বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোরবানির ঈদ

fec-image

আসছে ত্যাগের উৎসব ‘ঈদুল আযহা।’ ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এই দিনে, ঈদগাহে গিয়ে দুই রাকাত ঈদুল আযহার নামাজ আদায় শেষে গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ বা উট আল্লাহর নামে কোরবানি দিবেন। মুসলিমদের বছরে দ্বিতীয় উৎসব ঈদুল আযহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদ। ত্যাগের উৎসব হিসাবে পরিচিত ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে প্রতি বছর আল্লাহর আদেশ অনুসারে মুসলিমরা ছাগল, গরু, ভেড়া এবং অন্যান্য গবাদি পশু কুরবানি করে।

এদিন পৃথিবীরজুড়ে শুরু হয় ঈদ আনন্দ। কোরবানির পর পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং দরিদ্রদের মধ্যে মাংস বিলিয়ে দিয়ে দিনটি উদযাপন করা হয়।

বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা একইভাবে ঈদুল আযহা উদযাপন করে। এই বছর আগামী ২৯ জুন আমাদের দেশে পালন করা হবে ঈদুল আযহা।

ঈদুল আযহার নির্দিষ্ট ঐতিহ্য থাকা সত্ত্বেও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মুসলিমরা ধর্মীয় উৎসবটির সঙ্গে আঞ্চলিক সাংস্কৃতিকে একত্রিত করে তাদের নিজস্ব কায়দায় তা পালন করে থাকেন।
মধ্যপ্রাচ্য

ইয়েমেন থেকে সিরিয়া, এই দেশগুলোতে ঈদের জন্য তৈরি হয় ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি। খাবার সব ঈদ উদযাপনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। দেশগুলোর অনেক সম্প্রদায়ের কিছু ঐতিহ্যবাহী নাস্তা এবং খাবার রয়েছে।

যা শুধুমাত্র ছুটির দিনগুলোর জন্য প্রস্তুত করা হয়। রাস্তায় দোকানের সামনে ঝুলন্ত জিলাপি থেকে শুরু করে পাগড়ি ও পোশাক বিক্রির জন্য রাখা হয়। লিবিয়ার ঘোড়সওয়ারা ঈদের দিনে পরিধান করে আলাদা ধরনের পোশাক।

এশিয়া

ধূপ জ্বালানো থেকে শুরু করে মশাল পর্যন্ত, পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় উদযাপন একটি সংবেদনশীল অভিজ্ঞতা। পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তান এবং এর বাইরেও ঈদের আগের রাতে মেহেদি দিয়ে হাত সাজানো একটি সাধারণ দৃশ্য। আমরা বাংলাদেশিরাও হাত সাজাই। তরুণী থেকে শুরু করে বয়স্ক নারীরা সবাই মেতে ওঠে এই আনন্দে। এই দেশগুলোতে প্রকাশ্যেই পশু জবাই করা হয়। অনেক দেশে এমনটা হয় না।

চীনের হুই মুসলিম পুরুষরা চীনের বেইজিংয়ের ঐতিহাসিক নিউজি মসজিদে ঈদের নামাজের পরে ‘শেক সমাধিতে’আগরবাতি জ্বালাচ্ছেন। ছবি : কেভিন ফ্রেয়ার/গেটি ইমেজ

আফ্রিকা

আফ্রিকায় আইভরি কোস্ট থেকে কেনিয়া পর্যন্ত এবং অন্যান্য অনেক মুসলিম দেশে পশু কুরবানি করে বিলি করে দেয়া হয়। ঈদের দিন নাইজেরিয়ার কানো-এর আমিরকে স্বাগত জানানোর অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকার একটি এনজিওতে সুবিধা বঞ্চিতদের জন্য বিশেষ খাবার তৈরি করা হয়।

আইভরি কোস্টের আবিদজানের পোর্ট বুয়েটে ঈদুল আযহার পশু ট্রাক থেকে নামানো হচ্ছে। ছবি : রয়টার্স

ল্যাটিন আমেরিকা

পিউ রিসার্চ সেন্টারের মতে, লাতিন আমেরিকায় প্রায় ৬০ মিলিয়ন মুসলিম রয়েছে। এই অঞ্চলের এটি একটি সংখ্যালঘু ধর্ম। দেশগুলোর অভিবাসী এবং আদিবাসীরা ঈদ পালন করে। উদাহরণস্বরূপ, মেক্সিকোতে মুসলিম মোট জনসংখ্যার ০.২ শতাংশেরও কম। এখানে ঈদ উদযাপন খাদ্য, প্রার্থনা, এবং পরিবারের সময়কে ঘিরে আবর্তিত হয়।

উত্তর আমেরিকা

পিউ রিসার্চ সেন্টারের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় চার মিলিয়ন মুসলিম রয়েছে। ২০২২ থেকে কানাডিয়ান সরকারের তথ্য অনুয়াযী, কানাডায় মুসলিম ১.৭ মিলিয়নেরও বেশি। এদেশে মুসলিম শরণার্থী এবং অভিবাসীসহ বহু সাংস্কৃতির মানুষ ঈদের সকালে মসজিদে জমায়েত হয়।

ইউরোপ

শরণার্থী এবং অভিবাসীসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায় মহাদেশ জুড়ে ঈদ উদযাপন করে। আফ্রিকা, এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের কিছু অংশ থেকে যারা, সহিংসতা বা নিপীড়ন থেকে পালিয়েছে তারা ঈদ উদযাপন করবে সাহায্য গোষ্ঠীর ব্যবস্থার মাধ্যমে। ইউক্রেনে মুসলিম সেনারা রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যেই ঈদ উদযাপন করবে।

অস্ট্রেলিয়া
২০২১ সালের সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, অস্ট্রেলিয়ায় ৮ লাখের বেশি মানুষ মুসলিম। সিডনির বিভিন্ন দোকানে অভিবাসী সম্প্রদায়ের জামাকাপড় এবং উৎসবের অন্যান্য জিনিস বিক্রির জন্য সাজায়। সেখানে স্থানীয় মুসলিম গোষ্ঠীগুলো অংশ নেয়।

সূত্র : আলজাজিরা

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ঈদ, কোরবানি, দেশ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন