প্রলোভন দেখিয়ে ধর্মান্তরিত করার পর খোঁজ নেয় না মিশনারীরা

fec-image

ভালোভাবে বেঁচে থাকার আশায় ধর্মান্তরিত হওয়া ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী জনগনের একটি বড় অংশ দুর্দশার মধ্যে পড়েছে। নিয়মিত আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দিয়ে ধর্মান্তর করার কিছু দিন পর অর্থ প্রদান বন্ধ করে দেওয়া এবং খ্রিস্ট ধর্ম শুদ্ধভাবে পালনে চাপ দেওয়ার কারণেই তাদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।

নতুন করে ধর্মান্তর ঠেকাতে উত্তরাঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী জনগণ গঠন করেছে ‘আদিবাসী সনাতন ধর্ম রক্ষা পরিষদ’। রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, জয়পুরহাট ও দিনাজপুরের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী অধ্যুষিত জেলা-উপজেলায় অনুসন্ধান করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ও আদিবাসী উন্নয়ন সংস্থার হিসাবে, দেশের প্রায় ৩০ লাখ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অর্ধেকের বাস উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায়। জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ সরেন ও আদিবাসী উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ভাগবত টুডু জানান, উত্তরাঞ্চলের ১৫ লাখ ক্ষুদ্র  নৃগোষ্ঠীর মধ্যে ছয় লাখেরও বেশি এরই মধ্যে ধর্মান্তরিত হয়েছে। এ অঞ্চলের আড়াই লাখ সাঁওতালের মধ্যে দুই লাখই তাদের নিজ ধর্ম ‘সর্বপ্রাণবাদ’ ছেড়ে খ্রিস্টান হয়েছে। এদের মধ্যে অতিদরিদ্র সাঁওতালদের সংখ্যাই বেশি। ধর্মান্তরিত অন্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের মধ্যে রয়েছে ওঁরাও, মাহালি, মুণ্ডা, মালপাহাড়ি, মালো, কোচ, পালিয়া ও রাজবংশী।

রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক ব্যাপ্টিস্ট চার্চ সংঘের পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত রেভারেন জোনা মুর্মু জানান, ধর্মান্তরে ইচ্ছুকদের প্রথমে সাদা কাগজে আবেদন করে পরে আদালতে এফিডেভিটের মাধ্যমে খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষিত হতে হয়। রাজশাহীর তানোর উপজেলার মণ্ডুমালার রোমান ক্যাথলিক সাধু জন মেরি ভিয়ানি্ন গির্জার ফাদার নির্মল কস্তা দাবি করেন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করতে তাঁরা কোনো প্রলোভন দেখান না। ইচ্ছে করেই অনেকে ধর্মান্তরিত হয়।

‘কোনো প্রলোভন দেখানো হয় না’

রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক ব্যাপ্টিস্ট চার্চ সংঘের পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত রেভারেন জোনা মুর্মু জানান, তানোর উপজেলায় ধর্ম প্রচার ও পালনের জন্য ২১টি গির্জা রয়েছে। এগুলোর আওতায় বিভিন্ন ধর্ম থেকে এরই মধ্যে এক হাজার ৩০০ ব্যক্তি খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করেছে। এটি কোনো বিদেশি নয়, দেশি মিশন। তিনি জানান, ধর্মান্তরে ইচ্ছুকরা প্রথমে সাদা কাগজে আবেদন করেন এবং পরবর্তী সময়ে আদালতে এফিডেভিটের মাধ্যমে তাঁদের খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষিত হতে হয়। রাজশাহীর তানোর উপজেলার মণ্ডুমালার রোমান ক্যাথলিক সাধু জন মেরি ভিয়ানি্ন গির্জার ফাদার নির্মল কস্তা দাবি করেন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করতে তাঁরা কোনো প্রলোভন দেখান না। স্বেচ্ছায় অনেকে ধর্মান্তরিত হন। রাজশাহী বাগানপাড়া চার্চের (ব্যাপ্টিস্ট) ফাদার পাওলো খিচেরি বলেন, ‘আমরা কাউকে জোর করে ধর্মান্তরিত করি না। আমরা নিপীড়িত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের সেবা দিয়ে থাকি। তারা আমাদের সেবায় মুগ্ধ হয়ে ধর্ম গ্রহণ করে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি ব্যাপ্টিস্ট মিশনে ৩৬ বছর ধরে কাজ করছি। আর ২২ বছর ধরে রাজশাহীর দায়িত্বে আছি। এ সময়ে অসংখ্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জনগণ খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করেছে।’

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের ভিন্ন কথা

কিন্তু ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের মুখে শোনা গেছে ভিন্ন কথা। তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের নরেশ মুর্মু অভিযোগ করে বলেন, ‘ফেলোশিপ চার্চের মিশনারিদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আর্থিকসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার আশায় পাঁচ বছর আগে আদি সাঁওতাল থেকে আমি খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করি। ওই সময় মিশনারিরা আমার ছেলেমেয়েদের বিনা খরচে লেখাপড়ার সুযোগ দেওয়ার কথা বললেও এখন এ খাতে আমাদেরই মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় হয়। তাঁদের কথামতো ধর্মাচার পালন ও ছেলেমেয়ের বিয়ে দিতে হচ্ছে। চার্চের ধর্ম প্রচারকরা আমাদের সাঁওতালি আদি প্রথা ঢোল, মাদল বাজানো ও সাঁওতালি ভাষায় গান করা নিষেধ করে দিয়েছেন। এমনকি প্রতিবেশী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের সঙ্গে মেশামিশিতে সতর্ক করে দিচ্ছেন।’

জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষিত অনিল মারাণ্ডি অনুতাপের সুরে বলেন, ‘না বুঝে ও লোভে পড়ে বাপ-দাদার আদি ধর্ম ত্যাগ করে বড় ভুল করেছি। এখন প্রতি মুহূর্তেই অনুশোচনা বোধ করি। আদি ধর্ম ও সত্তা বিলীন হওয়ায় আমার মতো অনেকেই আজ মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছে।’ তিনি আদি ধর্ম ও সংস্কৃতিতে ফিরে আসার চেষ্টা করছেন বলেও জানান।

ধর্ম রক্ষা পরিষদের কথা আদি ধর্ম রক্ষায় রাজশাহীর তানোরে গত মাসে উত্তরাঞ্চলভিত্তিক ‘আদিবাসী সনাতন ধর্ম রক্ষা পরিষদ’ গঠন করা হয়েছে। পরিষদের সভাপতি রবি হেমব্রম বলেন, ধর্মান্তরিত করার ফলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের সামাজিক বন্ধন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এ সংগঠন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের প্রাচীন ধর্মে ফেরানোর চেষ্টা করছে। অনেক ক্ষেত্রে সফলও হচ্ছে। তবে প্রায়ই মিশনারিদের রোষানলে পড়তে হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

ভুক্তভোগীরা যা বলেন

কয়েক বছর আগে ধর্মান্তরিত তানোরের কচুয়া গ্রামের বিশ্বনাথ হেমরম ও জামিন মারাণ্ডি জানান, তাঁরা এখনো সাঁওতালি প্রথার আদলেই খ্রিস্ট ধর্ম পালনের চেষ্টা করছেন। কিন্তু চার্চের লোকজন নাখোশ হয়েছে। তারা এতে বাধা দিয়েছে, একঘরে করে রাখার ঘোষণাও দিয়েছে। একই গ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী গ্রামপ্রধান রমেশ হাসদা ও দুরবিন কিসকু বলেন, সাঁওতালরা খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করলেও তারা প্রাচীন ধর্মাচার, চিরায়ত প্রথা-উৎসবের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বাদ্য, বাঁশি, মাদল, তীর-ধনুক, সরাই, দুল বাজাতে চায়। কিন্তু তা নিষেধ করা হচ্ছে বলে শুনেছি।

রমেশ হাসদা বলেন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সমাজে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রতি গ্রামে সাত সদস্যের একটি করে পরিচালনা কমিটি (বিচারিক) থাকলেও এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন মিশনারিরা। এমনকি নতুন খ্রিস্টানদের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কমিটির বিচার অমান্য করতেও বলা হচ্ছে। এটা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরা মেনে নিতে পারছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ধর্ম ও সংস্কৃতি নিয়ে নব্য খ্রিস্টানদের সঙ্গে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের দূরত্ব না কমলে সংঘাতের আশঙ্কা আছে। এরই মধ্যে খ্রিস্টান ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের মধ্যে শ্রেণীগত বৈষম্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার সুফল হাসদা ও জয়পুরহাটের পাঁচবিবির  কামিনী মুর্মু বলেন, ‘খ্রিস্টান হলে প্রতি মাসে ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়ার আশায় এ অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ধর্মান্তরিত হয়েছে। তবে প্রথম দুই-এক মাসে কিছু অর্থ পাওয়া গেলেও এখন কিছুই না পাওয়ায় আমরা হতাশ। অনেকেই এখন প্রাচীন ধর্মে ফিরতে আগ্রহী হয়ে উঠছে।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উত্তরাঞ্চলের দিনাজপুর জেলায় ১৮৮০ সালে ব্যাপ্টিস্ট  মিশনের কাজ প্রথম শুরু হয়। এ মিশনের প্রধান জেন এন দত্ত ১৯০৭ সালে প্রথম চেষ্টায় ২৩ জন সাঁওতালকে খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত করেন। এরপর থেকে এ প্রক্রিয়া চলে আসছে। যখন থেকে শুরু কয়েকটি নৃতাত্ত্বিক গবেষণা থেকে জানা যায়, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের ধর্মান্তর করতে উত্তরাঞ্চলের ১৯টি ব্যাপ্টিস্ট মিশনের ৩৫৮টি শাখা কাজ করে যাচ্ছে। ধর্মান্তর কর্মসূচিতে মিশনারি সহায়তাপুষ্ট আরো ১৫৭টি বেসরকারি সংস্থা পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছে। এর
মধ্যে রাজশাহী অঞ্চলে কাজ করছে সাতটি। রোমের ভ্যাটিকান থেকে ১৯৯০ সালের ৯ জুন রাজশাহীকে ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের ‘ষষ্ঠ ধর্মপ্রদেশ’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে এ অঞ্চলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের ধর্মান্তরের কাজ আরো জোরদার হয়।

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আঞ্চলিক সমন্বয়ক ও নৃতাত্ত্বিক গবেষক ড. আজিজুল হক বলেন, উত্তরাঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের মধ্যে ৬০ ভাগই সাঁওতাল। অভাবের তাড়নায় জমি-ভিটা হারিয়ে অনেকেই নিঃস্ব, সহায়-সম্বলহীন। পরিবার-পরিজন নিয়ে গায়ে-গতরে খেটেও তারা ক্ষুধা ও অন্যান্য মৌলিক চাহিদা মেটাতে পারছে না। ফলে সামান্য অর্থের প্রলোভনেই তারা নিজ ধর্ম ছেড়ে খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষিত হচ্ছে।

একটি গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে ড. আজিজুল হক জানান, চিরায়ত সাঁওতাল ও খ্রিস্টান সাঁওতালদের মধ্যে ‘মূল্যবোধের দ্বন্দ্ব’ সৃষ্টি হয়েছে। সাঁওতাল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরা তাদের আদিকালের ধর্ম ‘সারিসারনা’ বা সর্বপ্রাণবাদে বিশ্বাসী। প্রাচীন বটবৃক্ষ, বড় গাছ, চন্দ্র-সূর্য, আগুন ও খোলা স্থানে মাটির মণ্ডপ তৈরি করে তারা পূজা-অর্চনা করে থাকে। আর খ্রিস্টানরা গির্জায় গিয়ে প্রার্থনার মাধ্যমে ধর্ম পালন করে।

তানোর ও মহাদেবপুর থানায় যোগাযোগ করে দেখা গেছে, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের পক্ষ থেকে খ্রিস্টান মিশনারির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থানায় নেই।

জেলা প্রশাসক বললেন বিধি-নিষেধ নেই

রাজশাহীর জেলা প্রশাসক বলেন, ‘বিভিন্ন রকমের লোভ দেখিয়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের ধর্মান্তর করা হচ্ছে, সেটা জানি। কিন্তু ধর্মান্তরে রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো বিধি-নিষেধ নেই। কারণ, এ দেশের সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও যেকোনো নাগরিকের যেকোনো ধর্ম গ্রহণের অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া আছে।’ তিনি বলেন, ‘যেহেতু মিশনারিরা সরকারের অনুমতি নিয়েই ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে এ দেশে আসে, তাই আমরা তাদের কাজে বাধা দিতে পারি না।’

দেড় হাজার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণহীন

খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রায় দেড় হাজার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর সরকারের  সরাসরি কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। মিশনের হয়ে কাজ করতে আসা বিদেশি নাগরিকদের ভিসার বিষয়ে সুপারিশ করা ছাড়া ধর্ম মন্ত্রণালয় এদের সম্পর্কে আর কিছুই জানে না। মিশনগুলো পরিচালনার জন্য কোথা থেকে কিভাবে টাকা আসে, সেই টাকা দিয়ে কী হচ্ছে, অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে কাউকে ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে কি না- এ নিয়ে কোনো তথ্য নেই মন্ত্রণালয়ের কাছে। এমনকি মিশনগুলোর প্রকৃত সংখ্যাও মন্ত্রণালয়ের হাতে নেই।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, দেশের অন্যান্য সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মতোই মিশনারিগুলো চলছে। অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষা দেওয়া হচ্ছে কি না- এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। কেউ অভিযোগ করলে অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে। তিনি বলেন, নানা সময়ে মিশনগুলোতে বিদেশি নাগরিকের আগমন উপলক্ষে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ প্রয়োজন হয়। গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে ভিসার বিষয়ে সুপারিশ করা হয়ে থাকে।

মিশনগুলো বিদেশ থেকে প্রতিবছর কী পরিমাণ অর্থ নিয়ে আসছে- এ বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে সচিব বলেন, অর্থের বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক দেখছে কি না জানি না, তবে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি দেখা হয় না।

বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব নির্মল রোজারিও বলেন, আমাদের ধর্মীয় কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে কাউকে ধর্মান্তরিত করা হয় না।

খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য বাপ্পী সমাদ্দার বলেন, অর্থের বিনিময়ে খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষা দেওয়া হচ্ছে- এ ধরনের কোনো খবর আমাদের কাছে নেই। আমরা মিশনের পক্ষ থেকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্যানিটেশনসহ নানা ধরনের সেবামূলক কাজ করে থাকি।

বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে ৬০ মতবাদে (ডিনোমিনেশন) বিশ্বাসী খ্রিস্টান সম্প্রদায় রয়েছে। প্রতিটি সম্প্রদায়ের রয়েছে আলাদা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বড় এবং তুলনামূলক ছোট ছোট ভাগ আছে। বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ক্যাথলিক চার্চ, বাংলাদেশ ব্যাপটিস্ট চার্চ সংঘ, বাংলাদেশ ব্যাপটিস্ট ফেলোশিপ, অ্যাংলিকান চার্চ অব বাংলাদেশ, মেথডিস্ট চার্চ অন্যতম। এ ছাড়া তুলনামূলক ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ইভানজেলিক চার্চ, ওমেগা চার্চ ও প্যাটিকস্টাল চার্চ অন্যতম।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কয়েক নেতা বলেন, বড়  প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে কাউকে ধর্মান্তরিত করে না। কেউ স্বেচ্ছায় খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণে আগ্রহী হলে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নিয়মানুযায়ী ধর্মান্তরের ব্যবস্থা করা হয়। তবে ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থসহ নানা ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন ধর্মের গরিব লোকদের খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষা দিচ্ছে বলে তারা শুনেছেন।

তারা বলেন, তুলনামূলক ছোট চার্চগুলোর প্রধানরা বিভিন্ন এনজিওর প্রধান  হিসেবে কাজ করছেন। তারা চার্চ ও এনজিওকে একসঙ্গে গুলিয়ে ফেলছেন। সরাসরি এনজিওর সঙ্গে সম্পৃক্ত চার্চগুলো অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ অন্য ধর্মের দুস্থদের খ্রিস্ট ধর্মে ধর্মান্তরিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। সুনির্দিষ্ট প্রকল্প দেখিয়ে এসব এনজিওর মাধ্যমে নিয়ে আসা টাকার একটি অংশ ধর্মান্তরের কাজে ব্যয় করা হচ্ছে বলে তারা নানাভাবে খবর পেয়েছেন। চার্চের সঙ্গে জড়িত এনজিওগুলোকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী প্রধান  এলাকাগুলোতে অধিক হারে প্রকল্প গ্রহণ করতে দেখা যায়। এসব এলাকার অনগ্রসর মানুষের উন্নয়নের নামে বিদেশ থেকে নিয়ম মেনেই তারা টাকা নিয়ে আসছে। বিদেশ থেকে আনা টাকার বেশির ভাগই ব্যয় করা হচ্ছে নির্দিষ্ট প্রকল্পে। অর্থ ব্যয়ের হিসাবও রাখছে যথাযথভাবে। যে কারণে এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর কাজেও তারা স্বচ্ছ থাকছে। তবে তারা মোট টাকা থেকে কিছু সরিয়ে নিয়ে ধর্মান্তরের কাজে ব্যবহার করছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষা দেওয়ার পর কিছু দিন তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে সংস্থাগুলো কৌশল অবলম্বন করে। নতুন কেউ খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করলে প্রথমদিকে তাকে খুব সমাদর করা হয়।
ধর্ম গ্রহণের খবরটি ছড়িয়ে দেওয়া হয় চারদিকে। স্থানীয় মানুষের মুখে মুখেও খবরটি ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে কিছুদিনের মধ্যেই ওই ব্যক্তি বা তার পরিবার খ্রিস্ট ধর্মের অনুসারী হিসেবে পরিচিতি পেয়ে যায়। পরিচিতি পাওয়া পর্যন্ত তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। এর পরই সংস্থাটি ওই পরিবারের পেছন থেকে আর্থিক সহায়তা পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করে নেয়। এভাবেই তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

নেতারা বলেন, সরকারি হিসাবে বাংলাদেশে খ্রিস্ট ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা  মোট জনসংখ্যার দশমিক ৪ শতাংশ, অর্থাৎ সাত থেকে আট লাখ। তবে দেশে বর্তমানে ২০ থেকে ২৫ লাখ মানুষ খ্রিস্ট ধর্ম পালন করছে। জন্মহার বৃদ্ধির মাধ্যমে এ সংখ্যা বাড়েনি। নানাভাবে বিভিন্ন ধর্মের দুস্থ মানুষকে ধর্মান্তরিত করেই এ সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।

রাজশাহী বাগানপাড়া চার্চের (ব্যাপটিস্ট) ফাদার পাওলো খিচেরি বলেন, আমরা  কাউকে জোর করে ধর্মান্তরিত করি না। আমরা নিপীড়িত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের সেবা দিয়ে থাকি। তারা আমাদের সেবায় মুগ্ধ হয়ে ধর্মগ্রহণ করে।

তিনি আরো বলেন, আমি ব্যাপটিস্ট মিশনে ৩৬ বছর ধরে কাজ করছি। আর ২২ বছর ধরে
রাজশাহীর দায়িত্বে আছি। এ সময়ে অসংখ্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী খৃস্টান ধর্ম গ্রহণ করেছেন।

প্রলোভন দেখিয়ে ধর্মান্তরিত করা অমানবিক

ফাদার কোড়াইয়া প্রতীক ইজাজ ‘যে মানুষ নিজের ধর্ম সম্পর্কে জানে না, যে  মানুষ ২০০ টাকার জন্য নিজের ধর্ম বিক্রি করে দেয়, তার অর্থ হলো নিজ ধর্মের প্রতি তার বিশ্বাস নেই। গভীরতা নেই। প্রলোভনে পড়ে যারা নিজ ধর্ম ছেড়ে অন্য ধর্মে ধর্মান্তরিত হন, ধর্ম তাদের কাছে ক্ষণস্থায়ী। ধর্মের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হলে যেকোনো চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। আর যদি কেউ দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে, নানা প্রলোভন দেখিয়ে, অন্যকে নিজ ধর্মে ধর্মান্তরিত করেন, তা হলে তা হবে অমানবিক। এমনটি কখনোই উচিত নয়। কোনো ধর্মই তা বলে না।’

দেশের উত্তর জনপদের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মানুষের খ্রিস্ট ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার ঘটনাকে এভাবেই ব্যাখ্যা করলেন খ্রিস্টীয় যোগাযোগ কেন্দ্রের পরিচালক ফাদার কমল কোড়াইয়া। তিনি বাংলাদেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের একমাত্র ধর্মীয় গুরু আর্চ বিশপ পৌলিনুল কস্তার মুখপাত্র।

ফাদার বাংলাদেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি, কর্মপ্রেরণা ও অবস্থান তুলে ধরেন। ব্যাখ্যা করেন পাঁচ জেলাসহ গোটা উত্তরবঙ্গে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মানুষের খ্রিস্ট ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার ঘটনাগুলোকে। ব্যাপটিস্ট নামে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের যে গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে
ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ উঠছে, সেই গোষ্ঠী সম্পর্কেও সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেন তিনি। তবে ফাদার কমল জোর দিয়ে বলেন, ‘জোর করে বা প্রলোভন দেখিয়ে ধর্মান্তরিত করার কোনো ঘটনা আমাদের ক্যাথলিক খ্রিস্টান সম্প্রদায়ে নেই। ব্যাপটিস্টদের মধ্যেও যদি এমনটি কেউ করে থাকে তা হলেও তা বিচ্ছিন্ন দু-একটি ঘটনা। গোটা ব্যাপটিস্ট সম্প্রদায়ের দোষ নয়। খুব স্বল্পসংখ্যক ব্যাপটিস্টই হয়তো এ কাজটি করছে। কিন্তু সেটিও করা উচিত নয়। নিজ ধর্ম
পালনের স্বাধীনতা সবার আছে। নানা ধর্মের মানুষ নানা ধর্মের মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করবে। ধর্ম হবে মানবিকতা। প্রত্যেক মানুষের ধর্মই তার কাছে বড়।

খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে থাকা বিভাজন প্রসঙ্গে ফাদার কমল জানান, ১৫০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবাই ক্যাথলিক ছিলেন। এর পর এক ধর্মযাজক মার্টিন লুথার প্রতিবাদ করে বেরিয়ে প্রটেস্টান্ট নামে খ্রিস্টানদের নতুন সম্প্রদায়ের জন্ম দেন। পরে সেই প্রটেস্টান্ট থেকেই প্রায় ৬০-৭০টি ভাগে ভাগ হয়ে যান খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ। এদেরই একটি এই ব্যাপটিস্ট। এ দেশে বর্তমানে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা প্রায় পাঁচ লাখ। এদের মধ্যে সাড়ে তিন লাখ ক্যাথলিক। আর বাকি প্রায় দেড় লাখ অন্যান্য সম্প্রদায়ের। ব্যাপটিস্ট বিশপ, ফাদার ও সিস্টাররা বিয়ে করতে পারেন। তাদের পরিবার আছে। ক্যাথলিকরা তা পারেন না। দেশের গোটা খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের যিনি ধর্মীয় গুরু সেই আর্চ বিশপ এই ক্যাথলিক গোষ্ঠীর।

ক্যাথলিকদের দেশে ছয়টি ধর্ম প্রদেশ রয়েছে। এগুলো হলো- রাজশাহী, খুলনা,  দিনাজপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম। এই ধর্ম প্রদেশগুলো চলছে ফাদার, ব্রাদার ও সিস্টারদের পরিচালনায়। প্রত্যেকটি প্রদেশের একজন করে বিশপ রয়েছেন। ধর্মান্তরিত প্রসঙ্গে ফাদার কমল বলেন, ‘আমরা মানে ক্যাথলিকরা ধর্মান্তরিত করছি না। চেষ্টাও নেই। বরং দেশে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের সংস্কৃতি ধরে রাখার জন্য তাদের ভাষায় তিনটি পাঠ্যবই করেছি। ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমাদের নিজস্ব ভাষায় পাঠ্যবই। সরকার স্বীকৃত দেশে কোনো ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের মাতৃভাষা নিয়ে প্রথম পাঠ্যবই এগুলো। ২০০৭ সালের ৩ অক্টোবর প্রকাশ হয়। তাদের সংস্কৃতি শিল্পবোধের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রেখেই তা টিকিয়ে রাখার জন্য কাজও করছি।’ মিশনারি নামে যে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ উঠছে, সে প্রসঙ্গে ফাদার কমল বলেন, ‘খ্রিস্টান সম্প্রদায়ে মিশনারি নামে কিছু এখন আর এ দেশে নেই। শুরুর দিকে যারা এই ধর্ম প্রচারের জন্য এ দেশে আসতেন তাদেরই মিশনারি বলা হতো।’ তিনি বলেন, ‘যদি কোনো ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হন বা জোর করে কিংবা প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ধর্মান্তরিত করা হয়, তা হলে ওই অঞ্চলের যিনি ব্যাপটিস্ট প্রধান তাঁকেই বলা উচিত। এমনটি ঘটলে আমি বলব, এটা নৈতিকতা নয়। এটা কোনো ধর্ম নয়।’

ফাদার কমল বলেন, ‘আমরা ক্যাথলিকরা যিশুখ্রিস্ট যেভাবে ভালোবাসা, সেবা ও শিক্ষার মধ্য দিয়ে মানুষের সেবা করতেন, ধর্মের প্রচার করতেন, তেমনটিই  করি। আর ধর্ম মানে এ তিনটিই হওয়া উচিত। সেবার অর্থ কে হিন্দু কে মুসলমান তা নয়। সেবা মানে মানুষ। আর আমরা কখনোই এ কাজগুলো ধর্মান্তরিত করার লক্ষ্য নিয়ে করি না। আমাদের লক্ষ্য মানুষের সেবা।

ফাদার কমল কোড়াইয়া গোটা খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষের উদ্দেশে বলেন, ‘এখন আমরা খ্রিস্টধর্ম পালন না করে ব্যবহার করছি। ধর্মপালন হলো নিঃস্বার্থভাবে সৃষ্টিকর্তার নির্দেশ ও শিক্ষা অনুসারে জীবনযাপন করা। আর ধর্ম ব্যবহারের মধ্যে স্বার্থশূন্যতা থাকে না। থাকে স্বার্থপরতা। থাকে ঈশ্বরকে নয়, নিজেকে প্রচার প্রসারের হীন বাসনা। তাই এখানে থাকে বিচ্ছিন্নতা। পাপময়তা। অশান্তি। তাই বিভক্ত খ্রিস্টমণ্ডলীয় একতার জন্য আমাদের আরো বেশি প্রার্থনা করতে হবে।

‘ইসলামের আদর্শ তুলে ধরুন : পেশ ইমাম

ধর্মান্তরের বিষয়ে কোনোরকমের প্রতিহিংসামূলক আচরণে না গিয়ে সবার সামনে  ইসলামের মূল আদর্শ তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম মুফতি মুহাম্মদ মুহিবুল্লাহিল বাকি। বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। এটিই হচ্ছে সমস্যা সমাধানের, সংকট থেকে উত্তরণের সর্বোত্তম দিকনির্দেশিকা। ইসলাম কোনো সমস্যা তৈরিকে সমর্থন করে না। কারো প্রতি প্রতিহিংসামূলক মনোভাব কিংবা আচরণ ইসলামের দৃষ্টিতে কাম্য নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে খ্রিস্টান মিশনারিদের ধর্ম প্রচার বা ধর্মান্তরের বিষয়টি তাদের ধর্মীয় দৃষ্টিতে হয়তো সঠিক কাজ। এ ক্ষেত্রে মুসলমানদের ব্যর্থতা হচ্ছে, তারা তাদের কাজ ঠিকমতো করছে না।

তিনি বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলে সাঁওতাল ও অন্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মান্তরে  খ্রিস্টান মিশনারির তৎপরতা অন্য ধর্মাবলম্বীদের কাছে ইসলামের মর্মবাণী পৌঁছাতে আমাদের ব্যর্থতা প্রমাণ করলেও তার বিপরীতে কোনো হিংসাত্মক মনোভাব সৃষ্টি ইসলাম কোনোভাবেই সমর্থন করে না। সেটা হলে অন্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ইসলামের প্রতি আরো বিরূপ মনোভাব তৈরি হবে। এটা আমাদের কাম্য নয়। আমাদের উচিত সবার কাছে ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরা, যাতে অন্য ধর্মাবলম্বীরাও ইসলামের পথে আসে।’

সূত্র: কালের কণ্ঠ, ২০ জানুয়ারি, ২০১০ ও সিএইচটি রিসার্চ ফাউন্ডেশন আর্কাইভ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন