বাঘাইছড়িতে জমে উঠেছে পাহাড়ি পশুর বিশাল কোরবানির হাট
রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে জমজমাট হয়ে উঠেছে পাহাড়ি গরুর বিশাল কোরবানির হাট। উপজেলার প্রবেশ পথেই প্রায় ৫ একর জায়গা জুড়ে এই হাট স্থাপন করেছে বাঘাইছড়ি পৌরসভা। নির্ধারিত হাটে কোরবানির পশুর জায়গা সংকুলান না হওয়ায় সারি সারি পশু বেধে রাখা হয়েছে সড়কের দুই পাশে। এতে বাঘাইছড়ি দিঘিনালা সড়কে যানচলাচল কিছুটা বিঘ্ন হচ্ছে।
বুধবার (৬ জুলাই) সকালে উপজেলার মডেল টাউন গরুর হাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায় এই চিত্র। এছাড়াও উপজেলার আরো ৩টি হাট করেঙ্গাতুলী, বাঘাইহাট, দুরছড়ি বাজারেও একই চিত্র দেখাযায়।
উপজেলার ৮ টি ইউনিয়ন ছাড়াও সিমান্তবর্তী সাজেক, দোসর, নিউলংকর, মাঝি পাড়া, হালিমপুর, কচুছড়ি, বেটলিং সহ দূরদূরান্ত থেকে এসব গরু ৭ থেকে ৮ দিন হেটে উপজেলা সদরে পশুর হাটে আসছেন স্থানীয় পাহাড়ি খামারিরা। কোন ধরনের মোটাতাজাকরণ ঔষধ ছাড়াই পাহাড়ি এসব গরু বনে স্বাধীনভাবে বেড়ে উঠায় দেখতে বেশ রিষ্টপুষ্ট। তাই সহজেই ক্রেতাদের মন কাড়ছে এসব গরু। বাজার ইজারাদার আব্দুর রহমান জানান মাঝারি সাইজের এক একটি গরু বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ হাজার এবং বড় সাইজের গরু বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। বিভিন্ন সাইজের গরুর পাশাপাশি এই হাটে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ছাগলও একেকটি বড় সাইজের খাসি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায়।
দেশি পাহাড়ি গরুর পাশাপাশি হাটে স্থান পেয়েছে বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির বিশাল দেহের গরু। বিদেশি এসব একএকটি গরুর দাম চাওয়া হয়েছে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা। তবে স্থানীয় ও বাহির থেকে আসা ব্যবসায়ীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে পাহাড়ি দেশি গরুই। তবে বাহির থেকে আশা ব্যাবসায়ীরা অনেকেই গরুর জন্য জেলা পরিষদ ফান্ড, বাজার ফান্ড, পৌরসভার ইজারাদার টোলের নামে প্রতিটি গরুর জন্য ১২ থেকে ১৫শত টাকা আদায় করা হয়। বাঘাইছড়ি বাজার চৌধুরী আলী হোসেন বলেন বাজারে এবার প্রচুর পাহাড়ি গরু উঠছে, আইনশৃঙ্খলা পরিবেশ ও ভালো আমরা ধারণা করছি এবার শত কোটি টাকার কোরবানির পশু কেনা-বেচা হবে।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেয়া রহয়েছে বাড়তি সতর্কতা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমানা আক্তার বলেন, কোরবানির পশুর হাটে যাতে কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সে দিকে আমাদের নজর রয়েছে, এছাড়াও পশু কেনা-বেচায় কেউ যেন জাল টাকার লেনদেন করতে না পারে সেদিকেও পুলিশের কড়া নজরদারি রয়েছে।
প্রতি বছর কোরবানি মৌসুমে প্রায় ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকার পশু কেনা বেঁচা হলেও এবার অর্শধত কোটি ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানালেন বাঘাইছড়ি পৌর মেয়র জমির হোসেন। মেয়র বলেন প্রাকৃতিক ভাবে পাহাড়ি পরিবেশে বেড়ে উঠা এসব গবাদি পশুর চাহিদা সমগ্র দেশব্যাপী রয়েছে, এবার হাটে দেশীয় এসব গরুর ব্যাপক সরবরাহ রয়েছে দামও বেশ ভালো তাই ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের মুখেই হাঁসি। পৌরসভার পক্ষ থেকে হাটের পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশের পাশাপাশি নিরাপত্তার স্বার্থে আনসার ভিডিপির সদস্য ও মোতায়েন করা হয়েছে।