মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পেছনে যেসব কারণ দেখছেন বিশ্লেষকরা

fec-image

কক্সবাজারের উখিয়ায় ক্যাম্পের ভেতরে ঢুকে রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা হয়েছে। বুধবার রাত পৌনে ৯টার দিকে উখিয়া কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় ইস্ট-ওয়েস্ট ১ নম্বর ব্লকের বাড়ির সামনে তাকে হত্যা করা হয়।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলামের মতে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পেছনে তিনটি কারণ থাকতে পারে। এ তিনটি কারণ সামনে রেখে তদন্ত করা হলে মুহিব্বুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, মুহিবুল্লাহ ক্রমাগতভাবে রোহিঙ্গাদের একক নেতৃত্বে ছিলেন, জাতিসংঘ গিয়ে বৈঠক করেছেন। জেনেভায় গিয়েছিলেন। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন। তার জনপ্রিয়তা কারণে অন্যান্য যেসব রোহিঙ্গারা নেতৃত্ব দিয়ে সামনে আসতে পারছে না তাদের একটি গ্রুপ এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটাতে পারে।

রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ সবসময় রোহিঙ্গাদের মাঝে রোহিঙ্গা জাতীয়তাবোধ জাগ্রত করার চেষ্টা করতেন। কিন্তু এর বিপরীত এ যাদের অবস্থান তারাও এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে।

এ ছাড়াও মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পক্ষে সোচ্চার ছিলেন। কিন্তু কিছু দেশ দেশ ভূ-রাজনীতি বা ভূ-কৌশলের কারণে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিপক্ষে রয়েছে। সেসব দেশও মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পেছনে কলকাঠি নাড়তে পারে। জড়িত থাকতে পারে মিয়ানমার সরকারও। ধারণা নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলামের।

তিনি এ তিনটি বিষয় মাথায় রেখে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি তদন্ত করা হলে দ্রুত হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব উল্লেখ করে প্রত্যাবাসনের পক্ষে সক্রিয় থাকা রোহিঙ্গা নেতাদের নিরাপত্তা জোরদার করার পরামর্শ দিয়েছেন এ নিরাপত্তা বিশ্লেষক।

এ বিষয়ে কক্সবাজারে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, রোহিঙ্গা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ড ঘিরে যেসব অভিযোগ বা কথাবার্তা আমরা শুনতে পাচ্ছি।সব বিষয় মাথায় রেখে তদন্তের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করা হবে। মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ড পরবর্তী যাতে বিশৃঙ্খলা না হয় এ জন্য সর্বস্তরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। একই সঙ্গে কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন এ বিষয়ে কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কেউ যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সূত্র: যুগান্তর

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন