিজভী সালমান শাহকে নিয়ে নির্মাণ করেন ছবি ‘তুমি আমার’। ১৯৯৪ সালের ২২ মে মুক্তি পায় ছবিটি।

এরপর একে একে মুক্তি পায় সালমান শাহ অভিনীত ছবি শিবলি সাদিক এর ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘আনন্দ অশ্রু’ ও ‘মায়ের অধিকার’। জহিরুল হক এর ‘সুজন সখী’। গাজী মাজহারুল আনোয়ার এর ‘স্নেহ’, শফি বিক্রমপুরির ‘দেনমোহর’, দিলিপ সোম এর ‘মহামিলন’, এম এম সরকার ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’ ও ‘প্রেম পিয়াসি’, বাদল খন্দকার এর স্বপ্নের পৃথিবী, হাফিজউদ্দিনের আঞ্জুমান, দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর ‘কন্যাদান’, মালেক আফসারির ‘এই ঘর এই সংসার’, এম এ খালেক এর ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, জীবন রহমান এর প্রেমযুদ্ধ’, মোহাম্মদ হান্নান এর ‘বিক্ষোভ’, মোহাম্মদ হোসেন এর ‘প্রিয়জন’, মতিন রহমান এর ‘তোমাকে চাই’, শাহ আলম কিরন এর ‘বিচার হবে’, জাকির হোসেন রাজুর ‘জীবন সংসার’, তমিজ উদ্দিন রিজভীর ‘আশা ভালোবাসা’।

এছাড়া আরও ছবিতে অভিনয় করেন যা সে সময় তাকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে যায়। এগুলোর মধ্যে বিক্ষোভ (১৯৯৪), স্বপ্নের ঠিকানা (১৯৯৪), মহামিলন (১৯৯৫), বিচার হবে (১৯৯৬), চাওয়া থেকে পাওয়া (১৯৯৬), প্রেম পিয়াসী (১৯৯৭), স্বপ্নের নায়ক (১৯৯৭), বুকের ভিতর আগুন (১৯৯৭) উল্লেখযোগ্য। মাত্র চার বছরে ২৭টি সিনেমায় অভিনয় করেন বাংলা চলচ্চিত্রের উজ্জ্বল নক্ষত্র সর্বকালের তরুণদের জন্য আইকন সালমান শাহ।

ক্ষণজন্মা এই চিত্রনায়ক নিজ গুনেই নিজের সময়কে ছাড়িয়ে গিয়ে এখনও সমান জনপ্রিয় হয়ে আছেন। বাংলা চলচ্চিত্র যতদিন থাকবে এই নায়কের নাম জ্বলজ্বলে থাকবে এই মত চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের।

বাংলা চলচ্চিত্রের আকাশে যখন উজ্জ্বল তারকা হয়ে জ্বলজ্বলে দীপ্তমান সালমান শাহ। সে সময় হঠাতই যেন কালো মেঘে ছেয়ে অন্ধকার নেমে আসে চলচ্চিত্রের আকাশে।

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাজধানীর ইস্কাটনের নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। এটা আত্মহত্যা নাকি হত্যা এ নিয়ে এখনও বিষয়টি বিচারাধীন। এই  মৃত্যু রহস্যের জট খুলছেইনা। তবে সর্বশেষ পিবিআয়ে রিপোর্টে সালমানের মৃত্যুকে আত্নহত্যা বলাে হয়। তবে এর বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দিয়েছে তার পরিবার।

সালমান শাহ’র মৃত্যুর এত বছর পরেও তিনি সমান জনপ্রিয়। তরুণ-তরুণীদের কাছে তিনি এক আইডলের নাম। স্টাইলিস্ট তরুণেরা সালমান শাহকেই আদর্শ মানেন। তিনি স্টাইলিস্ট তরুণদের নতুন চিত্রনায়কদের অনুকরণীয় হয়ে বেঁচে থাকবেন আজীবন।

জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ’র জন্মদিনে বিভিন্ন সংগঠন, সংবাদপত্র ও টেলিভিশন নানা আয়োজন করে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন