দীর্ঘ ৫ মাস পর সালাহ উদ্দিনের রায়ের বিরুদ্ধে সরকার পক্ষের আপিল
দীর্ঘ ৫ মাস পর ভারতে সালাহ উদ্দিনের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদের বেকসুর খালাসের বিরুদ্ধে ভারতের শিলং জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গত ২৭ এপ্রিল আমার রায়ের বিরুদ্ধে আদালতের নোটিশ পেয়ে ১ মে (বুধবার) আমি আদালতে হাজির হই। অথচ এর আগ পর্যন্ত আমার কৌঁসুলি বা রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি কেউ আমাকে বিষয়টি অবহিত করেননি। অথচ আমি নিম্ন আদালত থেকে বেকসুর খালাসের পর থেকে দীর্ঘ ৫ মাস ধরে ছাড়পত্রের অপেক্ষায় শিলং শহরে অবস্থান করছি।
তিনি আরও বলেন, আপিলের বিষয়ে অবহিত করা হলে আপিল মামলাটি শিলং জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দায়েরের গ্রহণ যোগ্যতা নিয়ে উভয় পক্ষের শুনানি হতে পারত। এখন আমার মনে হচ্ছে বহুমূখী ষড়যন্ত্রের কবলে পড়ে আমাকে প্রবাস জীবন কাটাতে বাধ্য করা হচ্ছে।
২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং নর্থ ইষ্ট খাসিয়া হিল জজ আদালত এক রায়ে ভারতে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতে অনুপ্রবেশের দায়ে সালাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে দায়ের করা ফরেনার্স অ্যাক্টের ১৪ ধারায় করা মামলায় বেকসুর খালাস দেন। ওই আদালতের বিচারক ডিজি খারশিং ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট শুনানী শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষায় রেখেছিলেন। সালাহ উদ্দিন আহমেদের আইনজীবী এসপি মোহন্ত ও সহকারি আইনজীবী অনিল কুমার জানান, ৫ বার তারিখ পেছানোর পর ২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর চুড়ান্ত রায় দেয়া হয়। রায়ে তাকে দ্রুত দেশে পাঠানোরও নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর থেকেই তিনি ছাড়পত্রের অপেক্ষায় ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১০ মার্চ ‘আত্মগোপণ’ থাকা অবস্থায় রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে ‘আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী’পরিচয়ে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর দীর্ঘ ৬২ দিন গুম থাকার পর ১১ মে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং শহরের গলফ কোর্স মাঠের পাশে অসুস্থ অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে স্থানীয় এক ব্যক্তির সহায়তায় তিনি পুলিশের হেল্পলাইনে ফোন করলে পুলিশ প্রথমে তাকে থানায় ও পরে মিমহামস নামের একটি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১২ মে বাংলাদেশে বিষয়টি জানাজানি হলে তাকে সেখান থেকে সিভিল হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়। সিভিলে সপ্তাহ খানেক রাখার পর তার অবস্থার অবনতি হলে শিলং এর বিশেষায়িত হাসপাতাল নিগ্রিমসে ভর্তি করা তাকে। সুস্থ হওয়ার পর জামিন পেলে শিলং শহরের বিষ্ণ পুর সানরাইজ গেস্ট হাউজে অবস্থান করে আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন তিনি। দীর্ঘ ৪ বছর আইনি লড়াইয়ের পর বেকসুর খালাস পান তিনি।
উল্লেখ্য, সালাহ উদ্দিন আহমদ ১৯৯১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এপিএস হিসেবে নিয়োগ পান। দীর্ঘ ৫ বছর দায়িত্ব পালন করার পর ১৯৯৬ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়ে আবারও রাজনীতিতে সক্রিয় হন ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সালাহউদ্দিন আহমদ। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে কক্সবাজার-১ আসন প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর টানা ৩ বার এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে তিনি যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।