রাঙামাটিতে এপিবিএন আঞ্চলিক কার্যালয় উদ্বোধনকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

যারা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী করছে তাদের আইনে মুখোমুখি করবো এটাই আমার ওয়াদা

fec-image

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আপনাদের কাছে আমরা ওয়াদা করছি, আমাদের পুলিশ বাহিনী আপনাদের পাশে থাকবে।  আপনারা প্রতিবাদ করুন, প্রতিরোধ করুন। আপনারা যে যেখানে পারুন এই সন্ত্রাসীদের চিহিৃত করে আমাদেরকে ইনফরমেশন দিন। আমরা অবশ্যই এই সন্ত্রাসী, এই চাঁদাবাজ  নামে বেনামে যারা চাঁদাবাজি করছে, কিংবা রক্তপাত করছে তাদেকে আমরা আইনের  মুখোমুখি করবো, এটাই আমাদের ওয়াদা। তাদেরকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে  এবং আইন অনুযায়ী তাদেকে শাস্তি পেতে হবে।

গত ২৬ মে রাঙামাটিতে এপিবিএন আঞ্চলিক কার্যালয় উদ্বোধনকালে তিনি একথা বলেন।

এসময় তিনি বলেন, আমি আমার বন্ধু, আমাদের আপনাদের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈ সিং যিনি আছেন আজকে বিশেষ অতিথি হিসেবে, তিনি আমাকে কয়েক বছর ধরে বলছিলেন যে, আমাদের এই তিন জেলার দিকে একটু তাকান। আসুন, দেখুন, তারই আহ্বানে আমি দুই বছর আগে এসেছিলাম রাঙামাটিতে।

আপনাদের কারবারী এবং হেডম্যানদের নিয়ে আলাপ করেছিলাম। সেখানে আপনাদের দুঃখের কথা, আপনাদের কষ্টের কথা, বেদনার কথাগুলো জানিয়েছিলেন। আমরা সেগুলো নিয়ে কিছু কাজ করেছি। সেজন্যই আজকে আসা। সেজন্যই আপনাদের আর্ম পুলিশ ব্যাটালিয়ন। এর হেডকেয়াটার রাঙামাটি এবং তিন জেলায় অফিস স্থাপন করা হবে।

আর্মিরা শান্তিচুক্তি অনুযায়ী সেনাবাহিনীর যে ক্যাম্পগুলো ছেড়ে এসেছেন, সেই জায়গাগুলোতে পুলিশ মোতায়েত করার জন্য শান্তিচুক্তিতে যে একটা শর্ত ছিল সেই জায়গা থেকে আমরা চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সেই কাজটি করতে যাচ্ছি। তারও চলার পথে কিছু অসুবিধা হচ্ছে। কিছু বাস্তবায়ন হয়নি, কিছু বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই সবগুলোই নিয়েই যেমন আমাদের বীর বাহাদুর, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বললেন, যে আলাপ করে প্রবলেম সামনে এনে সলভ করতে হবে। টেবিলে বসে সলভ করতে হবে। গুলিতে সলভ হবে না । চাঁদাবাজিতে সলভ হবে না। আমাদের এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাও সেটাই বিশ্বাস করেন। সেই জন্য তিনি ধীরে ধীরে কাজ করছেন। তিনি স্পষ্টভাষী। তিনি সবসময়ই যেটা স্পষ্ট, যেটা সত্যি সেই কথাটিই তিনি কাউকে তোয়াক্কা না করে বলে থাকেন।

আপনাদের প্রিয় নেতা, আমাদের আওয়ামী লীগের সম্মানিত সভাপতি এই এলাকার দীপংকর তালুকদার এমপি, তিনি এখানে আছেন বক্তৃতা করেছেন। বক্তৃতা করেছেন আপনাদের আরেক প্রিয় অভিভাবক বাসন্তী চাকমা এমপি তিনিও বক্তৃতা করেছেন।

ড. বেনজির আহমদ পুলিশ  প্রধান তিনি অনেক কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে করে কিন্তু এখানে এসেছেন। আমাদের জঙ্গি দমন বলুন, সন্ত্রাস দমন বলুন, উজ্জ্বল ভূমিকা রেখে তিনি আজকে এই পার্বত্য চট্রগ্রামের এই জায়গাটিতে বসে আমরা অনেক আলোচনা করেছিলাম এবং  আলোচনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজকের এপিবিএন বাহিনী। এই জায়গাটার যেহেতু প্রেক্ষাপটটা এটটু ভিন্ন সেই জন্যই আমাদের পুলিশের পাশাপাশি আমরা এপিবিএন কেও নিয়ে আসছি এর কারণটাই হলো এটা। এটা নিয়ে আবার আপনাদের যেন কোন ভুল ভ্রান্তি না থাকে।

এপিবিএন আমাদের পুলিশ সদস্য, তারা পুলিশেরই একটি অংশ। তাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, তারা স্পেশালি ট্রেইনড। তারা পাহাড়ে, সমতলে সব জায়গায় কাজ করতে পারবে বলেই তাদেরকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। এপিবিএন আমরা এখানে দিয়ে আমরা শুরু করছি। আমাদের  যাত্রা শুরু। আমাদের টার্গেট হলো আমরা বাংলাদেশে কোন চাঁদাবাজি করতে দেবে না। আমাদের বাংলাদেশে কোন রক্তপাত হতে দেবে না। আমরা এত চ্যালেঞ্জ  মোকাবেলা করেছি, জঙ্গি দমন করেছি, সন্ত্রাসীদের ঘরে ফিরিয়ে দিয়েছি। আজকে চোর, ডাকাত, ছিনতাইকারী সবগুলোর সেখানে কন্টোল করে নিয়ে এসেছি। একটি সুন্দর বাংলাদেশ আজকে আপনাদের উপহার দিতে পেরেছি। সেখানে এই তিন জেলায় কোন রক্তপাত হবে?  কেন অকাতরে ভাল মানুষগুলো নিহত হবে?

আমি আপনাদের প্রত্যেক জেলায়, গ্রামে গ্রামে ঘুরেছি। এত সাদাসিদা মানুষ আপনারা, আপনাদের কোন ডিমান্ড নাই। আপনারা অত্যন্ত শান্তিপ্রিয় মানুষ। তাহলে কেন এই রক্তপাত? আমি সেইটাই জিজ্ঞাসা করি। আপনাদের কাছে আমরা ওয়াদা করছি, আমাদের পুলিশ বাহিনী আপনাদের পাশে থাকবে।  আপনারা প্রতিবাদ করুন, প্রতিরোধ করুন। আপনারা যে যেখানে পারুন এই সন্ত্রাসীদের চিহিৃত করে আমাদেরকে ইনফরমেশন দিন। আমরা অবশ্যই এই সন্ত্রাসী, এই চাঁদাবাজ  নামে বেনামে যারা চাঁদাবাজি করছে, কিংবা রক্তপাত করছে তাদেকে আমরা আইনের  মুখোমুখি করবো, এটাই আমাদের ওয়াদা। তাদেরকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে  এবং আইন অনুযায়ী তাদেকে শাস্তি পেতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী চান এখানে সুন্দর, এই তিন জেলাটায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকুক। আপনারাও চান। তাহলে হবে না কেন?  আমরা যেকোন পর্যায়ে আপনাদের সঙ্গে আছি। আপনারা আমাদের সহযোগিতা করবেন। অবশ্যই আপনাদের এই এলাকায় একটা শান্তির ভূমি, রক্তপাতহীন ভূমি আমরা তৈরী করবো। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সেটাই চেষ্টা,সেটাই প্রচেষ্টা। সেজন্যই তিনি শান্তিচুক্তি করেছিলেন। শান্তিচুক্তি যেন সফল হয় সেজন্যই আমাদের আসা।

শান্তিচুক্তির যে সাইন করেছিলেন জনসংহতির সন্তু লারমা, আমাদের সিনিয়র ভাই তার সঙ্গে আমার আলোচনা হয়েছে। আমার দীর্ঘক্ষণ আপনাদের নেতাদের সঙ্গে  রাতভর কালকে আলোচনা করেছি, সভা করেছি।  অনেক সমস্যা রয়েছে, সমস্যাগুলো আমরা আলোচনার মাধম্যে অবশ্যই শেষ করবো। আমরা সেই আশ্বাস দিয়ে আজকে থেকে আমরা চলা শুরু করলাম। আপনাদের নিরাপত্তা, এই এলাকার জনগণের নিরাপত্তার জন্য আমাদের এপিবিএন ব্যাটালিয়ন।

আজকে প্রত্যেকটা শহরে যেমন আসলো। ইনারাই  আস্তে আস্তে সেনাবাহিনীর যে পরিত্যক্ত ক্যাম্পগুলো সেগুলোতে অবস্থান করবে । সেখান থেকে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করবে। যাতে করে আর কোন রক্ত না ঝরে, আর কোন চাঁদাবাজির ঘটনা না ঘটে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পরিত্যক্ত সেনাক্যাম্পে পুলিশ মোতায়েন, পার্বত্য চট্টগ্রাম, রাঙামাটিতে এপিবিএন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন