পেকুয়ায় বাজার দখল আতঙ্ক: লোকজনের মধ্যে চরম উত্তোজনা 

fec-image

শনিবার (১০ এপ্রিল) সকালে পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী আরবশাহ বাজার দখল করার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির নেতা ও বাশঁখালী পুইছড়ি এলাকার বাসিন্দা এরশাদুর রহমান চৌধুরী রাজাখালী সীমান্ত ব্রীজের বাশঁখালী পুইছড়ি প্রান্তে লোকজন নিয়ে জড়ো হলে মুহুর্তের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে আরবশাহ বাজারের দোকানপাট বন্ধ করে ব্যবসায়ীরা দিকবেদিক ছুটাছুটি করে।

বাজার কমিটির সভাপতি মৌলভী আব্দুল করিম, বাজার কমিটির সদস্য আবুল বশর, নেজাম উদ্দিন নেজু মেম্বারসহ ব্যবসায়ী ও লোকজনকে সাথে নিয়ে বাজারে অবস্থান করছে। উত্তোজনার খবর পেয়ে পেকুয়া থানার এসআই সিদ্দিক, এএস আই আব্দুল হকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির নেতা ও বাশঁখালী এলাকার বাসিন্দা এরশাদুর রহমান চৌধুরী অভিযোগ করেন আমি মহামারি করোনায় রাজাখালী আরবশাহ বাজারে মাস্ক বিতরণ ও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে উপকরণ বিতরণ করার জন্য বাজারে যেতে চাইলে তারা উত্তোজন সৃষ্টি করে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, আমি বাজার দখল করার চেষ্টা করি নাই, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী করোনাকালীন সময়ে মাস্ক বিতরণ ও করোনার উপকরণ পেকুয়া থানা পুলিশ এসে আমাকে বিতরণ করতে দেয়নি। তিনি দাবি করেন, এই বাজারের জায়গা আমার পৈত্রিক। আমার পূর্ব পুরুষের জায়গা। এটি সরকারীভাবে কোন ধরণের ইজারা দেওয়া হয় না।

সরকারী ইজারাভুক্ত না করে তথাকথিত জামায়াত নেতা মৌলভী আব্দুল করিম ওই এলাকার কিছু সন্ত্রাসীদের নিয়ে দখল করে রেখেছেন। তিনি বাজার কমিটির সভাপতি সেজে ব্যবসায়ীদেরকে জিম্মি করে রেখেছেন। অহেতুক তাঁরা উত্তেজনা সৃষ্টি করে। এছাড়াও কে বা কারা মহামান্য হাইকোর্টে রিট করে বাজারের ইজারা দিতে দিচ্ছে না। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে।

অপরদিকে পেকুয়ার রাজাখালীর আরবশাহ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাওলানা আবদুল করিম বলেন, গতকাল বাঁশখালীস্থ পুঁইছড়ি এলাকার লোকজন বাজারে এসে অস্ত্রসহ মহড়া দেন। মাস্ক বিতরণের কথা বলে আরবশাহ বাজারের খুঁচরা ব্যবসায়ীদের জায়গা ছেড়ে দেয়ার জন্য বলেন। রাতে জানতে পারি শনিবার সকালে আ’লীগ নেতা এরশাদুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে পুঁইছড়ির লোকজন আরবশাহ বাজার দখল করতে আসবে। এরপর আমরা পেকুয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আবুল বশর ও আকতার হোসেন বলেন, জমি পাওয়ার কথা বলে সন্ত্রাসী কায়দায় বাজারটি দখল করার চেষ্টা করে পুঁইছড়ির লোকজন। পুলিশ প্রশাসনের বাঁধা ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের প্রতিরোধের মুখে তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। যেকোন মূহর্তে তারা আবারো দখল চেষ্টা চালাবে বলে আমাদের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন। ধন্যবাদ পেকুয়া থানা প্রশাসনের প্রতি তাদের কঠোর অবস্থানে বাজারটি জবর দখল থেকে রক্ষা পেয়েছে।

তারাঁ আরও জানান, আওয়ামী লীগ নেতা এরশাদুর রহমান চৌধুরীর পূর্বপুরুষ আরএস মূলে উক্ত বাজারের জায়গা বিক্রি করে নিঃস্বত্ববান হয়ে যায়। এছাড়াও ওই জায়গা পরবর্তী বিএস ও দিয়ারা জরিপে বিইউআই মাদ্রাসা, ফৈয়জুনেছা স্কুল, এতিম খানার নামে রেকর্ড হয়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত পেকুয়া থানার এসআই ছিদ্দিক আহমদ বলেন, মাস্ক বিতরণের কথা বলে বাঁশাখালীর কিছু লোক আরবশাহ বাজারে আসতে চেয়েছিল। দুই পক্ষে সংঘর্ষে আশঙ্কা দেখা দেয়ায় মাস্ক বিতরণের অনুষ্ঠান করতে দেয়নি। আইনশৃঙ্খলা যাতে অবনতি না হয় সেদিকে নজর রয়েছে পুলিশের।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পেকুয়া, বাজার দখল
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন