মহেশখলীর বন রক্ষায় নেই টহল গাড়ী ও চেকপোস্ট

বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালী, যেখানে উপজেলা বিস্তৃত সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য টিকে থাকার লড়াই করছে। বন রক্ষায় বন বিভাগের দায়বদ্ধতা থাকলেও প্রয়োজনীয় যানবাহন না থাকায় কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

প্রায় এক যুগ ধরে মহেশখালী বন বিভাগের একমাত্র টহল গাড়িটি অকেজো হয়ে পড়ে থাকলেও তা সংস্কার বা নতুন গাড়ি সংগ্রহের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।

মহেশখালী রেঞ্জের আওতায় প্রায় ১৮ হাজার একর সংরক্ষিত বনাঞ্চল রয়েছে, যেখানে পাঁচটি বিট পরিচালিত হয়। কিন্তু এসব এলাকায় বন সংরক্ষণ কার্যক্রম চালানোর মতো পরিবহন ব্যবস্থা নেই। একমাত্র টহল গাড়িটি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে থাকায় বন বিভাগের কর্মীরা অভিযানে নামতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

বাধ্য হয়ে অনেকেই ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করে দায়িত্ব পালন করছেন, যা কার্যক্রম পরিচালনায় যথেষ্ট সীমাবদ্ধতা তৈরি করছে। পর্যাপ্ত যানবাহন ও চেক পোস্টের অভাবে বনভূমির ওপর নানা অবৈধ কার্যক্রম বাড়ছে। শাপলাপুর, হোয়ানক, কালারমারছড়া ও ছোট মহেশখালীসহ বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় প্রতিনিয়ত গাছ কাটা, পাহাড় ধ্বংস, বন্য প্রাণী পাচার ও পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির ঘটনা ঘটছে।

এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত প্রভাবশালী মহল বন ও পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে, কিন্তু বন বিভাগ কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না। স্থানীয়ভাবে অভিযোগ রয়েছে যে, বন বিভাগের কার্যক্রমে অব্যবস্থাপনা এবং ঊর্ধ্বতন মহলের উদাসীনতাই মূল সমস্যা। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা একাধিকবার টহল গাড়ির প্রয়োজনীয়তার কথা বিভাগীয় মিটিংয়ে উপস্থাপন করেছেন, কিন্তু এখনো কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

মহেশখালী থেকে গাছ ও বন্য প্রাণী পাচার রোধে বন বিভাগের নিজস্ব চেকপোস্ট নেই। চালিয়াতলী স্টেশন মহেশখালীর প্রধান প্রবেশদ্বার হলেও সেখানে তল্লাশি ব্যবস্থা না থাকায় দ্রুতগতিতে পাচার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বন বিভাগের কক্সবাজারের উপকূলীয় সহকারী বন সংরক্ষক সাজমিনুল ইসলাম জানান জানিয়েছেন, চেকপোস্ট স্থাপনের জন্য আবেদন করা হবে, তবে তা জানিয়েছেন, অনুমোদিত হবে কি হবে না সেটা উর্ধতন কর্তৃপক্ষ দেখবে।তিনি আরও বলেন দীর্ঘ দিন ধরে টহল গাড়ি অকেজো হয়ে পড়ে থাকার বিষয়টি বিভাগীয় মিটিং বলেছি।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, টহল গাড়ির বিষয়টি ইতিমধ্যে স্থানীয় রেঞ্জ থেকে আমরা অবগত হয়েছি। আশা রাখছি দ্রুততম সময়ে গাড়ির ব্যবস্থা করা হবে। মহেশখালীতে বন সংরক্ষণ ব্যবস্থা আরও জোরদার করা না হলে, শিগগিরই দ্বীপটির পরিবেশগত ভারসাম্য ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এখনই উদ্যোগ নেওয়া জরুরি, নইলে ভবিষ্যতে এই বিপর্যয় ঠেকানো অসম্ভব হয়ে পড়বে।

ঘটনাপ্রবাহ: চট্টগ্রাম, বন কর্মকর্তা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme/ar_framework/functions_custom.php on line 255

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme/ar_framework/functions_custom.php on line 255
আরও পড়ুন