নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মর্টার শেল ও স্থলমাইন বিস্ফোরণে আলোচিত-২০২২

fec-image

২০২২ সালে মর্টার শেল ও স্থলমাইন বিস্ফোরণে আলোচিত ছিলো বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত। গত আগস্ট থেকে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সীমান্তে মিয়ানমারের আরাকান আর্মি ও সেনাবাহিনীর মধ্যে চলে প্রচণ্ড সংঘর্ষ। যার ফলে শূন্যরেখায় বসবাসরত রোহিঙ্গা ও স্থানীয়রা আতঙ্কে দিন কাটিয়েছে। তবে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় সীমান্তে শান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করে।

সূত্র জানায়, ২০২২ সালে নাইক্ষ‍্যংছড়ির সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে ঘটে যাওয়া ঘটনায় মানুষের মনে এখনো ভীতি রয়ে গেছে। উপজেলার আওতাধীন ঘুমধুম ইউনিয়ন থেকে শুরু করে সদরসহ দৌছড়ির পাইনছড়ি ৫১নং পিলার পর্যন্ত প্রায় তিন মাসব্যাপী চলা তুমুল সংঘর্ষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, আহত ও নিহতের ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে সীমান্ত জনপদে নেমে এসেছিলো ভয়াবহ আতঙ্ক।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিক্ষেপ করা বিভিন্ন গোলাবারুদ বহুবার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে পড়ে। এই গোলাবারুদ বিস্ফোরণে ঘুমধুম কোনারপাড়ায় অবস্থিত রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে একজন নিহত এবং ৬ জন আহতের ঘটনা ঘটে।

ঘুমধুম ইউনিয়নের ৩নং ওর্য়াডের তুমব্রুর ৩৪ ও ৩৫নং সীমান্ত এলাকা দিয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ফাইটার হেলিকপ্টার এবং যুদ্ধ বিমান আকাশসীমা লঙ্ঘন করে বাংলাদেশের সামান্য ভিতরে ঢুকে মহড়া দিয়েছে কয়েকবার। একারণে অনেকবার সীমন্ত জনপদ এলাকার অনেক মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে প্রাণের ভয়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়।

নাইক্ষ‍্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক শফিউল্লাহ বলেন, নাইক্ষ‍্যংছড়ি-মিয়ানমার সীমান্তে কিছুটা উত্তেজনার কারণে বন্ধ হয়ে যায় উন্নয়ন কাজ। বর্তমানে তা আবার চলমান রয়েছে। ভবিষ্যতেও বর্তমানের মতো পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে উন্নয়ন কাজ অব্যাহত থাকবে এবং সীমান্ত জনপদের সাধারণ মানুষ আতঙ্ক মুক্ত পরিবেশে বসবাস করতে পারবে।

নাইক্ষ‍্যংছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন বলেন, সীমান্ত পরিবেশ এখনকার মত আগামীতেও শান্ত থাকুক যাতে সীমান্তে তাদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড স্বাভাবিকভাবে পরিচালনা করতে পারে।

তুমব্রুর সরোয়ার জানান, নতুন বছরে যাতে আগের বছরের মতো সীমান্ত অস্থিতিশীল না হয় সে কামনায় রয়েছে তিনি।

জামছড়ির মো. রহমান বলেল, সীমান্ত এলাকা অশান্ত হলে ভয়ে ঘুমাতে পারেন না তার পরিবারের সদস্যরা। তাই তিনি চান নতুন বছর ২০২৩ এ যাতে ভালো থাকে তাদের জনপদ।

নাইক্ষংছড়িস্থ ১১ বিজিবির জোন কমান্ডার ও অধিনায়ক লে. কর্নেল মো রেজাউল করিম বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সে দেশের বিদ্রোহীদের সাথে সেনাবাহিনী দ্বন্দ্বে সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও হতাহতের ঘটনা ঘটলেও এখন সম্পূর্ণ শান্ত রয়েছে নাইক্ষংছড়িস্থ তার দায়িত্বপূর্ণ এলাকা। বর্তমানে মানুষের জীবনযাপন স্বাভাবিক। তবে আগস্ট থেকে কয়েক মাস যে ঘটনা ঘটে তা ছিলো ২০২২ সালের বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের আলোচিত ঘটনা।

তিনি আরো বলেন, সীমান্ত সুরক্ষায় বিজিবি জোয়ানরা এ পয়েন্টে সবসময় সর্বোচ্চ সতর্ক ছিলো-আছে-থাকবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন