বন্যার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেন নি দীঘিনালার সারামনি
দীঘিনালা উপজেলায় সাম্প্রতিক সময়ে ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় ঘরবাড়ি প্লাবিত হওয়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেনি মোছা.সারামনি। সে উপজেলার ছোট মেরুং এর ১নং কলোনি জামে মসজিদের ঈমাম মাওলানা শফি আহম্মদের মেয়ে। সে ২০২১ শিক্ষাবর্ষে দীঘিনালা সরকারি ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। তবে সারামনির ইচ্ছা পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়া।
জানা যায়, মোছা. সারা মণি গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় ১৭ হাজার ৮ শত ৪২তম মেধাস্থান নিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে লোক প্রশাসন বিভাগে উত্তীর্ণ হয়। গত ১০ আগস্ট বৃহস্পতিবার অনলাইনে ফি প্রদানও করেন।
ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত শুক্রবার (১১ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ছিলো ভর্তি হওয়ার জন্য সকল প্রকার কাগজপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন।
কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সময়মত এসে কাগজপত্র জমা দিতে না পারায় ভর্তি হতে পারেননি তিনি । এরপর শনিবার গিয়ে যোগাযোগ করলে তাকে ভর্তি নেয়া সম্ভব নয় বলে জানানো হয়।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে সারা মণি বলেন, বন্যায় আমাদের ঘরবাড়িতে পানি উঠে যায়। রাস্তাঘাট সব পানিতে তলিয়ে যায়। গাড়ি চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। আমার কুমিল্লা গিয়ে কাগজপত্র জমা দেওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। আমার অন্য কোনো ভার্সিটিতে চান্স হয়নি, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমি কুবিতে ভর্তি হতে পারলাম না। আমি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই। আমাকে বিশেষ বিবেচনায় একটা সুযোগ দেওয়া দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
ভর্তি পরীক্ষার টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান ড. মাহমুদুল হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জিএসটির নিয়ম হচ্ছে সকাল ৯টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কাগজপত্র জমা নেয়া। শিক্ষার্থী অথবা অভিভাবক যে কেউ এসে মার্কশিট জমা দিলেই এক্ষেত্রে হয়ে যায়। সে আমাদের কারো সাথে যোগাযোগ করে নাই, তবুও আমরা তার জন্য অপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু সে নির্দিষ্ট সময়ে আসতে পারে নাই। যেহেতু সে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তার কাগজপত্র জমা দেয় নাই, সেহেতু জিএসটি থেকেই তার ডাটাটা অটো ডিলিট হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার সুযোগ নেই।
এ ব্যাপারে ১নং মেরুং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহামুদা বেগম লাকী জানান, সারামনির পড়াশুনা চালিয়ে নিতে এবং তার উচ্চ শিক্ষার জন্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির জন্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, এই ব্যাপারে আমরা জিএসটির সাথে কথা বলবো।
উল্লেখ্য, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে জলবদ্ধতা তৈরি হয়েছে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলায়। বৃষ্টির পানি এবং পাহাড়ি ঢলের কারণে এ চার জেলার অধিকাংশ রাস্তাঘাটে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।